এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
ধর্ম্মকামপ্রদে দেবি নারায়ণি নমোহস্তুতে।।
মগধ রাজ্যেতে জিনি মদ্ররথ রাজা। মিথিলার ঈশ্বর কাশীখণ্ড মহাতেজা।। জামদগ্নিসম তেজ পাণ্ডু মহামতি। একে একে জিনিল সকল নরপতি।। তবে ত সকল রাজা একত্র হইয়া। পাণ্ডুর সহিত যুদ্ধ করিল আসিয়া।। না পারিয়া ভঙ্গ দিল যত নৃপবর। পাণ্ডুকে পুজিয়া সবে দেয় রাজকর।। হস্তী ঘোড়া রথ গাভী বিবিধ রতন। উট খর মেষ অজ না যায় কথন।। রাজগণ জিনি পাণ্ডু ল'য়ে রাজকর। আপনার রাজ্যে গেল হস্তিনানগর।। পাণ্ডুর মহিমা যশে পৃথিবী পুরিল। পূর্ব্বেতে ভরত রাজা যে কর্ম্ম করিল।। পাণ্ডু প্রতি বড় প্রীত গঙ্গার নন্দন। আশীর্ব্বাদ করি করে মস্তকে চুম্বন।। তবে একে একে পাণ্ডু সবারে বন্দিল। যতেক আনিল দ্রব্য ধৃতরাষ্ট্রে দিল।। ধন পেয়ে ধৃতরাষ্ট্র করিল সম্মান। নানা রত্ন লইয়া করিল বহুদান।। অশ্বমেধ যজ্ঞ বহু ধৃতরাষ্ট্র কৈল। হস্তী হয় গাভী স্বর্ণ ভুমি দান দিল।। ধৃতরাষ্ট্রে দিয়া পাণ্ডু রাজ্য অধিকার। মৃগয়াতে রত সদা বনেতে বিহার।। কুন্তী মাদ্রী সহ রাজা সদা থাকে বনে। যথা থাকে তথা যেন হস্তিনাভূবনে।। তবে কতদিনে ভীষ্ম বিদুর কারণ। সুদেব রাজার কন্যা করিল বরণ।। রূপেতে নিন্দিত যত স্বর্গবিদ্যাধরী। সুদেব রাজার কন্যা নামে পরাশরী।। মহাভারতের কথা অমৃত অর্ণবে। পাঁচালী প্রবন্ধে কয় কাশীরাম দেবে।। -------
দুর্য্যোধনাদির জন্ম কথন। মুনি বলে শুন, কর অবধান, পূর্ব্ব পিতামহ কথা। ব্যাস তপোনিধি, পূজে নিরবধি, গান্ধারী সুবল-সূতা।। তাঁর সেবাবশে, বর দিল ব্যাসে, হইয়া হরিষ যুত। মহা বলবান, স্বামীর সমান, পাইবে শতেক সুত।। পরম হরিষে, কতেক দিবসে, গর্ভ ধরিল গান্ধারী। দশ মাস যায়, প্রসব না হয়, চিত্তে চিন্তিত সুন্দরী।। হেনকালে ধ্বনি, আচম্বিতে শুনি, কুন্তীর পুত্র হইল। শুনিয়া গান্ধারী, আপনা পাসরি, মূর্চ্ছিত হয়ে পড়িল।। পুত্র হৈলে জ্যেষ্ঠ, রাজ্যে হবে শ্রেষ্ঠ, কুরুকুলে হবে রাজা। কুন্তী ভাগ্যবতী, পাইল সন্ততি, সবাই করিবে পূজা।। আমি অভাগিনী, পরম পাপিনী, কর্ম্মফল আপনার। দ্বিবৎসর হৈল, কিছু না জন্মিল, পরিশ্রম মাত্র সার।। প্রসবি যদ্যপি, ভাবনা তথাপি, সহজে হইবে দাস। ভাবি হেন মত, দৃঢ় করি চিত, গর্ভের করিতে নাশ।। লোহার মুদগরে, আপন উদরে, নির্ঘাত করিয়া হানে। পাইয়া আঘাত, গর্ভ হৈল পাত, ধৃতরাষ্ট্র নাহি জানে।। নাহি পদ মুণ্ড, সবে মাংসপিণ্ড, গান্ধারী প্রসব হৈল। ডাকাইল দাসী, চিত্তে ঘৃণা বসি, ফেলাইতে ইচ্ছা কৈল।। জানিয়া কারণ, মুনি দ্বৈপায়ণ, আসি হৈল উপনীত।