পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বাদশৈতানি নামানি লক্ষ্মীং সম্পূজ্য যঃ পঠেৎ।

 পরে দ্রোণাচার্য্যকে করিল সমর্পণ।
 দ্রোণাচার্য্য সর্ব্বশাস্ত্র করান জ্ঞাপন।।
 ধনুর্ব্বেদে কৃপসম নাহিক মানুষে।
 অল্পকালে আচার্য্য বলিয়া লোকে ঘোষে।।
 কুরুবংশ যদুবংশ অন্ধ বৃষ্ণিবংশে।
 আর যত রাজগণ বৈসে দেশে দেশে।।
 সবে ধনুর্ব্বেদ শিক্ষা করে কৃপস্থানে।
 বিশেষ কিমতে শিক্ষা হবে পৌত্রগণে।।
 কৃপগুরু ভীষ্ম মহাবীর চিন্তিলেন মনে।
 বিশেষ কিমতে শিক্ষা হবে পৌত্রগণে।।
 এতবলি দ্রোণেরে করিল সমর্পণ।
 দ্রোণাচার্য্য সর্ব্বশাস্ত্র করান জ্ঞাপন।।
 মহাভারতের কথা অমৃত-সমান।
 কাশীরাম দাস কহে শিনে পূণ্যবান।।
     -------
     দ্রোণাচার্য্যের উৎপত্তি।
   রাজা বলিলান মুনি কর অবধান।
 কার পুত্র দ্রোণাচার্য্য কোথা তার ধাম।।
 ধনুর্বেদ শিখাইল তাঁরে কোন্ জন।
 কুরুদেশে গুরু হইলেন কি কারণ।।
 ব্যাসশিষ্য মুনিবর সর্ব্বশাস্ত্রজ্ঞাতা।
 কহিবারে লাগিলেন দ্রোণাচার্য্য-কথা।।
 ভরদ্বাজ মহামুনি খ্যাত ভুমিতলে।
 একদিন স্নানার্থ গেলেন গঙ্গাজলে।।
 অন্তরীক্ষে চলি যায় ঘৃতাচী অপ্সরা।
 পরমাসুন্দরী হয় অপ্সরাতে বরা।
 দক্ষিণ পবনে তার উড়িল বসন।
 মুনি তার অঙ্গ করিলেন দরশন।।
 দেখিয়া তাঁহার মনে জন্মিল উদ্বেগ।
 পঞ্চশর-শরের অধিক তার বেগ।।
 নাহি হেন জন যারে না মোহে কামিনী।
 স্খলিত হইল রেত চিন্তান্বিত মুনি।।
 সম্মুখে দেখিয়া দ্রোণী রাখিলেন তায়।
 দ্রোণীমধ্যে পুত্র জন্ম হইল ত্বরায়।।
 পুত্র দেখি ভরদ্বাজ হরিষ বিধান।
 পুত্র লৈয়া গেলেন সে আপনার স্থান।।
 দ্রোণীতে জন্মিল পুত্র তেঁই দ্রোণ আখ্যা।
 বেদ বিদ্যা সর্ব্বশাস্ত্র করিলেন শিক্ষা।।
 ছিলেন পৃষিত নামে পাঞ্চাল রাজন।
 দ্রুপদ বলিয়া নাম তাঁহার নন্দন।।
 ভরদ্বাজ মুনির আশ্রমে সদা যায়।
 সমান বয়স, দ্রোণ সহিত খেলায়।।
 এক ঠাঁই দুই জন করে অধ্যয়ন।
 ক্রীড়া করে এক ঠাঁই ভোজনে শয়ন।।
 তিলেক না রহে দোঁহে না হইলে দেখা।
 পরষ্পরে হইল দোঁহার দোঁহে সখা।।
 তবে কতদিনে রাজা পৃষিত মরিল।
 পাঞ্চাল দেশেতে রাজা দ্রূপদ হইল।।
 স্বর্গেতে গেলেন ভরদ্বাজ তপোধন।
 তপস্যা করিতে যান দ্রোণ যান তপোধন।।
 কতদিনে দ্রোণাচার্য্য পিতৃ-আজ্ঞা মানি।
 বিবাহ করেন কৃপাচার্য্যের ভগিনী।।
 পরমা সুন্দরী কন্যা ব্রতে অনুরতা।
 যজ্ঞ-হোম-তপে নিষ্ঠা সতী পতিব্রতা।।
 যজ্ঞ-তপঃ ফলে তার হইল নন্দন।
 জন্মমাত্র করিলেক অশ্বের গর্জ্জন।।
 হেনকালে আচম্বিতে হৈল শূণ্যবাণী।
 জন্মমাত্র পুত্র করিবেক অশ্বধ্বনি।।
 অশ্বথামা নাম পুত্রে রাখে সে কারণে।
 দীর্ঘজীবী হবে আর পূর্ণ সর্ব্বগুণে।।
 পুত্রে দেখি দ্রোণাচার্য্য আনন্দিত মন।
 নানা বিদ্যা তারে তিনি যতনে শিখান।।
 তবে কতদিনে দ্রোণ করেন শ্রবণ।
 জামদাগ্নিসুতের দানের বিবরণ।।
 নানা ধন বিপ্রে রাম দিতেছেন দান।
 পৃথিবীতে শব্দ হৈল দানের বাখান।।
 মহেন্দ্র-পর্ব্বত মধ্যে রামের নিলয়।
 তথায় গেলেন ভরদ্বাজের তনয়।।
 দ্রোণে দেখি জিজ্ঞাসেন ভৃগুর নন্দন।
 কোথা হৈতে এলে দ্বিজ কিবা প্রয়োজন।।
 দ্রোণ বলিলেন মম দ্রোণাচার্য্য নাম।
 ভরদ্বাজ আমার জনক গুণধাম।।