এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র-- যা কুন্দেনু-তুষার-হারধবলা যা শ্বেতপদ্মাসনা।
গন্ধর্ব্ব কিন্নর কিবা না জানি নির্ণয়। আচম্বিতে কোথা হৈতে আইল দুর্জ্জয়।। দেখিবারে তবে লোক করে হুড়াহুড়ি। ঠেলাঠেলি একের উপরে আর পড়ি।। তবে কর্ণ মহাবীর সূর্য্যের নন্দন। অর্জ্জুনে চাহিয়া বলে করিয়া গর্জ্জন।। যতেক করিলা তুমি সভার ভিতর। তাহা হৈতে বিদ্যা আমি জানি বহুতর।। দেখিয়া আমার বিদ্যা হইবা বিস্ময়। অসংখ্য আমার বিদ্যা সংখ্যা নাহি হয়।। এত শুনি সর্ব্বলোক বিষণ্ণ বদন। দুর্য্যোধন শুনি হৈল আনন্দিত মন।। বিরস বদন হৈল বীর ধনঞ্জয়। এত শুনি আজ্ঞা দেন দ্রোণ মহাশয়।। কোন্ বিদ্যা জানহ সবার অগ্রে কহ। শুনি কর্ণ মহাবীর ঘুচায় সন্দেহ।। প্রকাশিল নানা অস্ত্র লোকে অগোচর। শিখিয়াছিল যত পার্থ ধনুর্দ্ধর।। দেখিয়া সবার মনে বিস্ময় জন্মিল। দুর্য্যোধন নিরখিয়া প্রফুল্ল হইল।। ভ্রাতৃগণ মধ্যে বসি ছিল দুর্য্যোধন। অতি শীঘ্র উঠিয়া করিল আলিঙ্গন।। ধন্য ধন্য বীর তুমি ছিলা কোন দেশে। হেথায় আইলা তুমি মম ভাগ্যবশে।। ক্ষিতিমধ্যে যত ভোগ আছয়ে আমার। আজি হৈতে দিলাম সে সকল তোমার।। কর্ণ বলে সত্য আমি করি অঙ্গীকার। আজি হৈতে দাস আমি হইনু তোমার।। কেবল আছয়ে এক এই নিবেদন। অর্জ্জুনের সঙ্গে ইচ্ছা করিবারে রণ।। এতেক বলিল যদি কর্ণ মহাবীর। ক্রোধে ধনঞ্জয় অতি কম্পিত-শরীর।। অর্জ্জুন বলিল তোরে কে ডাকিল হেথা। কেবা বলে তোমারে সভাতে কহ কথা।। অনাহূত কর দ্বন্দ্ব আসিয়া সভায়। ইহার উচিত ফল পাইবে ত্ব্রারায়।। নাহি জিজ্ঞাসিতে যেবা বলয়ে বচন। আপনি আসিয়া খায় বিনা নিমন্ত্রণ।। ঘোর নরকেতে গতি পায় সেই জন। সেই গতি মম স্থানে পাইবে এখন।। কর্ণ বল্র ধনঞ্জয় গর্ব্ব পরিহর। সভাতে সকল লোক জিনি অস্ত্র ধর।। বীর্য্যেতে অধিক যেই তারে বলি রাজা। ধর্ম্মবন্ত লোক বীর্য্যবন্তে করে পূজা।। হীনলোকপ্রায় কেন দেহ গালাগালি। অস্ত্রে অস্ত্রে দ্বন্দ কর তবে জানি বলী।। মম সহ রণে জিন তবে জানি বীর। দ্রোণ গুরু অগ্রেতে কাটিব তোর শির।। এতেক শুনিয়া দ্রোণ ঘূর্ণিত নয়ন। আজ্ঞা দেয় অর্জ্জুনেরে কর গিয়া রণ।। এত শুনি সুসজ্জ হইল ধনঞ্জয়। ধনুর্গুণ টঙ্কারিয়া করেন প্রলয়।। সপক্ষ হৈল পৃষ্ঠে চারি সহোদর। কৃপাচার্য্য দ্রোণাচার্য্য ভীষ্ম বীরবর।। অগ্র হৈল কর্ণ বীর হাতে ধনুঃশর। সপক্ষ হইল কুরু শত সহোদর।। আর যত মহারথী যোদ্ধা লক্ষ লক্ষ। কেহ পাণ্ডবের পক্ষ কেহ কুরুপক্ষ।। পুত্রস্নেহে গগনে আগত পুরন্দর। অর্জ্জুনে করিল ছায়া যত জলধর।। কর্ণাভিতে যত তপ করেন তপন। সুসজ্জ হইল সবে করিবারে রণ।। সকুণ্ডল কর্ণবীরে দেখি বিদ্যমানে। কুন্তীদেবী দেখিলেন আপন নন্দনে।। পুত্রে পুত্রে বিবাদ দেখিয়া কুন্তীদেবী। ঘন ঘন মূর্চ্ছা যায় মহাতাপ ভাবি।। হেনকালে কৃপাচার্য্য বলিল ডাকিয়া। সর্ব্বলোক শুনে কহে কর্ণেরে চাহিয়া।। এই পার্থ বীর হয় পৃথার নন্দন। কুরুমহাবংশে জন্ম বিখ্যাত ভুবন।। তোমার সহিত আসি করিবেক রণ। তুমি কহ কোন্ বংশে কাহার নন্দন।।