পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/১২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যা ব্রক্ষাচ্যুতশঙ্করপ্রভৃতির্দেবৈঃ সদা বন্দিতা।

 তোমা সবাকার জন্ম জানি ভালমতে।
 তুমি নিন্দা কর পিছে আমার সক্ষাতে।।
 কর্ণেরে কি মত বলি লয় তোর মনে।
 ক্ষিতি মধ্যে আছে কেহ এমত লক্ষণে।।
 সকণ্ডল কবচ যাহার কলেবর।
 তোর চিত্তে লয় অধিরথের কোঙর।।
 প্রত্যক্ষ দেখহ কর্ণ সম দিবাকরে।
 ব্যাঘ্র কভু জন্ম লয় মৃগীর উদরে।।
 সকল পৃথিবী শোভে কর্ণ অধিকার।
 কর্ণ রাজা হৈল অঙ্গদেশ কোন ছার।।
 কর্ণ-বাহুবলে সবে করিবেক পূজা।
 অনুগত হইব আমরা সর্ব্ব রাজা।।
 এতেক কহিল সভামধ্যে দুর্য্যোধন।
 হাহাকার শব্দ হৈল সভাতে তখন।।
 কেহ বলে ভেদাভেদ হৈল ভ্রাতৃগণ।
 কেহ বলে দ্বন্দ্ আর নহে নিবারণ।।
 অস্ত গেল দিনকর রজনী-প্রবেশ।
 রাজগণ চলি গেল যার যেই দেশ।।
 কর্ণহস্ত ধরিয়া চলিল দুর্য্যোধন।
 পিছু পিছু চলে ভাই একশত জন।।
 পঞ্চ ভাই পাণ্ডব চলিল নিজ স্থান।
 পাছে পাছে পরিবার করিল প্রয়াণ।।
 হর্ষান্বিত কুন্তীদেবী জানিয়া কারণ।
 অঙ্গদেশে রাজা হৈল আমার ন্ন্দন।।
 দুর্য্যোধন হরষিত হইল নির্ভয়।
 নিরবধি কম্প হৈত দেখি ধনঞ্জয়।।
 ত্যাজিল অর্জ্জুন ভয় কর্ণেরে পাইয়া।
 যুধিষ্ঠির ভীত অতি কর্ণেরে দেখিয়া।।
 কর্ণসম বীর নাহি আর যে সংসারে।
 এই ভয় সদা জাগে ধর্ম্মের অন্তরে।।
 আদিপর্ব্ব ভারত ব্যাসের বিরচিত।
 কাশীরাম দাস কহে রচিয়া সঙ্গীত।।
         -----
   দ্রোণাচার্য্যের দক্ষিণা প্রার্থণা ।
   কতদিনে দ্রোণাচার্য্য শিষ্যগণ প্রতি।
 দক্ষিণা আমারে দেহ বলেন সুমতি।।
 দ্রোণ বলিলেন শুন পার্থ দুর্য্যোধন।
 রত্ন আদি ধনে মম নাহি প্রয়োজন।।
 পাঞ্চাল ঈশ্বর খ্যাত দ্রুপদ ভূপতি।
 রণমধ্যে তারে আন বান্ধিয়া সম্প্রতি।।
 বিশেষ প্রতিজ্ঞা কৈল কুন্তীর নন্দন।
 পূর্ব্বে সত্য কৈলা না করিতে অধ্যয়ন।।
 যেমতে পারহ আন করিয়া বন্ধন।
 আমার দক্ষিণা এই শুন শিষ্যগণ।।
 এতেক শুনিয়া যুধিষ্ঠির দুর্যোধন।
 সৈন্যগণ সাজিতে বলিলেন ততক্ষণ।।
 সৈন্যগণ সাজিল দেখিয়া ধনঞ্জয়।
 একা রথে চড়ি যায় নির্ভয় হৃদয়।।
 করপুটে জ্যেষ্ঠেরে করেন নিবেদন।
 তুমি তথাকারে যাবে কিসের কারণ।।
 আমা হৈতে কর্ম্ম যদি না হয় সাধন।
 তবে প্রভু পাঠাও অন্য কোন জন।।
 এতেক বলিয়া পার্থ হইয়া সত্বর।
 প্রবেশ করেন ক্ষণে পাঞ্চাল নগর।।
 দ্রুপদ পাইয়া অর্জ্জুনের সমাচার।
 আজ্ঞা কৈল আপনার সৈন্য সাজিবার।।
 দ্রুপদ চিন্তিত অতি না জানি কারণ।
 অর্জ্জুনের আগমন কোন প্রয়োজন।।
 মন্ত্রী পাঠাইয়া দিল অর্জ্জুন-গোচর।
 মন্ত্রী বলে অর্জ্জুনে করিয়া যোড়কর।।
 কহ কুরুবর এলে কোন্ প্রয়োজন।
 আজ্ঞা কর কোন কর্ম্ম করিব সাধন।।
 রাজার মন্দিরে চল লহ রাজপূজা।
 তোমা দরশনে বড় ইচ্ছা করে রাজা।।
 অর্জ্জুন বলেন সব হবে ব্যবহার।
 রাজারে জানাও এই সংবাদ আমার।।
 অতিথীর যত পূজা পাইলাম আমি।
 কেবল আমারে আজি যুদ্ধ দেহ তুমি।।
 সসৈন্যে আসিতে বল সংগ্রামের স্থলে।
 নহিলে অনিষ্ট বড় হইবে পাঞ্চালে।।
 কহিলেন মন্ত্রী গিয়া রাজার গোচর।
 শুনি ক্রোধে কম্পিত দ্রুপদ নৃপবর।।