এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
বন্দিতা সিদ্ধগন্ধর্ব্বে-রর্চ্চিতা দেবদানবৈঃ।
ভীমের বচনেতে রাক্ষস নাহি থাকে। উর্দ্ধবাহু যায় মারিবারে হিড়িম্বাকে।। হাসিয়া কুন্তীর পুত্র দুই হাত ধরে। এক টানে ফেলে অষ্ট ধনুক অন্তরে।। মহাবল রাক্ষস উঠিয়া তাড়াতাড়ি। বৃকোদরে ধরিলেক করিয়া আঁকাড়ি।। বায়ুর নন্দন ভীম অতি ভয়ঙ্কর। পরম আনন্দ যাঁর পাইলে সমর।। দুইজনে টানাটানি ধরি ভুজে ভুজে। শুণ্ডে শুণ্ডে টানাটানি যেন করে গজে।। দুই মত্ত সিংহ যেন করে সিংহনাদ। মেঘের নিঃস্বন যেন করয়ে আহ্লাদ।। দোঁহাকার আস্ফালনে ভাঙ্গে বৃক্ষগণ। পলায় কাননবাসী ত্যাজিয়া কানন।। কাননে পুরিল শব্দ দোঁহার গর্জ্জনে। নিদ্রাভঙ্গ হইয়া উঠিল পঞ্চজনে।। বসিয়াছে হিড়িম্বা নিন্দিত বিদ্যাধরী। দেখিয়া বিস্ময় হৈল ভোজের কুমারী।। আশ্চর্য্য দেখিয়া কুন্তী উঠি শীঘ্রগতি। মৃদুভাষে জিজ্ঞাসেন হিড়িম্বার প্রতি।। কে তুমি কোথায় হৈতে আইলে গো হেথা। অপ্সরা নাগিনী কিবা বনের দেবতা।। হিড়িম্বা প্রণাম লরি কুন্তী প্রতি বলে। জাতিতে রাক্ষসী আমি নিবাস এস্থলে।। এই বন-নিবাসী হিড়িম্ব নিশাচর। মাহাযোদ্ধা বীর সে আমার সহোদর।। পঞ্চ পুত্রসহ তোমা ধরি লইবারে। ভাই মোরে পাঠাইয়া দিল হেথাকারে।। পরম সুন্দর দেখি তোমার তনয়। কামে বশ হৈয়া আমি ভজিলাম তায়।। বিলম্ব দেখিয়া মম আসে মম ভাই। তোমার পুত্রের সহ যুঝে দেখ ওই।। হিড়িম্বার মুখে শুনি এতেক উত্তর। চারি ভাই ভীম স্থানে চলিল সত্বর।। ভীম হিড়িম্বাতে যুদ্ধ না যায় বর্ণন। যুগল পর্ব্বত প্রায় দেখে দুইজন।। যুদ্ধে ধুলি ধুসর দোঁহার কলেবর। কুজ্ঝটিতে আচ্ছাদিত যেন গিরিবর।। দুইভিতে দোঁহাকারে টানে দুইজন। নিশ্বাস পবন ঝড়ে উড়ে বৃক্ষগণ।। ডাক দিয়া যুধিষ্ঠির বলেন বচন। রাক্ষসের ভয় নাহি করিও এখন। তোমা সহ রাক্ষসের হৈয়াছে বিবাদ। নিদ্রায় ছিলাম এত না জানি প্রমাদ।। সবে মিলি রাক্ষসেরে করিব সংহার। এত শুনি বলে ভীম পবনকুমার।। কি কারণে সন্দেহ করহ মহাশয়। এইক্ষনে বিনাশিব রাক্ষস দুর্জ্জয়।। পথিক লোকের প্রায় দেখ দাঁড়াইয়া। এত বলি দিল লাফ ভুজ প্রসারিয়া।। অর্জ্জুন বলেন বহু করিলা বিক্রম। রাক্ষসের যুদ্ধে বহু হৈল পরিশ্রম।। বিশ্রাম করহ তুমি থকিয়া অন্তরে। আমি বিনাশিব ভাই এই নিশাচরে।। অর্জ্জুন বচনে ভীম অধিক কূপিল। চুলে ধরি হিড়িম্বারে ভূমেতে ফেলিল।। চড় আর চাপড় মুষ্টিক পদাঘাত। পক্ষিবৎ করি তারে কৈল নিপাত।। মধ্যদেশ ভাঙ্গিয়া করিল দুইখান। দেখাইল নিয়া সব ভ্রাতৃ বিদ্যমান।। পরস্পর আলঙ্গন পঞ্চ সহোদরে। প্রশংসিল ভ্রাতৃ সব বীর বৃকোদরে।। অর্জ্জুন বলেন তবে চাহি যুধিষ্ঠিরে। এই ত নিকটে গ্রাম নহে বহুদূরে।। এই সমাচার যদি শুনে কোন জন। লোকমুখে বার্ত্তা তবে পাবে দুর্য্যোধন।। সে কারণে ক্ষণিক রহিতে না যুয়ায়। শীঘ্র চল অন্য স্থানে ত্যাজিয়া হেথায়।। হেন মতে যুক্তি করি পাণ্ডব তখন। মাতা সহ শীঘ্রগতি করেন গমন।। হিড়িম্বা চলিল তবে কুন্তীর সংহতি। হিড়িম্বা দেখিয়া ক্রোধে বলএ মারুতি।।