এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
লক্ষ্মীমে যা ধরা পুষ্টিমৌ প্রভাধৃতিঃ।
উপযাজ বলে মনে এই যুক্তি লয়। ব্রাম্ভণের যথাধর্ম্ম উচিত না হয়।। দ্বিজের এতেক বাক্য শুনিয়া রাজন। পুনঃ বহু স্তুতি করি বলিল বচন।। দ্রুপদের বিনয় দেখিয়া দ্বিজবর। প্রসন্ন হইয়া বলে শুন দণ্ডধর।। মম জ্যেষ্ঠ ভাই যাজ পরম তপস্বী। বেদবিশারদ সদা অরণ্য নিবাসী।। প্রার্থনা তাঁহার স্থানে করহ রাজন। তিনি করিবেন তব দুঃখ বিমোচন।। উপযাজ বাক্যে গেল যাজের সদন। প্রণমিয়া সকল করিল নিবেদন।। সদয় হইয়া যাজ করিল স্বীকার। যজ্ঞ আরম্ভিল তবে পৃষত-কুমার।। রাণী সহ ব্রত আচরিল নরবর। যজ্ঞ পূর্ণ দিনে জন্ম হইল কোঙর।। অগ্নিবর্ণ হৈল বীর হাতে ধনুঃশর। অঙ্গেতে কবচ তার মাথায় টোপর।। সব্য হস্তে ধরে খড়গ লোকে ভয়ঙ্কর। পুত্র দেখি আনন্দিত পাঞ্চাল ঈশ্বর।। তবে সেই যজ্ঞ মধ্যে কন্যার উৎপত্তি। জন্মমাত্র দশ দিক করে মহাদ্যূতি।। অঙ্গের সৌরভ এক যোজন ব্যাপিত। সুরাসুর যক্ষ রক্ষ গন্ধর্ব্ব বাঞ্ছিত।। পুত্র কন্যা দুইজনে যজ্ঞেতে জন্মিল। হেনকালে আকাশেতে আকাশবাণী হৈল।। এ কন্যার হৈল জন্ম শুন বিবরণ। ইহা হৈতে ক্ষত্র সব হইবে নিধন।। কুরুবংশ ক্ষয় হবে এ কন্যা হইতে। এই পুত্র জিন্ম হৈল দ্রোণ বিনাশিতে।। এতেক আকাশ বাণী শুনি সর্ব্বজন। জয় জয় শব্দ কৈল পাঞ্চালের গণ।। যত বীর যোদ্ধাগণ ছাড়ে সিংহনাদ। আনন্দে দ্রুপদ রাজা ছড়িল নিনাদ।। ধৃষ্টদ্যুম্ন পুত্রের নাম থুইল তখন। কৃষ্ণ অঙ্গে কৃষ্ণা নাম থুইল তখনি। পিতৃ নামে দ্রৌপদী যজ্ঞেতে যাজ্ঞসেনী।। সম্প্রতি হইবে সে কন্যার সয়ম্বর। দেখিতে আইল যত রাজরাজ্যেশ্বর।। দ্বিজমুখে শুনিয়া এতেক সমাচার। যাইতে হইল চেষ্টা তথা সবাকার।। পুত্রগণ চিত্ত জানি ভোজের নন্দিনী। সবাকার প্রতি দেবী কহেন আপনি।। বহুদিন করিলাম এইস্থানে বসতি। এক স্থানে বহুদিন নাহি শোভে স্থিতি।। চল যাব তথাকারে যদি লয় মন। শুনিয়া স্বীকার করিলেন ভ্রাতৃগণ।। পিত্রসহ কুন্তীদেবী করেন বিচার। হেনকালে আইলেন ব্যাস সাদাচার।। প্রণাম করিয়া তাঁরে ভোজের নন্দিনী। পঞ্চভাই প্রণোমেন লোটায়ে ধরণী।। আশীর্ব্বাদ করিলেন মুনি সবাকারে। কাশী কহে ভবার্ণবে শুনে যাবে পারে।। ----- অর্জ্জুন অঙ্গরাপর্ণ সংবাদ এবং তপতী সংবরণোপাখ্যান ব্যাস বলিলেন শুন পঞ্চ সহোদর। দ্রুপদ নৃপতি করে কন্যা-সয়ংবর।। অদ্ভুত রচিল লক্ষ পাঞ্চালের পতি। সে লক্ষ কাটিতে নাহি কাহার শকতি।। অর্জ্জুন কাটিবে লক্ষ সভার ভিতর। পাঞ্চালের কন্যা প্রাপ্তি হইবে তোমার।। শীঘ্রগতি যাও তথা না কর বিলম্ব। চারিদিন হৈল সয়ংবরের আরম্ভ।। এত বলি বেদব্যাস গেলেন স্বস্থান। কুন্তীসহ পঞ্চভাই করেন প্রস্থান।। অন্তর্হিত হইলেন ব্যাস তপোধন। উত্তর মুখেতে বাম পাণ্ডূপুত্রগণ।। দিবানিশি চলিলেন না হয় বিশ্রাম। নানা দেশ নদী লঙ্ঘিলেন বন গ্রাম।।