এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
কণ্ঠস্থাং পদ্মযোনিস্থাং হ্রীঁ হ্রীঁ কারশ্রিয়াং শুভাং।।
পৌত্র দেখি বশিষ্ঠের শোক দূর হৈল। অতি যত্নে মুনিরাজ বালকে পুষিল।। শিশুকাল হৈতে পরাশর মুনি। বশিষ্ঠেরে পিতা জ্ঞান নিজ মনে জানি।। একদিন পরাশর মায়ের গোচরে। বাপ বাপ বলিয়া যে ডাকে বশিষ্ঠেরে।। শুনি অদৃশ্যন্তী শোক করিল প্রচুর। রোদন করিয়া পুত্ত্রে বলেন মধুর।। পিতৃহীন পুত্ত্র তুমি বড় অভাগিয়া। পিতামহে পিতা বলি ডাক কি লাগিয়া।। যেইকালে ছিলা তুমি আমার উদরে। তোমার জনকে বনে খায় নিশাচরে।। মায়ের মুখেতে শুনি এতেক বচন। বিশেষে মায়েরে দেখি শোকেতে ক্রন্দন।। ক্রোধেতে শরীর কম্পে লোহিত লোচন। কি করিব হৃদয়ে চিন্তিল তপোধন।। এত বড় নিদারুণ নির্দ্দয় বিধাতা। রাক্ষসের হাতে বিনাশিল মম পিতা।। আজ তাঁর সর্ব্বসৃষ্টি করিব নিধন। রাখিব না ত্রিলোকে তাঁহার একজন।। এত যদি মনে কৈল শক্তির কুমার। বশিষ্ঠ জানিল যে এ সব সমাচার।। মধুর বচনে তারে করেন প্রবোধ। অকারণে তাত তুমি কেন কর ক্রোধ।। ব্রাম্ভণের ধর্ম্ম ক্রোধ না হয় উচিত। ক্ষমা শান্তি ব্রাম্ভণের বেদের বিহিত।। কর্ম্ম অনুসারে শক্তি হইল নিধন। তার প্রতি অনুশোচ কর কি কারণ।। ক্রোধ শান্ত কর বাপু তত্ত্বে দেহ মন। অকারনে সৃষ্টি কেন করিবা নিধন।। -------- কৃতবীর্য্য চরিত ও ভৃগু পুত্র ঔর্ব্বের বৃত্তান্ত। পূর্ব্বের বৃত্তান্ত বলি তোমার গোচর। কৃতবীর্য্য ব'লে ছিল এক নরবর।। ভৃগুবংশে ব্রাম্ভণ তাঁহার পুরোহিত। নানা যজ্ঞ ক্রিয়া রাজা কৈল অপ্রমিত।। সর্ব্বধন দিয়া রাজা গেল স্বর্গবাসে। ধনহীন হৈল, যেই রাজা হৈল দেশে।। ভৃগুবংশ-দ্বিজগণে আনিল ধরিয়া। মাগিল যতেক ধন দেহ ফিরাইয়া।। ভয়ে তবে দ্বিজগণ বলিল বচন। যার গৃহে যত আছে দিব সব ধন।। এত শুনি ছাড়ি দিল সর্ব্ব দ্বিজগণ। গৃহে আসি বিচার করিল সর্ব্বজন।। রাজভয় কোন' দ্বিজ সব ধন দিল। কেহ কেহ কত ধন পুতিয়া রাখিল।। কত ধন দিল লৈয়া রাজার গোচর। অল্পধন দেখিয়া রুষিল নরবর।। অনুচর হৈতে ভেদ পাইল রাজন। ঘরের ভিতরেতে পুতিল সর্ব্বধন।। সসৈন্যেতে গৃহ সব বেড়িল সে গিয়া। বাহির করিল ধন যে ছিল পুতিয়া।। ধন দেখি ক্রোধ কৈল যত ক্ষত্রগণ। ব্রাম্ভণে মারিতে আজ্ঞা করিল রাজন।। হাতে খড়গ করিয়া যতেক রাজবল। যতেক ব্রাম্ভণগণ কাটিল সকল।। বাল বৃদ্ধ যুবা সর্ব্ব যতেক আছিল। দুগ্ধপোষ্য বালকাদি সকলি মারিল।। গর্ভবতী স্ত্রীগণের চিরিয়া উদর। মারিল অনেক দ্বিজ দুষ্ট নরবর।। মহা কলরব হৈল ব্রাম্ভণনগরে। প্রাণ লৈয়া স্ত্রীগণ পলায় দেশান্তরে।। একে ভৃগুপত্নী যে আছিল গর্ভবতী। স্বামিগর্ভ রক্ষা হেতু বিচারিল সতী।। উদর হৈতে গর্ভ উরুতে থুইয়া। ক্ষত্রগণ ভয়েতে যায়েন পলাইয়া।। যতেক ক্ষত্রিয়গণ বেড়িল তাহারে। যাইতে নাহিক শক্তি পূর্ণ-গর্ভভরে।। মহাভয়ে প্রসব হৈল সেই স্থানে। দশ সূর্য্য প্রায় তেজ ধরয়ে নন্দনে।। দৃষ্টিমাত্র ক্ষত্রগণ সব অন্ধ হৈল। কত শত ক্ষত্রগণ ভস্ম হৈয়া গেল।।