এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
তেলভন্তে পরং জ্ঞানং মম তুল্য পরাক্রমং।
এত বলি ধারাধরি করি বসাইল। দেখি ধর্ম্মপুত্র দ্বিজগণেরে কহিল।। কি কারণে দ্বিজগণ কর নিবারণ। যার যত পরাক্রম সে জানে আপন।। যে লক্ষ্য বিন্ধিতে ভঙ্গ দিল রাজগণ। শক্তি না থাকিলে তথা যাবে কোন্ জন।। বিন্ধিতে না পারিলে আপনি পাবে লাজ। তবে নিবারণে আমা সবার কি কাজ।। যুধিষ্ঠির বাক্য শুনি ছাড়ি দিল সবে। ধনুর নিকটে ধনঞ্জয় যায় তবে।। হাসিয়া ক্ষত্রিয় যত করে উপহাস। অসম্ভব কর্ম্ম দেখি দ্বিজের প্রয়াস।। সভামধ্যে ব্রাম্ভণের মুখে নাহি লাজ। যাহে পরাজয় হৈল রাজার সমাজ।। সুরাসুরজয়ী সেই বিপুল ধনুক। তাহে লক্ষ্য বিন্ধিবারে চলিল ভিক্ষুক।। কন্যা দেখি দ্বিজ কিবা হইল অজ্ঞান। বাতুল হইল কিবা করি অনুমান।। কিম্বা মনে করিয়াছে দেখি একবার। পারিলে পারিব নহে কি যাবে আমার।। নির্লজ্জ ব্রাম্ভণে মোরা অল্পে না ছাড়িব। উচিত যে শাস্তি হয় অবশ্য তা দিব।। কেহ বলে ব্রাম্ভণেরে না বলহ এমন। সামান্য মানুষ বুঝি না হবে এজন।। অনুপম তনু শ্যাম নীলোৎপল আভা। মুখরুচি কত শুচি করিয়াছে শোভা।। সিংহগ্রীব বন্ধুজীব অধরের তুল। খগরাজ পায় লাজ নাসিকা অতুল।। দেখ চারু যুগ্ম ভুরু ললাট প্রসর। কি সানন্দ গতি মন্দ মত্ত করিবর।। ভুজযুগে নিন্দে নাগ আজানুলম্বিত। করিকর যুগবর জানু সুবলিত।। বুকপাটা দন্তছটা জিনিয়া দামিনী। দেখি এরে ধৈর্য্য ধরে কোথা কে কামিনী।। মহাবীর্য্য যেন সূর্য্য জলদে আবৃত। অগ্নি-অংশু যেন পাংশু জালে আচ্ছাদিত।। এইক্ষণে লয় মনে বিন্ধিবেক লক্ষ্য। কাশী ভণে হেন জনে কি কর্ম্ম অশক্য।। ------- অর্জ্জুনের লক্ষ্যভেদে গমন। এইমতে রাজগণে করিছে বিচার। ধনুর নিকটে যান কুন্তীর কুমার।। প্রদক্ষিণ ধনুকে করিয়া তিনবার। শিবদাতা শিবে করিলেন নমষ্কার।। বামকরে ধরি ধনু তুলিল অর্জ্জুন। নোঙাইয়া ফেলিল কর্ণদত্ত গুণ।। পুনঃ গুণ দিয়া পার্থ দিলেন টঙ্কার। সে শব্দে কর্ণেতে তালি লাগিল সবার।। গুরু প্রণামিব বলি চিন্তেন হৃদয়ে। সাক্ষাৎ কিরূপে হবে অজ্ঞাত সময়।। পূর্ব্বে দ্রোণাচার্য্য কহিলেন যে আমারে। বাঞ্ছা যদি আমারে প্রণাম করিবারে।। অগ্রে এক অস্ত্র মারি করিবে সম্বোধন। অন্য অস্ত্র মারি পায় করিবা বন্দন।। সেই অনুসারে পার্থ চিন্তিলেন মনে। ভূমিতলে নাহি স্থল লোকের কারণে।। বিশেষ সবারে বিদ্যা দেখাবার তরে। শূন্যে স্থাপিলেন অস্ত্র পবনের ভরে।। দুই অস্ত্র মারিলেন ইন্দ্রের নন্দন। বরুণ অস্ত্রেতে ধৌত করিল চরণ।। আর অস্ত্র প্রণাম করিল গিয়া পায়। আশীর্ব্বাদ করিলে দ্রোনাচার্য্য তায়।। বিস্মিত হইয়া দ্রোণ চিন্তেন তখন। মম প্রিয় শিষ্য এই হবে কোন জন।। কুরুশ্রেষ্ঠ পিতামহ গঙ্গার কুমার। তাঁরে করিলেন পার্থ শত নমস্কার।। দ্রোন বলিলেন দেখ শান্তনু-তনয়। লক্ষ্যবেধা ব্রাম্ভণ তোমারে প্রণময়।। ভীষ্ম বলে, আমি ক্ষত্র, ও হয় ব্রাম্ভণ। আমায় প্রণাম করে কিসের কারণ।। দ্রোণ বলে দ্বিজ এই না হয় কদাপি। ক্ষত্রকুলেশ্রেষ্ঠ এই ছদ্ম দ্বিজরূপী।।