পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গ্রন্থ-সূচনা।

সর্ব্বশাস্ত্র-বীজ হরিনাম দ্বি-অক্ষর।
আদি অন্ত নাহি তাহা বেদে অগোচর॥
প্রণমহ পুস্তক ভারত-নাম-ধর।
যার নাম লইলে নিষ্পাপ হয় নর॥
পরাশর-সুত-মুখে হইল সম্ভব।
অমল কমল দিব্য ত্রৈলোক্য-দুর্ল্লভ॥
গীতি অর্থ কৈল তাহে সুগন্ধি নির্ম্মাণ।
কেশর রচিত তাহে বিবিধ আখ্যান॥
তরিতে সদ্ভক্তি সেই প্রচণ্ড তপনে।
ভারত-পঙ্কজ ফুটে যার দরশনে॥
সুজন-সুবুদ্ধি লোক হইয়া ভ্রমর।
ভারত-পঙ্কজ-মধু পিয়ে নিরন্তর॥
বিপুল বৈভব ধর্ম্ম জ্ঞানের প্রকাশ।
কলির কলুষ যত হয় ত বিনাশ॥
ষষ্ঠি লক্ষ শ্লোকে ব্যাস ভারত রচিল।
ত্রিশ লক্ষ শ্লোক তার দেবলোকে দিল॥
সুরলোকে পড়িল নারদ তপোধন।
ইন্দ্র আদি দেবগণ করেন শ্রবণ॥
পঞ্চদশ লক্ষ শ্লোক পরম যতনে।
অসিত-দেবল-মুখে পিতৃলোকে শুনে॥
শুকদেব-মুখে শুনে গন্ধর্ব্বাদি যক্ষ।
মহাভারতের শ্লোক চতুর্দ্দশ লক্ষ॥

লক্ষ শ্লোক প্রচারিল তথা মর্ত্ত্যপুরে।
সংসার নরক হৈতে উদ্ধারিতে নরে॥
বৈশম্পায়ন কহে জনমেজয় শুনে।
পরম পবিত্র কথা ব্যাসের রচনে॥
চারি বেদ ষটশাস্ত্র একভিতে কৈল।
ভারত সহিত মুনি তুলেতে তুলিল॥
ভারেতে অধিক তেঁই হইল ভারত[১]
বিবিধ পুরাণ গ্রন্থ যাহার সম্মত॥
সুরাসুর-নাগলোক এ তিন ভুবনে।
সংসারের মধ্যে যত হৈল পুণ্যজনে॥
সবার চরিত্র এই ভারত ভিতর।
যাহার শ্রবণে পাপহীন হয় নর॥
সর্ব্বশাস্ত্রমধ্যে হয় প্রধান গণন।
দেবগণমধ্যে যথা দেব নারায়ণ॥
নদনদীগণ যেন প্রবেশে সাগর।
সকল পুরাণ-কথা ভারত ভিতর॥
সকল গ্রন্থের সার ভারত কথন।
শুনিলে সফল হয় মানব জীবন॥
অনেক কঠোর তপে ব্যাস মহামুনি।
রচিল বিচিত্র গ্রন্থ ভারত কাহিনী॥
শ্লোকচ্ছন্দে গ্রন্থ তবে রচিলেন ব্যাস।
গীতচ্ছন্দে কহে তাহা কবি কাশীদাস॥

  1. পুরাকালে মহর্ষীগণ একদা তুলাদণ্ডে একদিকে চারি বেদ ও অন্যদিকে এই ভারত পুস্তক স্থাপন করেন, তাহাতে এই পুস্তক মহত্ত্বে ও ভারবত্ত্বে বেদ-চতুষ্টর অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হওয়াতে' ইহাকে “মহাভারত” বলিয়া নির্দ্দেশ করিলেন।