এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
বাঁধিল তুমুল যুদ্ধ না হয় বর্ণন।
অস্ত্র কাটি ফেলে সব ইন্দ্রের নন্দন।। কাহারো কাটিল ধনু, কারো কাটে গুণ। কাহারো কাটিল খড়গ, কারো কাটে তূন।। কাহারে কাটিল শর, শেল, শূল, শক্তি। নিরস্ত্র করিল সবে কাটিয়া সারথি।। কর্ণ ধনঞ্জয় যুদ্ধ, হয় বারান্তর।। হাতে রক্ষ উপনীত বীর বৃকোদর। মার মার বলি অস্ত্র, কাটে চারিদিকে। আষাঢ় শ্রাবণে যেন বরিষয়ে মেঘে।। শরজালে আচ্ছাদিল বীর বৃকোদরে। কুয়াশায় ঘিরে যথা হেম গিরিবরে।। মাথালি পাথালি বীর মারে বাড়ি। রথ রথী অশ্ব গজ, চূর্ণ ভূমে পড়ি।। শতেক আছিল সৈন্য রক্তে হইল রাঙ্গা। খরস্রোতে রক্ত বহে, ভাদ্রে যেন গঙ্গা।। একা একা প্রাণ ল'য়ে সবাই পলায়। আইল, আইল, বলি পাছে নাহি চায়।। হেনকালে গর্জ্জি উঠে, মদ্র অধিপতি। প্রহারয়ে নানা অস্ত্র তবে ভীম প্রতি।। কাপে বৃক্ষ বাড়ি মারে বীর বৃকোদর। রথ চূর্ণ হ'য়ে গেল, শাল্য ভূমি পর।। গদা হাতে দোঁহা রণ, দোঁহার গর্জ্জন। ঘন ঘন হুহুঙ্কারে, কাঁপে সর্ব্বজন।। ঘুরাইয়া বৃক্ষ ভীম প্রহারিল হাতে। খসিয়া পড়িল গদা ভীষণ আঘাতে।। লাফ্ দিয়ে ধরি শাল্যে, পবন কুমার। শূণ্যেতে ঘুরায় তারে ফেলে ভুমি পর।। বাহু যুদ্ধে শল্যে জিনে নাহিক সংসারে। এক হলধর, আর বৃকোদর পারে।। ------ অর্জ্জুনের সহিত রাজগণের যদ্ধ। যার যেবা অস্ত্র ল'য়ে যত রাজগণ। জরাসন্ধ শল্য শাল্ব কর্ণ দুর্য্যোধন।। শিশুপাল দন্তবক্র কাশী নরপতি। রুক্মি ভগদত্ত ভোজ কলিঙ্গ প্রভৃতি।। চিত্রসেন মদ্রসেন চন্দ্রসেন রাজা। নীলধ্বজ রোহিত বিরাট মহাতেজে।। ত্রিগর্ত্ত কীচক বাহু সুবাহু রাজন্। অনুপেন্দ্র মিত্রবৃন্দ সুষেণ ভ্রমণ।। যার যে লইয়া সৈন্য ভূপতি মণ্ডল। নানা অস্ত্র ফেলে যেন বরিষার জল।। দেখিয়া দ্রৌপদী দেবী কম্পিতহৃদয়। অর্জ্জুনে চাহিয়া তবে কহে সবিনয়।। না দেখি যে দ্বিজবর ইহার উপায়। বেড়িলেক রাজগণ সমুদ্রের প্রায়।। ইথে কি করিবে মম পিতার শকতি। জানিলাম নিশ্চয় নাহিক নিষ্কৃতি।। অর্জ্জুন বলেন তুমি রহ মম কাছে। দণ্ডাইয়া নির্ভয়ে দেখহ রহি পাছে।। কৃষ্ণা বলিলেন দ্বিজ অপুর্ব্ব কাহিনী। একা তুমি কি করিবে, লক্ষ্য নৃপমণি।। আমার প্রতাপ তুমি না জানহ সতি। একা সিংহ, নাহি পারে অজাযূথপতি।। একশ্বর গরুর সকল পক্ষী নাশে। একাশ্বর পরন্দর দানব বিনাশে।। এক ব্যাঘ্র নাশ করে লক্ষ মৃগ ক্ষুদ্র। একা সে বাসুকী নাগ মথিল সমুদ্র।। একা হনুমান যেন দহিলেক লঙ্কা। সেইমত নৃপগণে মারিব কি শঙ্কা।। এত বলি অর্জ্জুন কৃষ্ণারে আশ্বাসিয়া। ধনুর্গুণ সন্ধান করেন টঙ্কারিয়া।। তবে ত দ্রুপদ রাজা পুত্রের সহিত। ধৃষ্টদ্যুম্ন শিখণ্ডী সহিত সত্যজিত।। মুহুর্ত্তেকে যুদ্ধ করি নারিল সহিতে। ভঙ্গ দিয়া সসৈন্যে পলায় চতুর্ভিতে।। একেশ্বর অর্জ্জুনে বেড়িল নৃপগণ। দেখি ওষ্ঠ কামড়ায় পবন-নন্দন।। অনুমতি লইতে রাজার পানে চায়। দেখিয়া সম্মত হইলেন ধর্ম্মরয়।। যুধিষ্ঠির বলেন অনর্থ হইল। এক লক্ষ রাজা দেখ অর্জ্জুনে বেড়িল।।