এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
ফুল্লেন্দীবরকান্তি-মিন্দুবদনং বর্হাবতংস প্রিয়ং।
তত রাত্রে গেল দোঁহে ভক্ষার কারণ। ভিক্ষা করি আনি দিল করিতে রন্ধন।। রন্ধন করিল কৃষ্ণা চক্ষুর নিমেষে। মাতা তার সাদরে বলিল প্রিয়ভাষে।। আশে পাশে ডাকিয়া আইস পুত্রগণ। উপবাসী অতিথি থাকয়ে কোন জন।। অতিথিরে দিয়া যাহা অবশেষে থাকে। দুই ভাগ করি কৃষ্ণা বাঁঠ তাহাকে।। এক ভাগ দেহ হের ইহার গোচর। আর এক ভাগ কৃষ্ণা পাঁচ ভাগ কর।। চারি ভাগ দেহ এই চারি বিদ্যমানে। এক ভাগ দ্রৌপদী করহ দুই স্থানে।। তুমি অর্দ্ধ লহ মোরে দেহ অর্দ্ধ আনি। ক্রোধে বলে এক দ্বিজ চাহিয়া জননী।। এত রাত্রে অতিথিরে পাইব কোথায়। ভুঞ্জিয়া থাকবে কিংবা থাকিবে নিদ্রায়।। আজিকার ভিক্ষা মাতা অতিরেক নহে। বিশেষ যুদ্ধের শ্রমে পেটে অগ্নি দহে।। আজিকার দিনে মাতা অতিথি রহুক। ভয়েতে জননী বলে হউক হউক।। পুনঃ বলে অতিথির ভাগ দেহ মোরে। কালি প্রাতে যত ইচ্ছা দিও অতিথিরে।। দেহ দেহ বলি পুনঃ ডাকিল জননী। সেইরূপে বাঁটিয়া দিলেন যাজ্ঞসেনী।। গ্রাস দুই তিনে তাহা সকলি খাইল। মণ্ড আন মণ্ড আন বলি ডাক দিল।। না পাইয়া মণ্ড ক্রোধে কটাক্ষেতে চায়। মম মনে দ্রৌপদীরে মারিলেক প্রায়।। এই হেতু মাতা তোরে জন্মে মম ক্রোধ। তুমি কহ ভীমে নারি করিতে প্রবোধ।। মাতা বলে তাত আজি মম দোষ খণ্ড। নূতন রন্ধনী আজি না রাখিল মণ্ড।। মায়ের বচনে বহুমতে শান্ত হৈল। ভোজন করিয়া গিয়া আচমন কৈল।। ভোজন করিয়া চাহে শয়ন করিতে। সবার কনিষ্ঠে বলে শয্যা পাতি দিতে।। সবার উপরে শয্যা করিল মাতার। পাঁচ ভ্রাতার শয্যা হৈল পদনীচে তাঁর।। সবার চরণতলে কৃষ্ণা শয্যা পাতি। হৃষ্ট হৈয়া শুইল দ্রৌপদী গুণবতী।। মহাভারতের কথা সুধার সাগর। কাশীরাম কহে সদা শুনে সাধু নর।। ------ দ্রুপদ রাজপুরে পাণ্ডবদের আনয়ন। শুনিয়া দ্রুপদ রাজা আনন্দিত মনে। উঠি বলি রাত্রি পোহাইল জাগরণে।। পূর্ব্বভিতে দেখি রাজা অরুণ উদয়। পুরোহিত দ্বিজে কহে করিয়া বিনয়।। কুমারের শালে তুমি যাহ শীঘ্রগতি। পরিচয় লহ তারা হয় কোন জাতি।। রাজার পাইয়া আজ্ঞা চলিল ব্রাম্ভণ। ব্রাম্ভণে দেখিয়া প্রণমিল পঞ্চজন।। যুধিষ্ঠিরে চাহিয়া বলয়ে দ্বিজমণি। সত্যশীল ধর্ম্ম তুমি বুঝি অনুমানি।। যাহা জিজ্ঞাসিব নাহি করিবে ভণ্ডন। পরিচয় ইচ্ছা তোমা দ্রুপদ রাজন।। দ্রুপদ রাজার এই মানস আছিল। দ্রৌপদী কুমারী তাঁর যে দিনে জন্মিল।। কুরুবংশে পাণ্ডুরাজা সখা প্রিয়তরে। তাঁর পুত্রে কন্যা দিবে সানন্দ অন্তর।। গৃহদাহে মাতা সহ মৈল পঞ্চ ভাই। সবে এই কথা বলে প্রত্যয় না যাই।। ব্যাস সহ যুক্তি করি লক্ষ্য কৈল পণ। বিনা পার্থ নারিবে বিন্ধিতে অন্য জন।। এই হেতু মনে বড় আছয়ে সন্দেহ। কে তুমি কাহার পুত্র পরিচয় দেহ।। ধর্ম্ম বলে পরিচয়ে কোন্ প্রয়োজন। জাতির নির্ণয় নাহি লক্ষ্য কৈলে পণ।। সেই পণে এই কন্যা আনিল জিনিয়া। এক্ষণে কি কাজ আর জাতি জিজ্ঞাসিয়া।। পুরোহিত কহে তাহা কে লঙ্ঘিতে পারে। পরিচয় দিয়া প্রীতি করহ রাজারে।।