পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/১৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিঙ্কিনীবলয়হারনূপুরৈ-রঞ্চিতং নমত গোপবালকং।।

 ইন্দ্রের আজ্ঞায় বায়ু গেল শীঘ্রগতি।
 বহুক্ষণ নাহি দেখি চিন্তে সুরপতি।।
 তাহার পশ্চাতে ধর্ম্মে পাঠায় ত্বরিত।
 তাহার বিলম্ব দেখি হইল চিন্তিত।।
 হইল অনেকক্ষণ বাহুড়ি না আইল।
 ইন্দ্র সুরপতি তথা আপনি চলিল।।
 তদন্ত জানিতে তবে গেল সুরপতি।
 হিমালয়ে গঙ্গাকুলে কান্দিছে যুবতী।।
 কনক-কমল হয় তার অশ্রুজলে।
 খরস্রোতে ভাসি যায় মন্দাকিনী জলে।।
 কন্যারে দেখিয়া জিজ্ঞাসিল দেবরাজ।
 কে তুমি কি হেতু কান্দ কহ নিজ কাজ।।
 নয়ন কুরং বিম্ব জিনিয়া অধর।
 নির্ধুম জ্বলন্তানল অঙ্গ মনোহর।।
 মুখ তব নিন্দে ইন্দু মধ্যে ইন্দ্রনাথ।
 চারু ভুরু যুগ্ম উরু নিন্দ হস্তিহাত।।
 কি কারণে আপনি কান্দহ একাকিনী।
 আমারে বরহ যদি আছ বিরহিনী।।
 কন্যা বলে আমি হই দক্ষের নন্দিনী।
 ছাড়িয়া সংসার সুখ জন্ম-তপস্বিনী।।
 মোরে হেন কহিতে তোমারে না যুয়ায়।
 পাপ চক্ষে চাহিলে অনেক কষ্ট পায়।।
 এইমত আমারে কহিল চারি জন।
 তা সবার কষ্ট যত না যায় কহন।।
 ইন্দ্র বলে কহ তারা আছয়ে কোথায়।
 কন্যা বলে যদি ইচ্ছা আইস তথায়।।
 কন্যার সহিত গেল দেব পুরন্দর।
 পর্ব্বত উপরে দেকে পুরুষ সুন্দর।।
 কেতকী বলিল দেব আমি তপস্বিনী।
 এজন আমারে বলে উপহাস বাণী।।
 শিব বলিলেন মূঢ় না দেখ নয়নে।
 প্রতিফল ইহার পাইবে মম স্থানে।।
 এই গিরিবর তুমি তোল পুরন্দর।
 হরের আজ্ঞায় ইন্দ্র তোলে গিরিবর।।
 পর্ব্বত গহ্বরে হরের কারাগার।
 চরণে নিগঢ় বন্দী আছয়ে সবার।।
 ধর্ম্ম বায়ু অশ্বিনী র'য়েছে চারিজন।
 দেখিয়া হইল ভীত সহস্রলোচন।।
 করযোড়ে বহু স্তব করিলেন হরে।
 তুষ্ট হৈয়া সদানন্দ বলেন তাঁহারে।।
 আমার তোমার বাক্যে হইল সন্তোষ।
 তোমা হেতু ক্ষমিলাম এ চারির দোষ।।
 বিষ্ণুর সদনে লৈয়া যাব তোমা সব।
 তাঁর আজ্ঞামত কর্ম্ম করিবা বাসব।।
 এত বলি সবে লৈয়া যান ত্রিলোচন।
 শ্বেতদ্বীপে যথায় আছেন নারায়ণ।।
 কহিল সকল কেতকীর বিবরণ।
 শুনি করিলেন আজ্ঞা শ্রীমধুসূদন।।
 ইন্দ্রত্ব পাইয়া তোর নাহি খণ্ডে লোভ।
 মর্ত্ত্যে জন্ম লইয়া ভুঞ্জিতে আছে ক্ষোভ।।
 কর্ম্মফল অবশ্য ভুঞ্জয়ে যাহা করি।
 হইবে  তোমার ভার্য্যা কেতকী সুন্দরী।।
 পঞ্চজনে জন্মে লভ হৈয়া নরযোনি।
 কেতকী হইবে তোমা পঞ্চের ভামিনী।।
 তোমা সবা প্রীতি হেতু আমিও জন্মিব।
 দ্বাপরে ক্ষত্রিয়-দর্প নিঃশেষ করিব।।
 এত বলি দুই কেশ দিলেন মহেশ।
 শুক্ল কৃষ্ণ দুই হৈলা রাম হৃষীকেশ।।
 শুনহ দ্রুপদ এই পূর্ব্বের কাহিনী।
 সেই দেবী কেতকী হইল যাজ্ঞসেনী।।
       ------
   কেতকীর প্রতি সুরভির শাপ।
   দ্রুপদ কহিল বলি শুন তপোধন।
 কার কন্যা কেতকী তাপসী কি কারণ।।
 কেন সে রোদন করে গঙ্গা তীরে বাস।
 ইহার বৃতান্ত মোরে, করহ প্রকাশ।।  
 অগস্ত্য বলেন তবে শুন সে কাহিনী।
 সত্যযুগে ছিলা এক দক্ষের নন্দিনী।।
 বিভা সে না করিল সন্ন্যাস ধর্ম্ম নিল।
 হিমালয়ে হর মন্দিরে তপ আরম্ভিল।।
 হর তারে বলিলেন রহ গিরিপরে।
 পুরষ হইয়া যেবা ডাকিবে তোমারে।।