পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/১৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রণাম মন্ত্র--নীলোৎপলদলশ্যামং যশোদানন্দনং।

 তাহারে আনিবে ধরি আমার কাছেতে।
 আশ্বাস পাইয়া তবে রহিল সুখেতে।।
 দৈবে একদিন তথা আইল সুরভি।
 পাছে ধায় ষণ্ড দেখি গাভী ঋতুমতি।।
 পাঁচ পাঁচ ষাঁড় এক সুরভির পাছে।
 ষাঁড়ে ষাঁড়ে করে যুদ্ধ কেতকীর কাছে।।
 ষাঁড়ের গর্জ্জনে কেতকীর ধ্যান ভাঙ্গে।
 পাঁচ পাঁচ ষাঁড় দেখে সুরভির সঙ্গে।।
 দেখিয়া কেতকী তাহা ঈষৎ হাসিল।
 হাসিল কেতকী তাহা সুরভি জানিল।।
 উপহাস ক'রে বুঝি হৃদে হ'ল তাপ।
 ক্রদ্ধা হ'য়ে গোমাতা যে দিল অভিশাপ।।
 ইহাতে নাহিক লজ্জা গরু জাতি আমি।
 নরযোনি হ'য়ে তোর হবে পঞ্চস্বামী।।
 পুনঃ পুনঃ জন্ম তোর হবে নরযোনি।
 দুই জন্ম যাবে তোর হ'য়ে বিরহিণী।।
 তৃতীয় জন্মেতে হ'বে স্বামী পাঁচজন।
 পাইবে লক্ষ্মীর অঙ্গ হবে বিমোচন।।
 একজন অংশে তারা হবে পঞ্চজন।
 নাহি রবে ভেদাভেদ সবে একমন।।
 কেতকী পুছিলা তবে করি যোড়হাত।
 কতদিনে শাপ নাশ কহ তা সাক্ষাত।।
 এক অংশে পঞ্চজন কেবা হবে বল।
 সুরভি বলিল তবে শুন অবিকল।।
 ত্বষ্ঠার নন্দনে ইন্দ্র করিল সংহার।
 ভস্ম করিবারে ইন্দ্রে ধায় ইন্দ্রাগার।।
 ত্বষ্টার দেখিয়া ক্রোধ ইন্দ্র পায় ত্রাস।
 কোথা যাব রক্ষা পাব যাব কার পাশ।।
 ইন্দ্রের নিকটে তবে ছিল চারিজন।
 চারিজনে চারি অংশ কৈল সমর্পণ।।
 পাঁচ ঠাঁই পাঁচ আত্মা করি পুরন্দর।
 এক আত্মা ধরিয়া রহিল কলেবর।।
 হেনকালে তথা আসি ত্বষ্টা মহাঋষি।
 দৃষ্টি মাত্রে পুরন্দরে কৈল ভস্মরাশি।।
 ইন্দ্রে ভস্ম করি তবে বসে ইন্দ্রাসনে।
 আমি ইন্দ্র বলিয়া বলিল দেবগণে।।
 দেবগণ গিয়া তবে কহিল ব্রম্ভারে।
 বিনা ইন্দ্র থাকিতে না পারি স্বর্গপুরে।।
 এত শুনি ব্রম্ভা পাঠাইল নারদেরে।
 নারদ কহিল সব ত্বষ্টার গোচরে।।
 ইন্দ্রত্ব লইয়া তুমি কর ইন্দ্র কার্য্য।
 নতুবা বাঁচাও ইন্দ্রে পালিবারে রাজ্য।।
 ত্বষ্টার সম্মুখে যত ইন্দ্র ভস্ম ছিল।
 শান্ত দৃষ্টে চাহি ত্বষ্টা তাঁরে বাঁচাইল।।
 এত বলি সুরভি গেল নিজস্থান।
 চিন্তিয়া কেতকী শিবে করিল সে ধ্যান।।
 গঙ্গাতীরে বসি কাঁদে পড়ে অশ্রুজল।
 তাহে জন্ম হয় দিব্য কনক কমল।।
      ------
 পঞ্চ পাণ্ডবের সহিত দ্রৌপদীর বিবাহ।
   মুনিগণ দেবগণ আইল সভায়।
 বিবাহের আজ্ঞা দিল পাঞ্চালের রায়।।
 পঞ্চ ভায়ে বসাইল পঞ্চ সিংহাসনে।
 হরিদ্রা পিটালি গন্ধ দিল প্রতিজনে।।
 পঞ্চতীর্থ জল আনি স্নান করাইল।
 ইন্দ্রের ভূষণে বিভূষিতাং হইল।।
 বিবাহ মঙ্গল মত হইয়া সুবেশ।
 রত্নবেদী মধ্যস্থলে করিল প্রবেশ।।
 সিংহাসনে বসাইল দ্রৌপদী সুন্দরী।
 পঞ্চ ভায়ে সাতবার প্রদক্ষিণ করি।।
 কৃষ্ণা বাম বৃদ্ধাঙ্গুলি যুধিষ্ঠির হস্ত।
 তর্জ্জনীতে বৃকোদর মধ্যাঙ্গুষ্ঠে পার্থ।।
 নকুল অনামাঙ্গুষ্ঠে কনিষ্ঠে কনিষ্ঠ।
 ক্রমে পঞ্চজনে কৃষ্ণা করাইল দৃষ্ট।।
 দুন্দুভি নিনাদে নৃত্য করে বিদ্যাধরী।
 হুলাহুলি মঙ্গল করয়ে নরনারী।।
 পাঞ্চজন্য আপনি বাজান নারায়ণ।
 লক্ষ লক্ষ শঙ্খ বাজে বাদ্য অগণণ।।
 কল্যান করিল যত দেব ঋষিগণ।
 দ্বিজেরে দক্ষিণা দিল না যায় লিখন।
 হেনমতে সম্পূর্ণ করিয়া শুভকার্য্য।
 প্রভাতে চলিয়া গেল যেবা যার রাজ্য।।