এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
নারায়ণের স্নান মন্ত্র--ওঁ সহস্রশীর্ষা পুরুষঃ সহস্রাক্ষঃ সহস্রপাৎ
এক্ষণে কি হইবেক ইহার উপায়। শিয়রে হইল শত্রু শমনের প্রায়।। কোন মতে মতান্তর কর পঞ্চভাই। পাঠাও সুহৃদ দ্বিজে তাঁহাদের ঠাঁই।। কোন মতে পাণ্ডুপুত্রে করায়ে বিশ্বাস। বিষ দিয়া বৃকোদর্ব, করুক বিনাশ।। ভীম বিনা পাণ্ডবেরা হইবে অনাথ। কর্ণ যুদ্ধে অর্জ্জুনের কে যাইবে সাথ।। দুর্য্যোধন বচন শুনিয়া কর্ণ বলে। কিছু নাহি চিত্তে লাগে যতেক কহিলে।। ভীমেরে মারিতে পারে, আছে কোনজন। কিনা করিয়াছ ছিল গৃহেতে যখন।। যতেক উপায় বল, নাহি লয় মনে। বিনা দ্বন্দে বাধ্য নহে পাণ্ডুর নন্দনে।। যাবৎ না আইসেন কৃষ্ণ পাণ্ডু দলে। যাবৎ না পায় বার্ত্তা নৃপতি সকলে।। রজনীর মধ্যে গিয়া নগর বেড়িব। সপুত্র দ্রুপদ সহ পাণ্ডবে মারিব।। কর্ণের বচন শুনি অন্ধ নৃপবর। সাধু সাধু বলিয়া প্রসংশে বহুতর।। এ বিচার করিতে তোমারে যোগ্য দেখি। তবে ভীষ্ম বিদুর দ্রোণেরে আন ডাকি।। সে সবার মত দেখি, কি করে যুকতি। এত বলি সবারে আনিল শীঘ্রগতি।। ------ হস্তিনায় পাণ্ডব আনিতে যুক্তি। রাজার আদেশে এল যত মন্ত্রগণ। ভীষ্ম দ্রোণ কৃপাচার্য্য দ্রোণের নন্দন।। ভুরিশ্রবা সোমদত্ত বাহ্লীক বিদুর। কুলে শীলে বুদ্ধিবলে খ্যাত তিন পুর।। ধৃতরাষ্ট্র বলে অবধান জ্যেষ্ঠতাত। শুনি যে পাণ্ডব জীয়ে আছে কুন্তীসাথ।। এতকাল কোথা ছিল লুকাইয়া কেন। কিছুই ইহার আমি না জানি কারণ।। হেন বুঝি চিত্তে প্রায় আমারে আক্রোশ। আমি সে সবার কাছে নাহি করি দোষ।। তবে কেন গুপ্তবেশে লুকায়ে থাকিয়া। বিবাহ করিল যে আমারে না বলিয়া।। কহ কি করিব এবে বিধান ইহার। শুনিয়া কহেন তারে গঙ্গার কুমার।। তব পুত্রাধিক তোমা সেবে ত পাণ্ডব। তুমি তায় পুত্রাধিক করিতে গৌরব।। কি বুদ্ধি হইল তব না জানি কারণ। বারণাবতেতে পাঠাইলা পুত্রগণ।। না জানি যে তথায় কি কৈল পুরোচন। জতুগৃহে দগ্ধ কৈল বলে সর্ব্বজন।। ত্রিভুবন যুড়ি মম অকীর্ত্তি হইল। আপনি থাকিয়া ভীষ্ম এতেক করিল।। যদবধি জতুগৃহ হইল দাহন। তোমাদিগে নাহি চাহি মেলিয়া নয়ন।। জননী সহিত জীয়ে পাণ্ডুর কুমার। ইহার অধিক রাজা কি ভাগ্য তোমার।। অপযশ অধর্ম্ম সকল তব গেল। তোমার পূর্ব্বের ধর্ম্ম উদয় হইল।। এক্ষণেতে এই কর্ম্ম করহ রাজন্। কর পাণ্ডুপুত্রগণ সঙ্গেতে মিলন।। আমি আকা নাহি বলি সবার বিচার। যেন তুমি তেন পাণ্ডু নৃপতি আমার।। যেন কুন্তী তেন বধূ গান্ধার-নন্দিনী। যেন যুধিষ্ঠির তেন দুর্য্যোধন মানি।। ইথে ভেদাভেদ ভদ্র নাহিক রাজন্। পাণ্ডুপুত্র সহ তব দ্বন্দ কি কারণ।। তার পিতা পাণ্ডু ছিল পৃথিবীর রাজা। তাহার সকল সৈন্য রাজ্য-ধন-প্রজা।। সে জীয়ন্তে তাহারে ত্যাজিবে কোন্ জন। তব হিত হেতু তাই বলি হে রাজন্।। অর্দ্ধ রাজ্য দিয়া কর পাণ্ডবেরে বশ। পৃথিবী যুড়িয়া রাজা হবে তব যশ।। কীর্ত্তি রাখ নরপতি যাবৎ ধরণী। যত পূর্ব্বদোষ খণ্ডিবেক নৃপমণি।। ভীষ্মের বচন অন্তে বলিলেন গুরু। সর্ব্বগুণবান্ তুমি যেন কল্পতরু।।