এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
রূপবান্ বিত্তবাংশ্চৈব শ্রিয়া যুক্তশ্চ সর্ব্বদা।।
অলি মত্ত, করে মত্ত, মত্ত মধুপানে। শীঘ্রগতি কন্যা দেখি উঠে দুইজনে।। জ্যেষ্ঠ সুন্দ ধরিল কন্যার সব্যকর। বামহস্ত ধরিল কনিষ্ঠ সহোদর।। পরম আনন্দ সুন্দ কন্যারে দেখিয়া। হাত ছাড় ভাই প্রতি বলিল ডাকিয়া।। মম ভার্য্যা তোমার গুরুর মধ্যে গণি। ইহারে ধরহ তুমি কিমত কাহিনী।। উপসুন্দ বলে এই আমার রমণী। ভ্রাতৃবধূ হয় এই ছাড়ি দেহ তুমি।। সুন্দ বলে অগ্রে দেখিলাম এ কন্যারে। উপসুন্দ বলে কন্যা ব'রেছে আমারে।। ছাড় ছাড় বলি দোঁহে করে গালাগালি। ক্রুদ্ধ হৈয়া দুই ভাই দোঁহারে নেহালি।। মধুপাণে কামবাণে হইল অজ্ঞান। ক্রোধে দুইজন হৈল অগ্নির সমান।। ভয়ঙ্কর দুই গদা ধরি ততক্ষণ। দোঁহাকারে প্রহার করিল দুইজন।। যুগল পর্ব্বত প্রায় পড়ে দুই বীর। খসিয়া পড়িল যেন যুগল মিহির।। আর যত দৈত্যগণ এ সব দেখিয়া। কালরূপা কন্যা জানি যায় পলাইয়া।। দেবগণ সহ ব্রম্ভা আসিয়া তখন। কন্যারে দিলেন বর করিয়া বর্ণন।। সূর্য্যের কিরণে তুমি থাক নিরন্তর। কেহ নাহি দেখে যেন তব কলেবর।। তপ যজ্ঞ ভঙ্গ হবে তোমার কারণে। ধর্ম্ম নষ্ট হবে লোক তোমা দরশনে।। সেই হেতু সূর্য্য-অংশু মধ্যে তুমি রহ। এত বলি অন্তরে গেলেন পিতামহ।। এই মত প্রীত তারা ছিল দুইজন। হেন গতি হৈল পরে বুঝহ কারণ।। মহাবংশে জন্মিলে তোমরা পঞ্চজন। ভেদ নাহি হয় যেন ভ্যার্য্যার কারণ।। এত শুনি পঞ্চ ভাই নারদ-গোচরে। সমান নির্ব্বন্ধ তরে বলে যোড়করে।। বৎসরেক কৃষ্ণা থাকিবেক এক গৃহে। অন্যজন সেইকালে অধিকারী নহে।। কৃষ্ণাসহ দেখে যদি ভাই অন্যজনে। দ্বাদশ বৎসর তবে যাইবে অরণ্যে।। এ নির্ব্বন্ধ করিলান ব্রম্ভার নন্দন। হেনমতে কৃষ্ণাসহ রহে পঞ্চজন।। ------ অর্জ্জুনের নিয়ম ভঙ্গে বনে গমন। তবে কতদিনে সেই রাজ্যের ভিতরে। ব্রাম্ভণের গাভী হরি লৈয়া যায় চোরে।। কাতরে ব্রাম্ভণ কহে অর্জ্জুনের পাশ। থাকিয়া তোমার রাজ্যে হৈল সর্ব্বনাশ।। গালি দেয় ব্রাম্ভণ যতেক আসে মনে। জিজ্ঞাসেন অর্জ্জুন সঙ্কোচে সে কারণে।। কি হেতু কান্দহ দ্বিজ কহ বিবরণ। দ্বিজ বলে অস্ত্র লৈয়া চল এইক্ষণ।। হরিয়া আমার গাভী যায় দুষ্টগণ। শীঘ্রগতি চল তারা গেল এতক্ষণ।। দ্বিজের বচন শুনি ধনঞ্জয় বীর। আস্তে আস্তে চলিলেন আয়ুধ-মন্দির।। দৈবযোগে অস্ত্রগৃহে কৃষ্ণা-যুধিষ্টির। দূরে থাকি জানি পার্থ হৈলেন বাহির।। দ্বিজ বলে অস্ত্র লৈয়া শীঘ্রগতি চল। উচ্চৈঃস্বরে কান্দে দ্বিজ পড়ে চক্ষুজল।। এত শুনি অর্জ্জুন গেলেন অস্ত্রঘরে। হস্তে ধনু লৈয়া বীর চলেন সত্বরে।। দ্বিজসহ গেলেন যথায় চোরগণ। চোর মারি আনি দেন বিপ্রের গোধন।। দ্বিজে প্রবোধিয়া আসি কহেন ফাল্গুনী। শুন নিবেদন মম ধর্ম্ম নৃপমণি।। অতিক্রম করিলাম লঙ্ঘিয়া সময়। বনবাসে যাব আজ্ঞা কর মহাশয়।। রাজা কন্ কেন হেন কহ ধনঞ্জয়। পূর্ব্বে নারদের অগ্রে কৈলা যে সময়।। কনিষ্ঠ ভায়ের সঙ্গে কৃষ্ণা যদি থাকে। জ্যেষ্ঠ ভাই বনে যাবে তাহা যদি দেখে।।