এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
প্রসীদ মম কল্যাণি নমস্তে ষষ্ঠী দেবিকে।।
হস্তীর চাপনে গিরি অর্দ্ধ গেল তল। পর্ব্বত উপরে স্থিতি হৈল অখণ্ডল।। ইন্দ্র বলে গর্ব্ব কৃষ্ণ না করহ তুমি। সমরেতে ন্যূন হৈয়া পড়ি নাহি আমি।। বাহন অস্থির হৈল গরুড় আঘাতে। তুমি আমি চল যুদ্ধ করিব ভূমিতে।। ইন্দ্রবাক্য শুনিয়া বলেন ভগবান। যথায় তোমার ইচ্ছা যাব সেই স্থান।। পুনরাপি মুখামুখি হইল সমর। যত অস্ত্র ইন্দ্রের কাটেন দামোদর।। সর্ব্ব অস্ত্র ব্যর্থ হয় মনে পাই লাজ। অতি ক্রোধে বজ্র প্রহারিল দেবরাজ।। গোবিন্দ বলেন তবে গরুড়ের প্রতি। বজ্র অস্ত্র হাতে লইয়াছে সুরপতি।। সুদর্শণে ইচ্ছা কাটি তিল তিল করি। মুনিবাক্য ব্যর্থ হবে এই হেতু ডরি।। ইহার উপায় তুমি কর খগেশ্বর। এক পক্ষ দাও ফেলে বজ্রের উপর।। ঠোঁটেতে উপাড়ি পক্ষ গরুড় ফেলিল। পক্ষ চূর্ণ করি বজ্র বাহুড়ি চলিল।। একবার বিনা বজ্র আর নাহি চলে। দেখিয়া বিস্ময় বড় হৈল আখণ্ডলে।। মহাভারতের কথা অমৃত সমান। কাশীরাম দাস কহে শুনে পুণ্যবান।। ------ মহাদেবের যুদ্ধস্থলে গমন। গোবিন্দের ইন্দ্রের রণ নাহি অবসান। ত্রিলোকের লোক শব্দে হয় হতজ্ঞান।। দেখিয়া নারদ মুনি হইয়া চিন্তিত। ক্ষীরোদে কশ্যপ-স্থানে গেলেন ত্বরিত।। নারদ বলেন কশ্যপ আছ কি কাজে। প্রমাদ পাড়িল তব পুত্র দেবরাজে।। অজ্ঞান হইয়া করে কৃষ্ণ সহ রণ। না মারেন কৃষ্ণ তেঁই জীয়ে এতক্ষণ।। দেবরাজ পরাক্রম করিলেন সব। নিজ অস্ত্র অদ্যপি না ছাড়েন মাধব।। সুদর্শন যদ্যপি ছাড়েন নারায়ণ। কাটিবেন ইন্দ্রেরে রাখিবে কোন জন।। শুনিয়া কশ্যপ মুনি সচিন্তিত মন। কেমনে দোঁহার দ্ব্ন্দ্ব হৈবে নিবারণ।। দোঁহার মধ্যস্থ শিব বিনা অন্য নারে। এত চিন্তি কশ্যপ করেন স্তুতি হরে।। কশ্যপের স্তবে তুষ্ট হইয়া ত্রৈলোক্য। যুদ্ধস্থানে গেলেন করিতে নিবারক।। খগেন্দ্র উপেন্দ্র গজেন্দ্র দেবরাজ। যোগেন্দ্র বৃষারূঢ় দাঁড়াইল মাঝ।। কহিলেন শ্রীহরি করহ অবধান। তব সহ সমরে কি ইন্দ্র বলবান।। দেবরাজ ইন্দ্রে তুমি করিলা স্থাপিত। এক্ষণে প্রহার তারে না হয় উচিত।। গোবিন্দ বলেন ইন্দ্র স্বর্গভোগ করে। এক পারিজাত বৃক্ষ না দেয় আমারে।। স্বতন্ত্র তাহার উপার্জ্জিত নহে ফুল। ক্ষীরোদ মথিয়া পায় সুরাসুরকুল।। মথনের দ্রব্যে সবাকার ভাগ আছে। বিশেষ কমলা আমি পাই তার পাছে।। ঐরাবত উচ্চৈঃশ্রবা স্বর্গে যত সুখ। সকল ইন্দ্রের ভূষা আমি যে বিমুখ।। একমাত্র পারিজাত বৃক্ষ আমি মাগি। উচিত কি দ্বন্দ তার করা ইহা লাগি।। গোবিন্দের মুখে শুনি এতেক বচন। হায় হায় বলিয়া বলেন পঞ্চানন।। গিরিশ বলেন ইন্দ্র হইয়া অজ্ঞান। না জানহ নারায়ণ পুরুষ প্রধান।। তাঁর সহ দ্বন্দ্ব কর না হয় বিধান। মম বাক্যে সুরপতি কর সমাধান।। ইন্দ্র বলে পশুপতি কর অবধান। ঐরাবত উচ্চৈঃশ্রবা আদি যত যান।। শচী বজ্র পারিজাত নন্দন-কানন। ইহাতে ইন্দ্রত্ব মম স্বর্গের ভূষণ।। পারিজাত লবে যদি দৈবকীকুমার। স্বর্গেতে ইন্দ্রত্ব মম কি রহিল আর।।