এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
কামবাণাণ্বিতং দেবং সংসার-দহনক্ষমং ।।
ধর্ম্মবলে বলি লৈয়াছিল ত্রিভুবন। ছলিয়া পাতালে রাখি করিয়া বন্ধন।। দুই পদে ব্যাপিলাম ব্রম্ভাণ্ড সকল। নিষ্কণ্টক করিয়া দিলাম অখণ্ডল।। কুম্ভকর্ণ রাবন রাক্ষস অধিপতি। সকলে জানহ ইন্দ্রে কৈল যেই গতি।। তা সবে মারি যে আমি রাম অবতারে। নিষ্কণ্টক করি স্বর্গ দিলাম তাহারে।। উহায় আমায় শিব কিসের সন্মন্ধ। এই বাক্য তাহারে বলহ সদানন্দ।। মৃত্তিকাতে লোটাইয়া সহস্রলোচনে। প্রণাম করিয়া পড়ে সতীর চরণে।। তবে তার অপরাধ করি আমি দূর। নহিলে এক্ষণে অন্যে দিব স্বর্গপুর।। কহিলেন এ সকল ইন্দ্রে মহেশ্বর। শুনি ইন্দ্র ক্রোধেতে কম্পিত কলেবর।। না করে স্বীকার শিব কহেন কৃষ্ণেরে। গরুড় ডাকিয়া কৃষ্ণ বলেন সত্বরে।। যাহ বীর খগেশ্বর পাতাল ভুবন। আন গিয়া শীঘ্র বিরোচনের নন্দন।। বলিরে করিব আজি স্বর্গ অধিপতি। সাধুসেবা-গুণে বলি আমাতে ভকতি।। গরুড় ইন্দ্রের সখা অতিশয় প্রীত। গোবিন্দ-চরণে পড়ে সখার নিমিত্ত।। সবিনয় বচনে বলিয়ে খগেশ্বর। অদিতির সত্য পাসরিলে চক্রধর।। মন্বন্তরে বলিরে করিবা অধিকারী। এক্ষণে বলিরে কি কারণে ডাক হরি।। কোন ছার ইন্দ্র প্রভু তারে এত কেনে। দেখি আমি তোমারে কেমনে নাহি মানে।। এত বলি আপনি চলিল খগেশ্বর। কহিল অজ্ঞান কেন হও পুরন্দর।। যাঁহার পালন সৃষ্টি সৃজন যাহার। যেই প্রভু তোমারে দিয়াছে অধিকার।। তাঁর আজ্ঞা লঙ্ঘন করিয়া অবহেলা। দেখিয়া না দেখ চক্ষে ইন্দ্রপদে ভোলা।। আইস তোমার দোষ ক্ষমা করাইব। সতীর যে চরণেতে তোমা ফেলাইব।। আমার বচনে যদি না হও প্রবোধ। বলি ইন্দ্রপদ লৈবে বাড়িবেক ক্রোধ।। খগেন্দ্রের বাক্য শুনি চিন্তে মেঘবান। বুঝিলাম মোরে ক্রোধ কৈল ভগবান।। ত্রৈলোক্যের নাথ প্রভু দেব নারায়ণ। অজ্ঞান হইয়া তাঁর সনে কৈনু রণ।। গরুড়ে বলিল ইন্দ্র শুন সখা তুমি। গোবিন্দে বাড়ানু ক্রোধ না জানিয়া আমি।। খগেশ্বর বলে সখা শুন মম বাণী। মোর সহ আসি শান্ত কর চক্রপাণি।। আইস তোমার দোষ করাইব ক্ষমা। নারায়ণ সম্মুখে লইয়া যাব তোমা।। এত বলি গরুড় করিয়া হাতাহাতি। সতীর চরণতলে ফেলে সুরপতি।। পড়ি তার সহস্রলোচনে লাগে ধূলি। দেখিতে না পায় ইন্দ্র হাতাড়িয়া বুলি।। ------ সত্যভামার প্রতি ইন্দ্রের স্তব।
কতদূরে সতী আগে, শিরে দিয়া করযুগে, প্রণমি পড়িল দেবরাজ। স্তব করি সুরপতি, অষ্টাঙ্গ লোটায় ক্ষিতি, সহ যত অমর-সমাজ।। তুমি লক্ষ্মী সরস্বতী, রতি সতী অরুন্ধতী, পার্ব্বতী সাবিত্রী বেদমাতা। তুমি অধঃ ক্ষিতি স্বর্গ, তুমি ধাতা চতুর্ব্বর্গ, সৃষ্টি স্থিতি প্রলয় বিধাতা।। অনাদিপুরুষ প্রিয়া, কে জানে তোমার ক্রিয়া, মায়াতে মনুষ্যদেহধারি। তুমি বিধাতার ধাতা, সবাকার অন্নদাতা, আমি তোমা কি বর্ণিতে পারি।। বেদপতি বহু খেদে, না পাইল চারিবেদে, আগমে না পায় পঞ্চানন। তুমি মোরে দিলা সর্ব্ব, তেঁই মোর হৈল গর্ব্ব, না জানিনু তোমার চরণ।।