এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
শৃঙ্গারাদি-রসোল্লাসং ভাবয়েৎ পরমেশ্বরং।
করহ এবার কৃপা, তুমি দেবী বুদ্ধিরূপা, সুমতি কুমতি প্রদায়িনী। তুমি শূণ্য জল স্থল, পৃথিবী পর্ব্বতানল, সর্ব্ব গৃহে জননী রূপিনী।। শরণ লইনু পদে, ক্ষমা কর অপরাধ, অজ্ঞান দুর্ম্মতি কর দূর। সম্পদে হইয়া মত্ত, না জানি তোমার তত্ত্ব, না চিনিনু আপন ঠাকুর।। এত বলি দেবরাজ, আরোহিয়া গজরাজ, শীঘ্র গেল হইয়া বিদায়। লৈয়া পুষ্প পারিজাত, নারদে করিয়া সাথ, দ্বারকা গেলেন যদুরায়।। ---- সত্যভামার ব্রতারম্ভ। রোপিল পুষ্পরাজ সত্যভামা দ্বারে। নানা রত্নে মূল বান্ধিলেক তরুবরে।। শত শত পূর্ণচন্দ্র যেন করে শোভা। পৃথিবী যুড়িয়া তার দীপ্ত করে আভা।। উপরে চন্দ্রমা বান্ধে দিয়া রত্নবাস। তার তলে কৃষ্ণ সহ করেন বিলাস।। হেনকালে আগত নারদ মুনিবর। দেখি সত্যভামা স্তব করেন বিস্তর।। নারদ বলেন দেবী কি কর বাখান। না হইবে নাহি হয় তোমার সমান।। দেবের দুর্ল্লব যেই পুষ্প পারিজাত। আপন দুয়ারে রোপিলেন জগন্নাথ।। এক্ষণে করহ দেবী ইহার যে কাজ। অবহেলে তোমার হইবে ব্রতরাজ।। যে ব্রত করিলে সোহাগ আগুলি। জন্ম জন্ম করিলে গোবিন্দ লৈয়া কেলী।। ব্রম্ভাণ্ড দানের ফল পায় এই ব্রতে। বিখ্যাত তোমার যশ হইবে জগতে।। এ ব্রত করিয়াছিল পুলোমানন্দিনী। সোহাগে আগুলি হৈল ইন্দ্রের ইন্দ্রানী।। পর্ব্বতনন্দিনী পূর্ব্বে এই ব্রত করি। শিবের অর্দ্ধাঙ্গ পাইলেন মহেশ্বরী।। আর কৈল স্বাহাদেবী অগ্নির গৃহিনী। যার ফলে হৈল অগ্নির সোহাগিনী।। শুনি সত্যভামা ধরে মুনির চরণে। প্রভু মোরে সেই ব্রত করাও এক্ষণে।। নারদ বলেন লহ কৃষ্ণ অনুমতি। শ্রীকৃষ্ণ নহেন যে কেবল তব পতি।। নাহি জান দেবী তুমি এ ব্রত বিধান। বৃক্ষেতে বান্ধিয়া দিতে হবে স্বামী দান।। সত্যভামা বলে হেন কহ কেন মুনি। আমার করিবে মন্দ কে আছে সতিনী।। করিব গোবিন্দ দান যে বিধি আছয়। কৃষ্ণে জিজ্ঞাসিব ইথে কি আছে সংশয়।। মুনি বলিলেন তবে বিলম্বে কি কাজ। শীঘ্র কেন আরম্ভ না কর ব্রতরাজ।। একলক্ষ ধেনু চাহি ধান্য লক্ষ কোটি। দক্ষিণা সামগ্রী কর স্বর্ণ লক্ষ কোটি।। বসন ভূষণ দান ষোড়শ বিধান। অশ্ব রথ গজ বৃষ যত রত্ন যান।। নারদের বাক্য মত সব আয়োজন। শুভদিনে করিলেন ব্রত আরম্ভন।। গোবিন্দেরে একান্তে কহেন সমাচার। হাসিয়া সতীরে কৃষ্ণ করেন স্বীকার।। নিমন্ত্রিয়া আনেন যতেক মুনিগণ। পৃথিবীর মধ্যে যত বৈসেন ব্রাম্ভণ।। হইল ব্রতের সজ্জা এ ছিল বিহিত। বৈসেন নারদ মুনি হৈয়া পুরোহিত। পারিজাত বৃক্ষেতে বান্ধিয়া হৃষীকেশে। সত্যভামা বসিলেন হাতে তিল কুশে।। রুক্মিনী প্রভৃতি ষোল সহস্র রমণী। অভিমানে সবাকারে চক্ষে বহে পানী।। সত্যভামা করিলেন দান জগন্নাথ। স্বস্তি ব'লে নারদ দিলেন হাতে হাত।। ------