পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/২১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দারিদ্রদুঃখ-দহনায় নমঃ শিবায়।।

 ধনঞ্জয় তোমার কিমত ব্যবহার।
 অনূঢ়া কন্যারে কেন কর বলাৎকার।।
 বলেন বাহিরে থাকি সত্রাজিত সুতা।
 কহ পার্থ গণ্ডগোল কেকরিছে হেথা।।
 সুভদ্রা বলেন সখি দেখ না আসিয়া।
 আমারে অর্জ্জুন বীর ধরে কি লাগিয়া।।
 সত্যভামা বলে পার্থ অনুঢ়া এ নারী।
 কি মতে ধরহ বলে হৈয়া ব্রম্ভচারী।।
 বসুদেব-সুতা হয় কৃষ্ণের ভগিনী।
 কেন হেন কর্ম্ম কর ধার্ম্মিক আপনি।।
 বলেন বিনয় বাক্য পার্থ বীরবর।
 অনন্ত নারীর মায়া বুঝিবে কি নর।।
 তোমার অশেষ মায়া বিধি অগোচর।
 আমি কি বুঝিব নারিলেন দামোদর।।
 না জানিয়া তব আজ্ঞা করিনু লঙ্ঘন।
 ক্ষমহ, তোমার পায় লইনু শরণ।।
 অর্জ্জুনের স্তবে তুষ্ট হইয়া ভারতী।
 হাসিয়া বলেন ভীত নহ মহামতি।
 যে হইল অর্জ্জুন বুঝিনু তব কর্ম্ম।
 অর্জ্জুনের স্তবে তুষ্টা হইয়া ভারতী।
 হাসিয়া বলেন ভীত নহ মহামতি।।
 যে হইল অর্জ্জুন বুঝিনু তব কর্ম্ম।
 গান্ধর্ব্ব বিবাহ কর আছয়ে যে ধর্ম্ম।।
 পাঁচ সাত সখী মিলি দিল হুলাহুলি।
 দোঁহাকারে গলে দোঁহে মালা দিল তুলি।।
 হেনমতে দোঁহাকার বিবাহ করাইয়া।
 সত্যভামা গোবিন্দে কহেন সব গিয়া।।
 সত্যভামা বলেন যে আজ্ঞা কৈলা তুমি।
 গান্ধর্ব্ব বিবাহ দিয়া আইলাম আমি।।
 কালি প্রাতে কর তুমি বিবাহের কাজ।
 দূত পাঠাইয়া আন কুটুম্ব-সমাজ।।
 অতএব বলি যে বিলম্ব নাহি সয়।
 গোবিন্দ বলেন সতি এইমত হয়।।
 কিন্ত বলভদ্রের অর্জ্জুনে নাহি প্রীত।
 পার্থে দিতে তাঁহার নহিবে মনোনীত।।
 সত্যভামা বলেন উপায় কিবা করি।
 উপায় করিব বলি বলেন শ্রীহরি।।
 মহাভারতের কথা অমৃত সমান।
 কাশীরাম কহে সদা সাধু করে পান।।
     ------
 অর্জ্জুনসহ সুভদ্রার বিবাহে বলরামের অসম্মতি।
   প্রভাতে উঠিয়া সবে করি স্নানদান।
 একত্রে বসিল যব যাদব প্রধান।।
 উগ্রসেন বসুদেব সাত্যকি উদ্ধব।
 অক্রূর সারণ গদ মূষলী মাধব।।
 প্রসঙ্গ করেন তবে দেব নারায়ণ।
 সুভদ্রা দেখিয়া মম স্থির নহে মন।।
 বিবাহের যোগ্যা যে অবিবাহিতা থাকে।
 অস্পৃশ্য তাহার অন্ন জল বলে লোকে।।
 অনূঢ়া কুমারী যদি হয় ঋতুমতী।
 উভয়ত সপ্তকুল হয় অধোগতি।।
 কুলেতে কলঙ্ক হয় সংসারেতে লাজ।
 একারণে কন্যা দিতে না করিবে ব্যাজ।।
 সপ্তম বৎসরে কন্যা দিলে ফল পায়।
 অতঃপর ইহাতে বিলম্ব না যুয়ায়।।
 আমার সম্বন্ধ যোগ্য না দেখি যে আর।
 এক চিত্তে লয় মম কুন্তীর কুমার।।
 রূপে গুণে কুলে শীলে বলে বলবান।
 পার্থ যোগ্য হয় করিয়াছি অনুমান।।
 শুনি বসুদেব তাহা করেন স্বীকার।
 যে বলেন কৃষ্ণ চিত্তে লইল আমার।।
 সাত্যকি বলেন যদি কুলে ভাগ্য থাকে।
 তবে ভদ্রা পাইবেক স্বামী অর্জ্জুনকে।।
 অর্জ্জ্জুন সমান যোগ্য না দেখি ভূতলে।
 ভাল ভাল বলি বল যাদব সকলে।।
 এতেক সবার বাক্য শুনি হলধর।
 রক্তচক্ষু করি ক্রোধে করেন উত্তর।।
 কেন চিন্তা কর সবে সুভদ্রা কারণে।
 তার হেতু বর আমি চিন্তিয়াছি মনে।।
 কৌরব কূলেতে শ্রেষ্ঠ রাজা দুর্য্যোধন।
 উচ্চকুল বলি সিদ্ধ বিখ্যাত ভুবন।।
 বলে জিনে মত্ত শত সহস্র বারণ।
 রূপেতে কন্দর্প জিনে ধরে বৈশ্রবণ।।
 অর্জ্জুনেরে শতাংশ না গণি তার গুণে।
 না বুঝিয়া হেন বাক্য বল কি কারণে।।