পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/২১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভগবতীর ধ্যান--বর্ত্তনস্থাং জগদ্ধাত্রীং কৃষ্ণবর্ণাং ত্রিলোচনাং।

 দুত পাঠাইয়া দেহ হস্তিনানগর।
 দুর্য্যোধনে হেথা নিয়া আসুক সত্বর।।
 শুভদিন করহ করিতে শুভকার্য্য।
 রাজগণ আনাইব হ'তে সর্ব্ব রাজ্য।।
 এই বাক্য যদ্যপি বলেন হলধর।
 অধোমুখ হ"য়ে কেহ না দেয় উত্তর।।
 কতক্ষণে বলরাম ডাকি দূতগণে।
 রাজ্যে নিমন্ত্রণ লিখি দিল জনে জনে।।
 দুর্য্যোধনে লিখিয়া দিলেন সমাচার।
 সুসজ্জা হইয়া এস বিবাহ তোমার।।
 মহাভারতের কথা অমৃত-লহরী।
 কাশীরাম কহে সাধু পীয়ে কর্ণ ভরি।।
        ------
     সুভদ্রা হরণের উদ্যোগ।
   দিবা অবসান হৈল সন্ধ্যার সময়।
 উঠি গেল যদুগণ যার যে আলয়।
 সত্যভামা জিজ্ঞাসেন গোবিন্দের প্রতি।
 বিবাহে বিলম্ব কেন কর প্রাণপতি।।
 গোবিন্দ বলেন সতী কিসের বিবাহ।
 পার্থ নাম শুনিয়া রামের জ্বলে দেহ।।
 বলেন যে বর করিয়াছি দুর্য্যোধনে।
 দূত পাঠাইলেন তাহার সন্নিধানে।।
 শুনি সত্যভামা হৈয়া অমকিত চিতে।
 অধোমুখ করিয়া বসিলেন ভূমিতে।।
 বলিলেন কহ দেব কি হবে এখন।
 অনর্থ হইল এবে সুভদ্রা কারণ।।
 অর্জ্জুন শুনিলে পাছে যায় পলাইয়া।
 ভগিনীরে দিবে কি হে অন্যবরে বিয়া।।
 গোবিন্দ বলেন দেবি কেন কর গোল।
 উপায় করিব আমি নহ উতরোল।।
 সত্যভামা বলেন বিলম্ব কথা নহে।
 কেহ যদি একথা রামেরে গিয়া কহে।।
 উপায় না করি কেন মৌনেতে রহিলে।
 হেন বুঝি কলঙ্ক করিবা যদুকুলে।।
 এই লজ্জা ভয়ে মম হইতেছে কাঁপ।
 না দেখাব মুখ আর জলে দিব ঝাঁপ।।
 স্ত্রীলোকেতে জানে য স্ত্রীলোকের বেদন।
 শাশুড়ীর অগ্রে আমি করি নিবেদন।।
 এত বলি উঠি গেল দৈবকী সদন।
 কহিলেন যতেক সুভদ্রা বিবরণ।।
 শুন শুন ঠাকুরাণী করি নিবেদন।
 কুললজ্জা ভয়ে মম স্থির নহে মন।।
 সুভদ্রা আসক্ত হৈল বীর ধনঞ্জয়ে।
 বলিল নহিলে প্রাণ ছাড়িব নিশ্চয়ে।।
 গান্ধর্ব্ব বিবাহ আমি দিলাম দোঁহার।
 এবে শুনি এখন হইবে বর আর।।
 শুনি দৈবকী দেবী হইয়া বিস্মিতা।
 বলভদ্র-গৃহে যান রোহিনী সহিতা।।
 দৈবকী বলেন তাত শুন হলপাণি।
 অর্জ্জুনে না দাহ কেন সুভদ্রা ভগিনী।।
 রূপে গুণে কুলে শীলে সকল বাখান।
 কুটুম্বে কুটুম্বে হবে কেন কর আন।।
 রাম বলে জননী না বুঝি কেন কহ।
 পাণ্ডবের জন্মকথা সকলি জানহ।।
 আমার কুটুম্বযোগ্য নহে ধনঞ্জয়।
 অযোগ্য সন্মন্ধে মাতা সব নষ্ট হয়।।
 এই হেতু দুর্য্যোধনে পাঠাইনু দূত।
 নিষ্কলঙ্ক সর্ব্বযোগ্য হয় কুরসুত।।
 তিনলোকে বিখ্যাত পাণ্ডব জারজাত।
 হেনজনে দিতে চাহ সুভদ্রা কিমত।।
 রোহিনী বলেন তাত সবার বিচার।
 তাত ভ্রাতা তোমার যতেক জ্ঞাতি আর।।
 কি হেতু সবার বাক্য করহ হেলন।
 দেহ অর্জ্জুনেরে ভদ্রা সবাকার মন।।
 সাধু ধর্ম্মশীল পার্থ গুণী সর্ব্বগুণে।
 তারে নাহি দিয়া ভদ্রা দিবা অন্যজনে।।
 যে কহ সে কহ তাত ক্রোধ কর তুমি।
 কল্য প্রাতে পার্থে সুভদ্রা দিব যে আমি।।
 শুনিয়া মায়ের বাক্য কম্পিত অধর।
 তাম্র দুই চক্ষু যেন জ্বলে বৈশ্বানর।।
 বাতুলের বাক্যমত কহিছ বচন।
 অন্য হৈলে কোথা তার রহিত জীবন।।