এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
প্রণাম মন্ত্র-- নমো গোভ্যঃ শ্রীমতীভ্যঃ সৌরভেয়ীভ্য এব চ।
ধরিল ধরিল চোর বলি শব্দ হৈল। ফেল কাটি বলিয়া নৃপতি আজ্ঞা দিল।। আমা লঙ্ঘে এই চোর আমার অগ্রেতে। দক্ষিণ মশানে লৈয়া কাট এই পথে।। নৃপতির আজ্ঞা পেয়ে ধায় দুঃশাসন। অনেক মারিয়া নিল করিয়া বন্ধন।। কর্ণ প্রতি জিজ্ঞাসেন রাজা দুর্য্যোধন। চিনিলা কি এই চোর কাহার নন্দন।। কর্ণ বলে মহারাজ এত গর্ব্ব কার। চোরপুত্র বিনা চুরি কে করিবে আর।। শুনি দুর্য্যোধনের কাঁপিছে কলেবর। কড়মড় দশনে কচালে করে কর।। গোকুলেতে বাড়িল গোপ অন্ন খাইয়া। ক্ষত্রকুলে কেহ কন্যা নাহি দেয় বিয়া।। চুরি করি সব ঠাঁই এইমত লয়। সহজে চোরের জাতি কবা লাজ ভয়।। সর্ব্বত্র করিয়া চুরি বাড়িয়াছে মন। নাহি জানে দুরন্ত এ যমের সদন।। সভাতে এ সব লজ্জা দিলেক আমায়। কাট লৈয়া চোরেরে বিলম্ব না যুয়ায়।। এতেক বলিল যদি রাজা দুর্য্যোধন। কে চোর বলিয়া বলে ধর্ম্মের নন্দন।। দুর্য্যোধন বলে যুধিষ্ঠির মহারাজ। তোমার কি অগোচর সেই চোররাজ।। ভাই ভাই বলি যারে বলহ আপনি। গোকুলে করিল চুরি গোকুল-কামিনী।। বিদর্ভে করিল চুরি ভীষ্মক-দুহিতা। পুত্র কাম কৈল চুরি ব্রজনাভসুতা।। পৌত্র চুরি করিলেক বাণের নন্দিনী। এ তিন পুরুষে চোর বিখ্যাত ধরণী।। শুনিয়া বিষন্ন মুখ হৈয়া ধর্ম্মরাজ। কৃষ্ণনিন্দা শুনিয়া দুঃখিত হৃদিমাঝ।। ধর্ম্ম বলিলেন ভাই না হয় উচিত। গোবিন্দের নিন্দা কর সবার বিদিত।। যে পারে করিতে চুরি সেই করে চুরি। কাহার শক্তিতে কৃষ্ণে কি করিতে পারি।। দুর্য্যোধন বলে ভাল বল ধর্ম্মরাজ। যাহা হৈতে আমার ভুবনে হৈল লাজ।। মম কন্যা চুরি করি লয় দুরাচার। তারে নিন্দা করিতে এ উত্তর তোমার।। যুধিষ্ঠির কফে কন্যা কে করিল চুরি। আন দেখি তাহারে চিনিতে যদি পারি।। দুর্য্যোধন বলে চোরে কোন্ কর্ম্ম হেথা। যে কেহ হউক শীঘ্র কাট তার মাথা।। যুধিষ্ঠির বলে যদি কৃষ্ণের নন্দন। তারে কাটি ভাল না হইবে দুর্য্যোধন।। কৃষ্ণ বৈরী হৈলে ভাই রক্ষা আছে কার। কুরুকুলে বাতি দিতে না থাকিবে আর।। ইন্দ্র যম বরুণ কুবের পঞ্চানন। কৃষ্ণ ক্রোধ করিলে রাখিবে কোন্ জন।। দুর্য্যোধন বলে যদি তুমি ডরাইলে। ইন্দ্রপ্রস্থে যাও প্রাণ লয়ে এইকালে।। এক্ষণে শরণ গিয়া লহ কৃষ্ণ ঠাঁই। মারিব চোরেরে আমি কারে না ডরাই।। দুর্য্যোধন-বাক্য যে শুনিয়া বৃকোদর। পাইয়া জ্যেষ্ঠের আজ্ঞা ধাইল সত্বর।। মশানেতে দুঃশাসন ধরি শাম্বচুলে। কাটিবারে হস্তে বীর খড়্গ চর্ম্ম তোলে।। বায়ুবেগে বৃকোদর উত্তরিল গিয়া। হাত হৈতে খড়্গ চর্ম্ম লইল কাড়িয়া।। তাহারে বলিল তোর কিমত বিচার। কাটিবারে আনিয়াছ কৃষ্ণের কুমার।। ধর্ম্মরাজ আজ্ঞা কৈল লইতে বাহুড়ি। এত বলি ছিঁড়িল সে বন্ধনের দড়ি।। হাতে ধরি কোলে করি লইল শাম্বেরে। শাম্ব দেখি যুধিষ্ঠির কহেন সাদরে।। জাম্ববতী নন্দন হে বৎসল আমার। চুম্বিয়া নিলেন কোলে ধর্ম্মের কুমার।। দেখি ক্রোধে দুর্য্যোধন কাঁপে থরথরে। দেখ দেখ, বলিয়া বলয়ে সবাকারে।। দেখ ভীষ্ম দ্রোণ কৃপ আপন বিদিত। নিরন্তর কহ যে পাণ্ডব তব হিত।।