পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/২১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তপ্তকাঞ্চনবর্ণাভং শক্তিহস্তং বরপ্রদং।।

 একাকিনী যান সতী পার্থের সদন।
 দেখেন সুভদ্রা সহ আছেন অর্জ্জুন।।
 সত্যভামা বলেন কি নিশ্চিন্তে আছহ।
 এতেক প্রমাদ পার্থ তুমি না জানহ।।
 পার্থ বলিলেন দেবী কিসের প্রমাদ।
 যাহার সহায় দেবী তব যুগ্মপাদ।।
 পার্থেরে লইয়া সতী যান কৃষ্ণস্থান।
 হস্তে ধরি পালঙ্কে বসান ভগবান।।
 গোবিন্দ বলেন সখা কর অবধান।
 পিতৃ আজ্ঞা তোমারে সুভদ্রা দিতে দান।।
 লাঙ্গলী বলেন আমি দিব দুর্য্যোধনে।
 এত বলি দূত পাঠাইলেন সে স্থানে।।
 কি হইবে কহ সখা উপায় ইহার।
 শুনি হাসি বলিলেন কুন্তীর কুমার।।
 এই কথ হেতু সখা চিন্তা কেন মনে।
 তোমার প্রসাদে আমি জিনি ত্রিভুবনে।।
 মৃত্যুপতি মৃত্যুঞ্জয় ইন্দ্রে নাহি ডরি।
 কামপাল কত শক্তি ধরেন শ্রীহরি।।
 দণ্ডাইয়া আপনি দেখুন হলধর।
 সুভদ্রা লইয়া যাই সবার গোচর।।
 শ্রীকৃষ্ণ বলেন দ্বন্দ্বে নাহি প্রয়োজন।
 লুকাইয়া ভদ্রা লৈয়া করহ গমন।।
 মম রথে চড়ি যাহ মৃগয়ার ছলে।
 সুভদ্রা পাঠাব আমি স্নান হেতু জলে।।
 সেই রথে ল'য়ে তুমি করিবে গমন।
 পশ্চাতে করিব শান্ত রেবতীরমণ।।
 এতেক বলিল যদি দৈবকী-কুমার।
 অর্জ্জুন বলেন দেব যে আজ্ঞা তোমার।।
 হেনমতে বিচার করিয়া দুইজন।
 নিজ গৃহে চলিলেন করিতে শয়ন।।
 প্রভাতে উঠিয়া পার্থ করি স্নানদান।
 কি করিব বসিয়া করেন অনুমান।।
 এতেক অনর্থ হবে রাম সহ রণ।
 কিছু না জানেন রাজা ধর্ম্মের নন্দন।।
 এত চিন্তি ইন্দ্রপ্রস্থে দূত পাঠাইয়া।
 বলিলেন সমস্ত বৃত্তান্ত বিবরিয়া।।
 আমারে সুভদ্রা দিতে কৃষ্ণের মানস।
 কামপাল হইলেন তাহাতে বিরস।।
 তাহে কৃষ্ণ বলিলেন লহ লুকাইয়া।
 ইহার বিহিত আজ্ঞা দেহ পাঠাইয়া।।
 শুনিয়া বলেন তবে ধর্ম্মের নন্দন।
 পাণ্ডবের সখা বল বুদ্ধি নারায়ণ।।
 তিনি কহিবেন যাহা করিবা সে কাজ।
 শুনি পার্থ সানন্দ হইলেন হৃদিমাঝ।।
 হেনমতে সপ্তনিশা গত হয় তথা।
 হেথা দুর্য্যোধন রাজা শুনিল বারতা।।
 ধৃতরাষ্ট্র গান্ধারী হরিষ সর্ব্বজন।
 কৃষ্ণের ভগিনীপতি হবে দুর্য্যোধন।।
 বহু দেশ হইতে আসিল বন্ধুগণ।
 বিবাহ সামগ্রী হেতু করে আয়োজন।।
 স্থানে স্থানে বসি সবে করেন বিচার।
 দুর্য্যোধনে পাণ্ডবে ভয় নাহি আর।।
 এই কথা অহর্নিশি চিন্তে মনে মন।
 আজি হৈতে নির্ভয় হইল দুর্য্যোধন।।
 পাণ্ডবের সহায় কেবল নারায়ণ।
 দুর্য্যোধনের আত্মবন্ধু হইল এখন।।
 দ্রোণ বলে কৃষ্ণের কুটুম্বে নাহি প্রীতঃ।
 তাঁর নাহি পরাপর ভক্তজন হিত।।
 বিদুর কহেন কথা আশ্চর্য্য লাগয়।
 কৃপাচার্য্য বলে ইহা কদাচিত নয়।।
 দুর্য্যোধনে অপ্রীত গোবিন্দ মহাশয়।
 এমন হইবে কর্ম্ম মনে নাহি লয়।।
 দূতস্থানে জিজ্ঞাসিল সব বিবরণ।
 সকল বৃত্তান্ত দূত কহিল তখন।।
 দ্বারকাতে আছেন অর্জ্জুন কুন্তীসুত।
 তাহারে সুভদ্রা দিবে বলেন অচ্যুত।।
 পাণ্ডবে অপ্রীত রাম না করে স্বীকার।
 দুর্য্যোধনে দিব বলে রোহিনীকুমার।।
 গোবিন্দের চিত্ত নহে দুর্য্যোধনে দিতে।
 না হয় নির্ণয় কিছু যা হয় পশ্চাতে।।
 ভীষ্ম বলে দুর্য্যোধন পাবে লজ্জা মাত্র।
 যে কেহ করুক বিভা, মোরা বরযাত্র।।