এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
বিশ্ব-কর্ম্মনং নমস্তুভ্যং সর্ব্বাভীষ্ট প্রদায়ক।।
মাতার বচন ধরে, উদরে প্রবেশ করে, বায়ুভরে উড়িল নাগিনী। অন্তরীক্ষে যায় উড়ে, পার্থের সম্মুখে পড়ে, দুই অস্ত্র এড়িল ফাল্গুনী।। এক অস্ত্রে কাটে মুণ্ড, পুচ্ছ কাটি তিন খণ্ড, নাগিনী পড়িল ভূমিতলে। অশ্বসেন উড়ি যায়, পার্থ না দেখিতে পায়, ইন্দ্র মোহ কৈল মায়াজালে।। দেখি পার্থ মহাক্রুদ্ধ, পুনঃ ইন্দ্র সহ যুদ্ধ, শরজালে ছাইল মেদিনী। ইন্দ্রার্জ্জুনে মহারণ, চমকিত ত্রিভুবন, আচম্বিতে হৈল শূন্যবাণী।। না কর না কর দ্বন্দ্ব, কেন হৈল মতিধন্ধ, সম্বর সম্বর মেঘরাজ। এই নর নারায়ণে, সংগ্রাম করিয়া জিনে, নাহি হেন ব্রম্ভাণ্ডের মাঝ।। কোন প্রয়োজন হেতু, যুদ্ধ কর শতক্রতু, অপমান পরিশ্রম সার। যেইহেতু চিত্তে আছে, কুরুক্ষেত্রে অগ্রে গেছে, তব সখা কশ্যপ-কুমার।। শূন্যবাণী শুনি ইন্দ্র, সহ যত সুরবৃন্দ, সমরেতে হইল বিরত। স্বর্গে গেল সুরপতি, নাগগণ ভোগবতী, যথা স্থানে গেল আর যত।। হেনকালে ময় নামে, আছিল তক্ষক ধামে, নমুচি দানব সহোদর। ভয়ে পলাইয়া যায়, পাছে দেখি অগ্নি ধায়, যেই ভিতে দেব দামোদর।। দানব দেখিয়া হরি, দেবতাগণের অরি, সুদর্শন ছাড়িলেন তায়। পাছে ধায় হুতাশন, মহাচক্র সুদর্শন, দানব ঈশ্বরে গিয়া পায়।। কাতরে ডাকয়ে ময়, রক্ষা কর ধনঞ্জয়, ত্রৈলোক্যবিজয়ী কুন্তীসুত। বেড়িলেক মহাচক্র, ক্ষুদ্র মীন যেন নক্র, পাছে অগ্নি যেন যমদূত।। শব্দ শুনি ধনঞ্জয়, ডেকে বলে নাহি ভয়, ভীত হৈয়া ডাকে কোন জন। অর্জ্জুন অভয় দিল, সুদর্শন বাহুড়িল, অভয় দিলেন হুতাশন।। যতেক খাণ্ডববাসী, পুড়ি হৈল ভস্মরাশি, কেবল রহিল ছয়জন। আদিপর্ব্ব ব্যাসকৃত, পাঁচালী প্রবন্ধে গীত, কাশীদাস দেব বিরচন।। ----- মন্দপালাদির অগ্নিতে প্রাণরক্ষা। বলেন শ্রীজন্মেজয় শুন তপোধন। অগ্নি পাইল রক্ষা কোন ছয় জন।। শুনিলাম ভুজঙ্গ দানব বিবরণ। অগ্নিতে বাঁচিল কেবা আর চারিজন।। মুনি বলে শুন রাজা কথা পুরাতন। মন্দপাল নামে এক ছিল তপোধন।। ধার্ম্মিক তপস্বী জিতেন্দ্রিয় মহাবীর। তপঃ করি সদাকাল ত্যাজিল শরীর।। তপঃ ক্লেশ-ফলে রাজা গেল স্বর্গবাস। স্বর্গে বসি সর্ব্ব সুখে হইল নিরাশ।। আর যত স্বর্গবাসী নানা সুখে সুখী। স্বর্গেতে বসিয়া রাজা চিত্তে বড় দুঃখী।। দুঃখচিত্তে দ্বিজ জিজ্ঞাসিল পুণ্যজনে। স্বর্গে মম দুঃখ দূর নহে কি কারণে।। কোন কর্ম্ম আমি না করিলাম ক্ষিতিতলে। কি হেতু স্বর্গেতে মম সুখ নাহি মিলে।। দেবগণ বলে পুণ্যভূমি ভূমণ্ডলে। সেথা যাহা করে স্বর্গে ভুঞ্জে সেই ফলে।। ভূমিতে জন্মিয়া কর্ম্ম বহুল করিলা। কিন্তু মহাশয় পুত্র নাহি জন্মাইলা।। পৃথিবীতে পুত্ত্রোৎপত্তি যে জন না করে। পুণ্য নাশে, অন্তে যায় নরক ভিতরে।। বহু পুণ্যকর্ম্ম করে বহু করে দান। নরকে প্রবেশ, যদি নহে পুত্ত্রবান।। স্বর্গবাসে দুঃখ তুমি পাও সে কারণ। অন্যোপায় নাহি ইথে শুনে তপোধন।।