২৬৮ অন্নপূর্ণার ধ্যান—রক্তাং বিচিত্রবসনাং নবচন্দ্রচুড়া [ মহাভারত। সম্পূর্ণ হইল যজ্ঞ সিদ্ধ হৈল কাজ । লক্ষ রাজা উপরে হইলে মহারাজ ॥ তোমার মহিমা যত কহেছি বিশেষ । আজ্ঞা কৈলে যাই সবে নিজ নিজ দেশ ॥ রাজগণ বচন শুনিয়া ধৰ্ম্মরায় । কহিলেন ভ্রাতৃগণে পূজহ সবায় ॥ যথাযোগ্য মান্য করি ভূমিপতিগণে । অগ্রসরি কত পথ যাও-জনে জনে ॥ রাজার আজ্ঞায় নানাবিধ রত্ব দিয়া । পাঠাইল রাজগণে সন্তোষ করিয়া ॥ যজ্ঞ অস্তে দুৰ্য্যোধনের গৃহে গমন । রাজগণ নিজ রাজ্যে করিল গমন । ধৰ্ম্মরাজে কহিলেন দেব নারায়ণ ॥ আজ্ঞা কর দ্বারকায় যাই মহাশয় । তব যজ্ঞ পূর্ণ হৈল মম ভাগ্যোদয় ॥ অপ্রমাদে রাজ্য কর পলি প্রজাগণ । স্বহৃদ কুটুম্ব লোকে করহ পালন ॥ এত বলি ধৰ্ম্ম সহ দেব নারায়ণ । কুন্তীস্থানে গিয়া করিলেন নিবেদন ॥ আজ্ঞা কর যাই আমি দ্বারকা ভবনে । হইল সাম্রাজ্য লাভ তব পুত্ৰগণে । কুন্তী বলিলেন তাত এ নহে অদ্ভুত । যাহারে কিঞ্চিৎ দয়া করহ অচু্যত । এত বলি কৃষ্ণশিরে করিল চুম্বন । প্রণাম করেন হরি ধরিয়া চরণ ॥ দ্রৌপদী স্বভদ্র সহ করি সম্ভাষণ । একে একে সম্ভীষেণ ভাই পঞ্চজন ॥ রথে চড়ি চলিলেন হরি দ্বারাবতী । কৃষ্ণের বিচ্ছেদে দুঃখী ধৰ্ম্ম নরপতি ॥ হেনমতে নিজ দেশে গেল সৰ্ব্বজন । ইন্দ্রপ্রস্থে রহিল শকুনি দুৰ্য্যোধন ॥ বাঞ্ছা বড় ধৰ্ম্মরাজ সভা দেখিবারে । কতদিন বঞ্চে তথা কুরু নৃপবরে ॥ শকুনি সহিত সভা নিত্য নিত্য দেখে । দিব্য মনোহর সভা অনুপম লোকে ॥ নানা রত্ব বিরচিত যেন দেবপুরী । দেখিয় বিস্ময়াপন্ন কুরু অধিকারী ॥ অমূল্য রতনেতে মণ্ডিত গৃহগণ । এক গৃহ তুল্য নহে হস্তিনাভুবন ॥ দেখি দুৰ্য্যোধন রাজা অন্তরে চিন্তিত । একদিন দেখ তথা দৈবের লিখিত ॥ মাতুল সহিত বিহরয়ে নরবর। স্ফটিকের বেদী দেখে যেন সরোবর ॥ জল জানি নরপতি তুলিল বসন । পশ্চাৎ জানিয় বেদী লজ্জিত রাজন ॥ তথা হৈতে কতদূরে গেল নরবর। লজ্জায় মলিন মুখ কাপে থর থর ॥ স্ফটিকের বাপী বলি ভ্ৰমে না জানিল । স-বসন দুৰ্য্যোধন বাপীতে পড়িল ॥ দেখিয়া হাসিল তবে যত সভাজন । ভীম পার্থ আর দুই মাদ্রীর নন্দন ॥ দেখিয় দিলেন অজ্ঞ। রাজ ভ্রাতৃগণে । ধরিয়া তুলিল বাপী হৈতে দুর্য্যোধনে ॥ সোদক বসন ত্যজি পরাইল বাস । করাইল নিবৃত্ত লোকের যত হাস ॥ অভিমানে র্কাপে দুর্য্যোধন-কলেবর । বাহির হইল তবে চিন্তিত অন্তর ॥ ক্রোধেতে চলিল তবে গান্ধারী-কুমার। ভ্ৰম হৈল দেখিবারে না পায় দুয়ার ॥ স্থানে স্থানে প্রাচীরেতে স্ফটিক মণ্ডন। দ্বার হেন জানিয়া চলিল দুর্য্যোধন ॥ ললাটে প্রাচীর বাজি পড়িল ভূতলে । দেখিয়া হাসিল পুনঃ সভার সকলে ॥ তাহ দেখি শীঘ্ৰগতি ধৰ্ম্মের কুমার। নকুলেরে পাঠালেন দেখাইতে দ্বার ॥ নকুল ধরিয়া হস্ত করিল বাহির । অভিমানে দুর্য্যোধন কম্পিত শরীর ॥ ক্ষণমাত্র তথায় বিলম্ব না করিল। যুধিষ্ঠির-আজ্ঞা মাগি রথ আরোহিল ॥ মাতুল সহিত তবে চলিল হস্তিন । ঘনশ্বাস হেটমাথা হইয়া বিমন ৷
পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/৪২৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।