সভাপর্ব। ] —মন্ন প্রদান-নিরতাং স্তনভার নম্ৰাং । ૨Ns o কত শত শকুনি বলয়ে দুৰ্য্যোধনে । উত্তর না পেয়ে জিজ্ঞাসিল ততক্ষণে ॥ সঘনে নিশ্বাস কেন মলিন বদন । অত্যন্ত চিন্তিত চিত কিসের কারণ ॥ দুৰ্য্যোধন বলে মামা কর অবধান । হৃদয় দহিছে মম এই অপমান ॥ পাণ্ডবের বশ হৈল পৃথিবীমণ্ডল । একলক্ষ নৃপতি খাটিল ছত্রতল ॥ ইন্দ্রের বৈভব জিনি কুন্তীর কুমার। কুবেরের কোষ জিনি পূর্ণিত ভাণ্ডার ॥ এ সব দেখিয়া মোর শুকাইল কায় । সরোবর-জল যেন নিদাঘে শুকায় ॥ শকুনি বলিল ভাল বিচারিলা মনে । সংগ্রামে কে জিনিবেক পাণ্ডুপুত্ৰগণে ॥ জিনিবারে এক বিদ্যা আছে মম স্থান । জিনিবারে চাহ যদি লহ সেই জ্ঞান ॥ ভূর্য্যোধন বলে কহ মাতুল স্বমতি । হেন বিদ্যা আছে যদি দেহ শীঘ্ৰগতি ॥ শকুনি বলিল এই শুন দুর্য্যোধন । পাশায় নিপুণ নহে ধৰ্ম্মের নন্দন ॥ ক্ষত্রনীতি আছে হেন যদ্যপি আহবান । কিবা দূতে কিবা যুদ্ধে বিমুখ না হন ৷ কদাচিৎ যুধিষ্ঠির বিমুখ না হবে । খেলিলে তোমার জয় অবশ্য হইবে ॥ এইরূপ বিচার করিয়া দুই জনে । ইস্তিনানগরে প্রবেশিল কতক্ষণে ॥ ধতরাষ্ট্র চরণে করিল নমস্কার । আশীষ করিয়া জিজ্ঞাসিল সমাচার ॥ ইয্যোধন বলে হেন কি আছে উপায় । বিনা দ্বন্দ্বে পাণ্ডবেরে জিনি নররায় ॥ পাশাক্রীড়া জানে ভাল মাতুল শকুনি । পাশায় পাণ্ডব-লক্ষী সব লব জিনি ॥ এতেক শুনি অন্ধ বলিল তখন । বিহরে জিজ্ঞাসি আমি কহিব কারণ ॥ বিছর কছিল রাজা না কহিলা ভাল । জানিলাম আজি হৈতে সৰ্ব্বনাশ হৈল ॥ পাশা খেলাইবার মন্ত্রণ। । জন্মেজয় বলে কহ শুনি মুনিবর। । কি হেতু হইল পাশা অনর্থের ঘর ॥ পিতামহ পিতামহী দুঃখ যাহে পাইল । কেবা খেলা নিবৰ্ত্তিল কেবা প্রবৰ্ত্তিল ॥ কোন কোন জন ছিল সভার ভিতর । যেই পাশ হৈতে হৈল ভারত সমর। মুনি বলে শুন পরীক্ষিতের তনয় । ক্ষত্তা বাক্য শুনি অন্ধ চিন্তিত হৃদয় ॥ দৃঢ় করি জানিল এ কৰ্ম্ম ভাল নয়। একান্তে ডাকিয়া রাজা দুর্য্যোধনে কয় ॥ হে পুত্ৰ কদাচ তুমি না খেলাও পাশ । এ কৰ্ম্মেতে বিছুর না করিল ভরসা ॥ মাতা পিতা তুমি যদি মান দুৰ্য্যোধন । না খেলহ পাশা তুমি শুনহ বচন ॥ পরম পণ্ডিত তুমি না বুঝহ কেনে । কি কারণে হিংসা কর পাণ্ডুর নন্দনে ॥ কুরুকুলে জ্যেষ্ঠ শ্রেষ্ঠ যুধিষ্ঠির গণি । হস্তিনানগর কুরুকুল রাজধানী ॥ যুধিষ্ঠির স্থিতে তুমি পাইলে হস্তিন । তুমি যাহা দিলে তাহা নিল পঞ্চজন ॥ ইন্দ্রের সমান পুত্র তোমার বৈভব । নরযোনি হ’য়ে কার এমত সম্ভব ॥ ইথে অনুশোচ পুত্র কিসের কারণ। কি হেতু উদ্বেগ কর কহ দুর্য্যোধন ॥ দুৰ্য্যোধন বলে পিতা সমর্থ হইয়া । অহঙ্কার নাহি যার শক্রকে দেখিয় ॥ কাপুরুষ মধ্যে গণ্য হয় হেন জল । বিশেষ ক্ষত্ৰিভু পাণ্ড প’নহ আপন ॥ মোরে যে বলিলে লক্ষী গণ সাধারণ । এইমত লক্ষমা পিতা ভুঞ্জে বহুজন । কুন্তীপুত্র লক্ষমা যেন দীপ্ত হুতাশন । দেখি মোর ধন্য প্রাণ অাছে এতক্ষণ ॥ পৃথিবী ব্যাপিল পিক্ত পাণ্ডবের যশ । যতেক নৃপতি পিতা হৈল তার বশ ।
পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/৪২৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।