এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
হরে মুরারে মধুকৈট ভারে।
এতেক কাশ্যপ-বাক্যে তক্ষক শুনিয়া। দংশিলেক তরুবর যায় ভস্ম হৈয়া। লাফ দিয়া ভস্ম মুষ্টি কাশ্যপ ধরিল।। মন্ত্রপড়ি ভস্ম মুষ্টি গর্ত্তেতে ফেলিল। দৃষ্টিমাত্র সেইক্ষণে অঙ্কুর হইল। বাড়িতে লাগিল বৃক্ষ আশ্চর্য্য মানিল।। দুই পত্র হ'য়ে হৈল দীর্ঘ তরুবর। শাখা পত্র পূর্ব্ব মত হইল সুন্দর।। দেখিয়া-তক্ষক হৈল বিষন্ন বদন। কাশ্যপে চাহিয়া বলে বিনয়-বচন।। পরম পণ্ডিত তুমি মহাগুণে গুনী। তোমার চরিত্র লোকে অদ্ভুত কাহিনী।। রাখিতে আছয়ে শক্তি দেখিনু তোমার। কেবল আমার বিষে কৈলে প্রতিকার।। আমাকে রাখিতে পার আছয়ে শকতি। রাখিতে নারিবে পরীক্ষিৎ নরপতি।। পূর্ব্বেতে দংশিলে তারে ব্রাম্ভণের বিষ। সেই বিষে ভয় করে দেব জগদীশ।। পদাঘাত খাইয়া করিল কৃতাঞ্জলি। স্তব করিলেন ভয়ে পাছে দেয় গালি।। ব্রাম্ভণের গালিতে কলঙ্কী শশধর। ব্রাম্ভণের গালিতে ভগ্নাঙ্গ পুরন্দর।। আর যত লোক আছে দেখ পৃথিবীতে। হেন জন কে না দরে বিপ্রের গালিতে।। ব্রম্ভশাপে বিরোধ করিতে যদি মন। তবে তথাকারে তুনি করহ গমন।। যশ লভিবারে যদি যাবে দ্বিজবর। না পারিলে লজ্জা পাবে সভার ভিতর।। ধন ইচ্ছা করি যদি যাও তথাকারে। আমি দিব যাহা নাহি রাজার ভাণ্ডারে।। এতেক বচন যদি তক্ষক বলিল। শুনিয়া কাশ্যপ দ্বিজ মনেতে ভাবিল।। ভাল বলে ফণিবর লয় মোর মন। ব্রম্ভশাপে বিরোধ নাহিক প্রয়োজন।। নিশ্চয় জানিনু আয়ু নাহিক রাজার। চিন্তিয়া তক্ষক-বাক্য করিল স্বীকার।। কাশ্যপ বলিল আমি দরিদ্র ব্রাম্ভণ। তবে আর কেন যাই পাই যদি ধন।। যাইতাম ধন অর্থ যশের কারণে। ব্রম্ভশাপ বিরোধ হইল ভয় মনে।। তুমি যদি দেহ ধন যাইব ফিরিয়া। এত শুনি ফণি মণি দিলেক ডাকিয়া।। যাহার পরশে হয় লৌহাদ্রি কঞ্চন। হৃষ্ট হইয়া ফিরি গেল দরদ্র ব্রাম্ভণ।। বাহুড়ি কশ্যপ গেল চিন্তে ফণিবর। পরস্পর কহে লোকে শুনিল উত্তর।। কেহ বলে ভূপতিরে ব্রম্ভশাপ দিল। সপ্তম দিবসে আজি আসি পূর্ণ হৈল।। কেহ বলে রাজা বড় করিল উপায়। এক স্তম্ভে মঞ্চ করি বসি আছি তায়।। কাহার' নাহিক শক্তি যাইতে তথায়। কেমনে তক্ষক গিয়া দংশবে রাজায়।। নানাবিধ মহৌষিধি আছে চারিভিতে। গুণিগণ শূণ্যপথে রোধিল মন্ত্রেতে।। পরস্পর এই কথা বলে সর্ব্বজন। শুনিয়া চিন্তিত চিত্তে কদ্রুর নন্দন।। সহচরগণ প্রতি বলিল বচন। ব্রাম্ভণের মুর্ত্তি তবে ধর সর্ব্বজনা।। ফল ফুলে আশীর্ব্বাদ করিবা রাজারে। এই ফল-গুটি লৈয়া তাঁর করে।। শীঘ্রগতি না যাইবে যাবে ধীরে ধীরে। চিনিতে না পারে যেন রাজ-অনুচরে।। এত বলি ফলমধ্যে করিল আশ্রয়। শুনিয়া সকল নাগ বিপ্রমূর্ত্তি হয়।। সেই ফল নানা পুষ্প হাতে করি নিল। যথা আছে নরপতি তথায় চলিল।। ব্রাম্ভণের রোধ নাহি রাজার দুয়ারে। ফল ফুলে আশীষ করিল নরবরে।। আনন্দে ভূপতি তার পুষ্প-ফল নিল। ফলে খুঁত দেখি রাজা নখে বিদারিল।।