এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
প্রণাম মন্ত্র-- নমো ব্রম্ভণ্যদেবায় গোব্রাম্ভণহিতায় চ।
পরম সুন্দর কায়, শিশু পূর্ণশশী প্রায়, দেখি আনন্দিত সব নাগে।। রূপে গুণে অনুপম, আস্তিক থুইল নাম, গর্ভকালে কহি গেল পিতা। শৈশব হৈতে সুত, সকল গুণেতে যুত, বেদ-বিদ্যা-ব্রতে পারগতা।। আস্তিকের জন্মকথা, অপূর্ব্ব ভারতীগাথা, শুনিলে অধর্ম্ম নাশ হয়। কামলাকান্তের সুত, হেতু সুজনের প্রীত, বিরচিল কাশীরাম দাস।। ---- উপমন্যু ও আরিনির উপাখ্যান সৌতি বলে অপূর্ব্ব শুনহ মুনিগণ। কহিব বিচিত্র কথা পুরান-বচন।। অবন্তীনগরে দ্বিজ নাম সান্দীপন। তাঁর স্থানে শিষ্যগণ করে অধ্যয়ন।। এক শিষ্যে দ্বিজ গাভী কৈল সমর্পণ। গুরু-আজ্ঞাক্রমে তারে করেন রক্ষণ।। কত দিনে কহে গুরু কহ শিষ্যবর। বড় পুষ্ট দেখি যে তোমার কলেবর।। কিবা খাও কোথা পাও কহ সত্যবাণী। শুনিয়া বলেন শিষ্য করি যোড়পাণি।। গাভীগণ-দোহনান্তে পিয়া বৎসগণ। পশ্চাতে যে খাই আমি করিয়া দোহন।। গুর বলে এতদিনে সব জানা গেল। এই হেতু বৎসগণ দুর্ব্বল হইল।। আর কভু না করিও তুমি হেন কাজ। গাভী দুহি খাও তুমি মুখে নাহি লাজ।। গুরু আজ্ঞা শুনি দ্বিজ গেল গাভী লৈয়া। কত দিনে পুনঃ তারে কহিল ডাকিয়া। উচিত কহিতা শিষ্য না হইও রুষ্ট। পুনশ্চ তোমারে দেখি বড় হৃষ্টপুষ্ট।। গাভীদুগ্ধ পুনঃ তুমি কর বুঝি পান। শিষ্য কহে গোসাঞি করহ অবধান।। যেই হৈতে তুমি মোরে করিলা বারণ। ভিক্ষা করি নিত্য করি উদর পূরণ।। গুরু বলে ভিক্ষা করি পূরাও উদরে। এবে ভিক্ষা করি সব আনি দেহ মোরে।। এত শুনি গাভী লৈয়া গেল দ্বিজবর। পুনঃ জিজ্ঞাসিল কত দিবস অন্তর।। কহ শিষ্য বড় পুষ্ট দেখি তব কায়। কি খাইয়া রহিয়াছ কহিবে আমায়।। শিষ্য কহে গভী রাখি অরণ্য ভিতর। রক্ষক রাখিয়া আমি যাই যে নগর।। দিবসেতে যাতা ভিক্ষা দিই তব ঘরে। সন্ধ্যাতে মাগিয়া ভিক্ষা ভরি যে উদরে।। হাসিয়া বলিল গুরু এ কোন বিচার। শ্রেষ্ঠ ভিক্ষা রাত্রে তুমি কর আপনার।। রাত্রি দিবা যত পাও আনি দিবে মোরে। এত শুনি গাভী লৈয়া গেল বনান্তরে।। ক্ষুধায় আকুল আত্মা ভ্রমে বনে বনে। অর্কের কমল পত্র করয়ে ভক্ষণ।। বড়ই দুর্ব্বল হৈল শীর্ণ হৈল কায়। দেখিতে না পায় তবু গোধন চরায়।। ভ্রমিতে ভ্রমিতে দেখ দৈবের লিখন। নিরুদক-কূপমধ্যে পড়িল ব্রাম্ভণ।। সমস্ত দিবস গেল হৈল সন্ধ্যাকাল। গৃহেতে আইল সবে গোধনের পাল।। শিষ্য না দেখিয়া গুরু দুঃখিত অন্তর। অণ্বেষ্ণে গেল দ্বিজ অরণ্য ভিতর।। কোথা গেল উপমন্যু ডাকে দ্বিজবর। উপমন্যু বলে আমি কূপের ভিতর।। গুরু বলে উপমন্যু পড়িলে কিমতে। উপমন্যু বলে চক্ষে না পাই দেখিতে।। অর্কপত্র খাইয়া নয়ন অন্ধ হৈল। শুনিয়া আচার্য্য তবে উপদেশ কৈল।। দেববৈদ্য অশ্বিনীকুমার দুইজন। শীগ্র কর দ্বিজবর তাঁদিগে স্মরণ।। এত শুনি দ্বিজ বহু স্তবন করিল। ততক্ষনে দুই চক্ষু নির্ম্মল হইল।। কূপ হইতে উঠিয়া ধরিল গুরুপদ। সন্তুষ্ট হইয়া গুরু কৈল আশীর্ব্বাদ।।