এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
ধর্ম্মিষ্ঠ আর্য্যবচসা যদগা-দরণ্যং।
ক্রোধানলে মোর অঙ্গ হইছে দহন। মনে হয় সব মারিব ব্রাম্ভণ।। পূর্ব্বে কার্ত্তবীর্য্য করিলেক দ্বিজ-ধ্বংস। দর চিরিয়া মারিলেন ভৃগুবংশ।। সেই মত দ্বিজ সব করিব সংহার। হউক এই সত্য বচন আমার।। ভূপতির বাক্য শুনি সব স্তব্ধ হইল। যত পাত্র-মিত্রগণ উত্তর না দিল।। রাজা বলে কেহ কেন না দাও উত্তর। মন্ত্রিগণ বলে শুন অহে নরবর।। কহিলা যে কার্ত্তবীর্য্য মারিল ব্রাম্ভণ। যার সমুচিত দণ্ড বিখ্যাত ভূবন।। সেই ভৃগুকুলে জাত রাম ভগবান্। ক্ষত্রিয়-শোনিতে ক্ষিতি করাইল স্নান। ক্ষত্র বলি পৃথিবীতে না রহিল আর। ব্রাম্ভণ-ঔরসে পুনঃ হইল সঞ্চার।। বচনে সৃজন করে বচনে পালন। ক্ষণেকেতে করে ভস্ম যাঁহড় নয়ন।। অগ্নি সূর্য্য কালসর্পে আছে প্রতিকার। ব্রাম্ভণের ক্রোধে রাজা নাহিক নিস্তার।। এক যুক্তি বুদ্ধিতে আইল নৃপবর। উপায় করিয়া বিপ্র-বীর্য্য হানি কর।। কুশোদকে বিপ্রের পবিত্র হয় অঙ্গ। কুশ বিনা হইবেক কর্ম্ম লণ্ডভণ্ড।। হীনতেজ হবে দ্বিজ হ'য়ে কর্ম্মহীন। পশ্চাতে হইবে দগ্ধ ধর্ম্মে হৈলে ক্ষীণ।। রাজা বলে ভাল যুক্তি কৈলে সর্ব্বজন। এমতে নাশিব দ্বিজ নিল মম মন।। এত বলি নরপতি দূতগণে আনে। আজ্ঞা করি ডাকিয়া আনিল কোড়াগণে।। সব কোড়াগণে কহে চতুর্দ্দিকে যাও। পৃথিবীর যত কুশ খুদিয়া ফেলাও।। মন্ত্রীগণ বলে রাজা এ নহে বিচার। রাজা নষ্ট করে কুশ বলিবে সংসার।। না খুদিলে মরিবেক করিব উপায়। ঘৃত দুগ্ধ গুড় মধু আনি দেহ তায়।। এইসব দ্রব্য ঢালিবেক কুশ মুলে। স্বাদে পিপীলিকা গিয়া খাইবে সকলে।। পিপীলিকা কুশ মূল কাটিয়া ফেলিব। কার্য্যসিদ্ধি হবে হিংসা কেহ না জানিবে।। শুনিয়া নৃপতি আজ্ঞা দিল ততক্ষণ। চারিভিতে চলিল যতেক দূতগণ।। রাজ্যে রাজ্যে বার্ত্তা কৈল যত অনুচরে। মরিল সকল কুশ দেশ-দেশান্তরে।। মস্তকে বন্দিয়া ব্রাম্ভণের পদরজ। কহে কাশীরাম দাস গদাধরাগ্রজ।। -----
জনমেজয়ের নিকট ব্যাসের আগমন। কুশ না মিলিল দ্বিজ হৈল চমৎকার। স্থানে স্থানে বসি সবে করেন বিচার।। এইমত করিল জানিল ব্যাসমুনি। নৃপতিরে বুঝাবারে চলিল আপনি।। ব্যাসে দেখি আনন্দিত জনমেজয় রাজা। পাদ্য অর্ঘ্য দিয়া তাঁরে করে বহু পূজা।। আনন্দিত ব্যাসমুনি বসিয়া আসনে। নৃপতিরে জিজ্ঞাসিল মধুর বচনে।। বদরিকাশ্রমে শুনিলাম সমাচার। ব্রাম্ভণ-হিংসন কর কিমত বিচার।। সর্ব্বধর্ম্মে বিজ্ঞ তুমি পণ্ডিত সুজন। তবে কেন হেন কর্ম্মে প্রবর্ত্তিলা মন।। যাঁর ক্রোধে যদুকুল হইল বিধ্বংস। যাঁর ক্রোধে নষ্ট হয় সগরের বংশ।। যাঁর ক্রোধে অনল হইল সর্ব্বভক্ষ্য। যাঁর ক্রোধে ভগ্নাঙ্গ হইল সহস্রাক্ষ।। পূর্ব্বেতে যতেক তব পিতামহগণ। যাঁরে সেবি বিজয়ী হইল ত্রিভুবন।। হেন জন সহ হিংসা কর কি কারণ। শুনিয়া বলিল রাজা নিজ নিবেদন।।