পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/৬০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫৯২ গরুড়ে দেখিয়া যথা ধায় নাগগণ । অর্জনের ভয়ে সৈন্য পলায় তেমন ॥ অশ্বথাম প্রতি বলে দ্রোণ মহাশয় । যুদ্ধেতে আমার আজি চিত্ত স্থির নয় ॥ পক্ষী সব ঘন ডাকে অতি অলক্ষণ । ধনুক হইতে উখাড়িয়া পড়ে গুণ ॥ সন্ধান পূরিতে হস্ত হৈতে পড়ে শর। প্রভাবস্ত নাহি দেখি দেব দিবাকর ॥ দুৰ্য্যোধন বাহিনীতে গৃধ্ৰু কঙ্ক বুলে । শিবাগণ ঘোর নাদ করে কুতুহলে। গগনমণ্ডল হৈতে উল্কা পড়ে খসি । স্থানে স্থানে ভস্ম বৃষ্টি হয় রাশি রাশি ॥ সকল পৃথিবী কঁপে দেখি ভয়ঙ্কর । রাহুগ্রহ অকারণে গ্রাসে দিবাকর ॥ ভীষ্মবধে অর্জুনের যে প্রতিজ্ঞা ছিল । তাহার সময় বুঝি বিধি নিয়োজিল ॥ সে কারণে এতেক উৎপাত ঘনে ঘন। এ সব দেখিয়া মম স্থির নহে মন ॥ বুঝিলাম আজি যুদ্ধ হৈল বিপরীত । যথাশক্তি-ভীষ্মের সমরে কর হিত ॥ হেনকালে কৃপ শল্য ভগদত্ত বীর । কৃতবৰ্ম্মী জয়দ্ৰথ নির্ভয় শরীর ॥ বিন্দ অনুবিন্দ চিত্ৰসেন অনুগত । দু-মুখে দুঃসহ আর মহারথী যত ॥ সমরে ধাইয়া সবে পাণ্ডবে বেড়িল । শিবাগণ যেইমত কেশরী ঘেরিল ॥ বাছিয়া বাছিয়া সবে নানা অস্ত্র মারে । - হয় হস্তী আসোয়ার সঘনে সংহারে ॥ দেখিয়া রুষিল তবে বীর বৃকোদর। গগন ছাইয়া শীঘ্র বরিষয়ে শর ॥ সবাকার অস্ত্র নিবারিয়া বৃকোদর। প্রত্যেকে সবারে বিন্ধে চোখ চোখ শর ॥ বাছিয়া বাছিয়া বীর এড়ে অস্ত্র-সব । কৃপের ধনুক কাটি করে পরাভব ॥ আর সব মহাবীর অজ্ঞান হইল । একেশ্বর ভীমসেন সবে নিবারিল ৷ প্রবৃদ্ধঘোণা ভু ভূশং কুটিলা কুটিলেক্ষণ ॥ { মহাভারত । -or-mo ক্ষণেকে চেতন পেয়ে দশ বীরবর। চারিদিকে বেড়ি মারে ভীম একেশ্বর ॥ তাহা দেখি ভীমসেনে ক্রোধ উপজিল । ধনু এড়ি গদা ল’য়ে সমরে ধাইল ॥ গদার বাড়িতে সব রথ করে চুর। ভঙ্গ দিয়া দশ বীর পলাইল দূর ॥ মহাক্রোধে বৃকোদর সৈন্তেরে সংহারে । যারে পায় তারে মারে কিছু না বিচারে। পাণ্ডব-বিক্রমে কেহ রণে নহে স্থির । রণ ত্যজি পলাইল বড় বড় বীর ॥ ভীষ্মের সহিত পার্থ প্রবত্তিয় রণ। অতুল বিক্রমে সৈন্য করেন নিধন ॥ যত অস্ত্র এড়ে ভীষ্ম কাটি ধনঞ্জয় । নিজ অস্ত্রে বিন্ধিলেন র্তাহার হৃদয় ॥ অস্ত্রের ঘাতন আর সৈন্যভঙ্গ দেখি । মহাক্রোধে অর্জনে বলিল ভীষ্ম ডাকি ॥ মহাপরাক্রমে আজি করিলা সমরে । মম সহ যুদ্ধ করি মারিলে সৈন্তেরে ॥ এখন আমার বীর্য্য দেখহ অৰ্জ্জুন । আপন রাখিতে পার তবে জানি গুণ ॥ এত বলি এড়ে বীর সহস্ৰেক শর। অৰ্দ্ধপথে ধনঞ্জয় কাটেন সত্বর ॥ দোহার উপরে দোহে নানা অস্ত্র মারে । দোহাকার অস্ত্র দোহে সমরে সংহারে ॥ কারো পরাজয় নহে সমান বিক্রম । অর্জন ভীষ্মের ধনু কাটেন বিষম ॥ চক্ষু পালটিতে ভীষ্ম আর ধনু নিল । গগন আবরি শর বর্ষণ করিল ॥ মারিল সহস্ৰ বাণ অৰ্জ্জুন উপর । চারি বাণে চারি অশ্ব করিল জর্জর ॥ আশী বাণে বিন্ধিলেন কৃষ্ণ-কলেবর । ষাটি শর মারে তবে ভীমের উপর । আর লক্ষ শর মারে সেনার উপর ॥ কোটি যোদ্ধা মারিয়া দিলেন যমঘর ॥ হেনরূপে বাণবৃষ্টি করে নিরস্তর। নিশ্বাস লইতে মাত্র নাহি অবসর ।