মতিখৰ্ব্বতরং হরিং বটুবেশধরং দেবং সর্ববেদান্ত । ماده [ মহাভারত। গান্ধারী প্রভৃতি স্ত্রীগণের যুদ্ধস্থলে গমন ও স্ব স্ব পতি পুত্রের মৃতদেহ দর্শনে খেদ । মহাভয় উপজিল দেখি রণস্থল । শকুনি গৃধিনী শিব করে কোলাহল ॥ হাতে মুণ্ড করিয়া নাচয়ে ভূতগণ । কুঙ্কর করিছে মাংস শোণিত ভক্ষণ ॥ রক্তের কর্দমে শীঘ্ৰ চলিতে না পারে। শোকাকুল নারীগণ যায় ধীরে ধীরে ॥ কেহ কেহ না পাইয়া পতি দরশন । ভূমিতে পড়িয়া তারা করয়ে ক্ৰন্দন ॥ ভ্রময়ে সমরস্থলে যত কুরুনারী । শিব শ্বান পক্ষিগণে ভয় নাহি করি ॥ অনেক যতনে কেহ নিজ পতি পায় । স্বন্ধে মুণ্ড যোড়া দিতে মহাব্যগ্র হয় ॥ দুই হস্তে ধরে কেহ পতির চরণ । বিলাপয়ে মুখে মুখ করিয়া মিলন ॥ পাসরিলে পূৰ্ব্বকার প্রেমরস যত । হাস্য পরিহাস তাহা স্মরাইব কত ॥ সমর করিতে গেলে কেমন কুক্ষণে । পুনঃ ন হইল দেখা অভাগিনী সনে ॥ হেনমতে পতি ল’য়ে অনেক সুন্দরী । বিলাপ করয়ে সবে নানামত করি ॥ তা দেখি গান্ধারী প্রাণ ধরিতে না.পারে। পতিশোকে বধূগণ কান্দে উচ্চৈঃস্বরে ॥ রণভূমি দেখি দেবী অতি ভয়ঙ্কর । কপালে কঙ্কণ মারি কান্দিল বিস্তর ॥ হেন কেহ নাহি তথা প্রবোধ করিতে । সবে শোকে অচেতন পড়িয়া ভূমিতে ৷ কেবা কোথা পড়িয়াছে নাহিক উদ্দেশ । রণভূমি দেখি দেবী লাগে ভগ্নবেশ ॥ মড়ার উপরে মড় লেখা নাহি তাঁর । গান্ধারী দেখিয়া চিত্তে লাগে চমৎকার ॥ গজবাজী পড়িয়াছে রথ বহুতর । নানা অলঙ্কার বস্ত্ৰ শস্ত্ৰ মনোহর ॥ মাথার মুকুট পড়িয়াছে রণভূমে । মকর কুণ্ডল পড়িয়াছে নানাক্রমে ॥ ধ্বজছত্র চামর পড়েছে রণস্থলী । - ডাকিনী যোগিনীগণ করে নানা কেলী ॥ স্বামী পুত্র পৌত্র আর বন্ধু সহোদর। পড়িয়া আছয়ে যক্ত মৃত্ত কলেবর ॥ দুৰ্য্যোধন অন্বেষণে বুলয়ে গান্ধারী। কতদূরে দেখে হত কুরু অধিকারী ॥ ধূলায় পড়িয়া আছে রাজা দুৰ্য্যোধন । গান্ধারী দেখিল সঙ্গে লৈয়া বধূগণ ॥ পুনঃ দরশনে দেবী অজ্ঞান হইল । গান্ধারী মরিল বলি সকলে ভাবিল ॥ পঞ্চ পাণ্ডবেতে র্তারে তুলিয়া ধরিল। শ্ৰীকৃষ্ণ সাত্যকি আদি বহু প্ৰবোধিল ॥ সম্বিত পাইয়। তবে গান্ধীর তনয় । চাহিয়া কৃষ্ণেরে বলে শোকাকুল হৈয়া ॥ দেখ কৃষ্ণ পড়িয়াছে রাজা দুৰ্য্যোধন । সঙ্গেতে নাহিক কেন কর্ণ দুঃশাসন ॥ শকুনি সঙ্গেতে কেন না দেখি রাজার । কোথা ভীষ্ম মহাশয় শান্তনুকুমার ॥ কোথা দ্রোণাচাৰ্য্য কোথ। কৃপ মহাশয় । একেল পড়িয়া কেন আমার তনয় ॥ কোথা সে কুণ্ডল কোথা মণি মুক্তাম্রজ । কোথা গেল হস্তী ঘোড়া কোথা বথধ্বজ ॥ একাদশ অক্ষৌহিণী যার সঙ্গে যায় । হেন রাজা দুৰ্য্যোধন ধূলাতে লুটায় ॥ স্ববর্ণের খাটে যার সতত শয়ন । হেন তনু ধূলার উপরে নারায়ণ ॥ জাতি যুতী পুষ্প আর চাপ নাগেশ্বর। বকুল মালতী আর মল্লিকা স্বন্দর ॥ এ সকল পুষ্পে পুত্র থাকিতে শুইয়া । হেন তনু লোটে ভুমে দেখহ চাহিয়া ॥ অগুরু চন্দন গন্ধ কুঙ্কুম কস্তুরী । লেপন করিতে সদা অঙ্গের উপরি ॥ শোণিতে সে তনু আজি হুইল শোভন । আহা মরি কোথা গেল রাজা দুৰ্য্যোধন ॥ ত্যজহ আলস্য কেন না দেহ উত্তর । যুদ্ধ হেতু তোমারে ডাকিছে বৃকোদর ॥
পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/৭৩০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।