পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ত্রিভঙ্গস্থান সংস্থানাং মহিষাসুর-মর্দ্দিনীং।

 বৃষপর্ব্ব চাহি শুক্র বলিল বিশেষ।
 অন্য দেশে যাব ত্যাজি তোমার এ দেশ।।
 পাপী দুরাচার যেই হিংসা করে লোকে।
 পুণ্যবান জন তার নিকটে না থাকে।।
 জানিয়া শুনিয়া পাপ করে যেই জন।
 অনুরূপ দুঃখ পায় না যায় খণ্ডন।।
 তারে না ফলিলে তার পুত্র-পৌত্রে ফলে।
 ব্যার্থ নাহি হয় হেন বিধি বেদে বলে।।
 ব্রাম্ভণের শ্রেষ্ঠ বৃহষ্পতির নন্দন।
 পুনঃ পুনঃ তারে তুই করিলি নিধন।।
 মম কন্যা দেবযাজী প্রাণের সমান।
 কূপে ফেলাইলি তাহে নিধন বিধান।।
 নারীবধ ব্রম্ভবধ কৈলি বারে বার।
 সহজে অসুর তুই দুষ্ট দুরাচার।।
 থাকিলে পাপীর কাছে নিত্য পাপ বাড়ে।
 সেকারণে সাধুজন পাপী সঙ্গ ছাড়ে।।
 এত বলি ভৃগুসূত চলিল সত্বর।
 পায়ে ধরি বসাইয়া বলে দৈত্যেশ্বর।।
 অধম পাপিষ্ঠ আমি বড় দুরাচার।
 আপনার গুণে প্রভূ কর প্রতিকার।।
 নিসচয় গোঁসাই যদি ছাড়ি যাবে মোরে।
 গোষ্ঠীর সহিত আমি পশিব সাগরে।।
 শুক্র বলে তুমি গিয়া প্রবেশ সাগরে।
 শরীর ত্যাজহ কিংবা যাও দেশান্তরে।।
 প্রেণের সদৃশ হয় আমার  কুমারী।
 তাহার অপ্রিয় আমি করিবারে নারি।।
 ইহাতে যদ্যপি ক্ষমা করে দেবযানী।
 তবে ক্ষান্ত হই আমি শুন দৈত্যমণি।।
 এত শুনি দৈত্যরাজ বিনয় করিয়া।
 কহে দেবযানীর অগ্রেতে দাঁড়াইয়া।।
 হইল কুকর্ম্ম মম ক্ষম অপরাধ।
 আমারে সদয় হও করহ প্রসাদ।।
 দেবযানী বলে রাজা বুঝহ অন্তরে।
 তবে সে প্রসন্ন আমি হইব তোমারে।।
 শর্মিষ্ঠা তোমার কন্যা বড়ই দুর্ভাষী।
 পরিবার সহ মোরে করি দেহ দাসী।।
 এত শুনি দৈত্যরাজ কৈল অঙ্গীকার।
 এইক্ষণে আনি অগ্রে দিব ত' তোমার।।
 এত বলি ধাত্রী পাঠাইল অন্তঃপুরে।
 শর্মিষ্ঠারে বার্ত্তা ধাত্রী কহিল সত্বরে।।
 ক্রোধ করি শুক্র যায় নগর ত্যাজিয়া।
 সে কারণে রাজা মোরে দিল পাঠাইয়া।।
 না মানে পবোধ কারো ভৃগুর নন্দন।
 কেবল তাহার ক্রোধ তোমার কারণ।।
 অতএব শীধ্র তুমি চল তথাকারে।
 তোমালে লইতে রাজা পাঠাইল মোরে।।
 কন্যা বলে যাহে হবে জ্ঞাতির কুশল।
 প্রবোধিয়া শুক্রাচার্য্যে করিব নিশ্চল।।
 এত বলি কন্যা যায় ধাত্রীর সংহতি।
 যথায় আছেন পিতা দৈত্য অধিপতি।।
 সহস্রেক দাসী সঙ্গে চড়ি চতুর্দ্দোলে।
 পিতার সম্মুখে গিয়া দাঁড়াইল তলে।।
 বৃষপর্ব্ব বলে কন্যা দৈবের লিখন।
 দেবযানী কাছে তুমি থাক দাসীপণ।।
 শর্মিষ্ঠা বলেন পিতঃযে আজ্ঞ তোমার।
 হইলাম দাসী আমি কর্ম্মে আপনার।।
 এত শুনি উত্তর করিলা দেবযানী।
 কিমতে হইবে দাসী তুমি ঠাকুরানী।।
 হেন জন তুমি দাসী হইবে কেমনে।
 শুনিয়া উত্তর কন্যা দিল ততক্ষণে।।
 জ্ঞাতির কুশল আর পিতার বচন।
 দুই ধর্ম্ম রাখিতে করিনু দাসীপণ।।
 ইহাতে আমার লজ্জা তিলেক না হবে।
 তথাচ রাজার কন্যা সবাই বলিবে।।
 পরে শুক্র দেবযানী গেল নিজ ঘর।
 সঙ্গেতে শর্মিষ্ঠা গেল সহ সহচর।।
 আদিপর্ব্বে হয় দেবযানীর আখ্যান।
 কাশীদাস বলে সব অমৃত-সমান।।
      -------
     দেবযানীর বিবাহ
   হেনমতে নানারঙ্গে বঞ্চে দেবযানী।
 দাসীভাবে সেবে তারে দৈত্যের নন্দিনী।।