এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
ঘণ্টাং বা পরশুং বাপি বামেহধঃ প্রতিযোজয়েৎ।।
তোর বংশে রাজা না হইবে কোনকালে। জ্যেষ্ঠ পুত্র হৈয়া তুমি কুপুত্র হইলে।। তাহার অনুজ নাম তুর্ব্বসু সুন্দর। তাহারে আনিয়া জিজ্ঞাসিল নৃপবর।। শুক্রশাপে জরা হৈল না হৈল খণ্ডন। জরা ল'য়ে দেহ পুত্র আপন যৌবন।। এ ভীষণ লহ জরা সহস্র বৎসর। আমার বচন রাখ উপকার কর।। তুর্ব্বসু বলিল জরা পিতা বড় দুঃখ। আচারে বর্জ্জিত যত সংসারের সুখ।। এ জরা লইতে আমি অপারগ অতি। শুনিয়া কুপিত অতি হইল নৃপতি।। পুত্র হ'য়ে পিতা বাক্যে কর অনাদর। এই পাপে ম্লেচ্ছ দেশে হবে দণ্ডধর।। তব বংশে যতেক হইবে পুত্রগণ। মূর্খ হ'য়ে করিবেক অভক্ষ্য ভক্ষণ।। দেবযানী দুই পুত্র না শুনিল বাণী। শর্ম্মিষ্ঠার পুত্রগণে ডাকিল আপনি।। শর্ম্মিষ্ঠার জ্যেষ্ঠ পুত্র দ্রুহ্য নাম ধরে। মধুর বচনে রাজা বলিল তাহারে।। মম জরা লহ তুমি সহস্র বৎসর। পাপ জরা দিয়া লব যুবা কলেবর।। দ্রুহ্য বলে রাজা জরা বহু দোষ ধরে। অন্য কার্য্য থাক তার বাক্য নাহি স্ফুরে।। না পারিব সহিতে সে জরার যন্ত্রণা। অন্যেরে করহ আজ্ঞা লয় যেই জনা।। শুনিয়া যযাতি ক্রোধে বলিল তখন। পুত্র হৈয়া পিতৃবাক্য করিলা লঙ্ঘন।। চারি জাতি ভেদ না থাকিবে যেই দেশে। সেই দেশে রাজা হবে তোমার ঔরসে।। যতেক করিবে আশা হইবে নিরাশ। কভূ পূর্ণ না হইবে তব অভিলাষ।। অণু বলি পুত্র তার কনিষ্ঠ সোদর। তাহারে ডাকিয়া তবে বলে নৃপবর।। মম জরা লহ বাপু কর পুত্রকাজ। শুনিয়া বলিল অণু শুন মহারাজ।। যে কিছু খাইলে জীর্ণ না হয় উদরে। হেন জরা লৈতে পিতা না বল আমারে।। রাজা বলে তুমি পুত্র বড় দুরাচার। পুত্র হৈয়া বাক্যে তুমি লঙ্ঘিলা আমার।। যতেক জরার দুঃখ কহিলা আপনে। সেই সব দুঃখ তুমি ভুঞ্জ অনুক্ষ্ণণে।। তোমার ঔরসে পুত্র যতেক হইবে। যৌবনকালেতে তারা সবাই মরিবে।। তবেত নৃপতি বড় হইল চিন্তিত। সবার কনিষ্ঠ পুত্রে ডাকিল ত্বরিত।। সবা হৈতে প্রিয় তুমি কনিষ্ঠ নন্দন। প্রিয় কর্ম্ম কর, রাখ আমার বচন।। শুক্রশাপে জরা হৈল আমার শরীরে। তৃপ্তি নাহি পাই সুখে জানাই তোমারে।। পুত্রধর্ম্ম কর, দেহ আপন যৌবন। সহস্র বৎসর পরে পাইবে আপন।। মম জরা দুঃখ বাছা লহ নিজ কায়। স্বীকার করিলে তুমি মম দুঃখ যায়।। পিতার বচন শুনি কহে যোড়করে। তোমার বচনে রাজা কে লঙ্ঘিতে পারে।। পুত্র হৈয়া পিতৃবাক্য না রাখে যে জন। ইহলোকে অপযশ নরকে গমন।। তব জরা দেহ পিতা আমার শরীরে। আমার যৌবন ভোগ ভুঞ্জ কলেবরে।। এতেক শুনিয়া রাজা হরষিত মন। মুখে চুম্ব দিয়া পুত্রে বলেন বচন।। বংশবৃদ্ধি হবে তব ধর্মেতে তৎপর। তোমার বংশেতে হবে রাজ্যের ঈশ্বর।। যৌবন পাইয়া তবে যযাতি রাজন। ধর্ম্মকর্ম্ম করে সদা সুখে অনুক্ষণ।। যজ্ঞ হোমে তুষ্ট কৈল যত দেবগণে। পিতৃগণে তুষ্ট কৈল শ্রাদ্ধাদি তর্পণে।। দানেতে তুষিল দ্বিজ দরিদ্র ভিক্ষুক। সুপালনে প্রজাগণে দিল বড় সুখ। অভ্যাগত অতিথি তুষিল নৃপবর। প্রতাপে নাহিক দুষ্ট রাজ্যের ভিতর।।