এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
কিঞ্চিদূর্দ্ধং তথা বাম-মঙ্গুষ্ঠং মহিষোপরি ।
কোন জাতি হওতুমি কোথা তব ধাম। কাহার নন্দিনী তুমি কি তোমার নাম।। কন্যা বলে আমি দাস রাজের দুহিতা। ধর্ম্মার্থে বহিতা নৌকা আজ্ঞা দিল পিতা।। শুনি পরিচয় রাজা গেল শীঘ্রগতি। যথায় মৎস্য জীবী দাসের বসতি।। রাজা হেরি করযোড়ে দাস রাজা কয়। কি হেতু আইলে আজ্ঞা কর মহাশয়।। কন্যা তরে আমি আসি শুন তব স্থান। তব কন্যা কর তুমি মোরে আজি দান।। দাস কহে সত্য কর ধর্ম্মার্থে লইবে। কন্যার গর্ভেতে যবে সন্তান হইবে।। সেই জনে দিবে তুনি রাজ্য অধিকার। তবে আমি দিতে পারি কন্যা রত্ন সার।। দেবব্রত মুখ চাহি রাজা এল ঘরে। হেন সত্য বদ্ধ হতে রাজা নাহি পারে।। কন্যা দেখি সেই দিন হইতে রাজন। স্নানাহার ছাড়ি রাজা রয় বিস্মরণ।। পিতার ঘটনা সব করিয়া শ্রবণ। দেবব্রত গেল রথে দাস রাজা স্থানে।। দেবব্রত বলে রাজা তুমি ভাগ্যবান। আমার পিতারে তুমি কন্যা দেহ দান।।
------
মৎস্যগন্ধার উৎপত্তি।
দ্বাপর যুগেতে রাজা নামে পরিচর। সত্যশীল ধর্ম্মবন্ত তপেতে তৎপর।। সকল ত্যাজিয়া রাজা ধর্ম্মে দিল মন।। কঠিন তপস্যা বনে করে অনুক্ষণ।। কভু ফল মূল খায় কভু অম্বু পান। শিরে জটা বৃক্ষের বল্কল পরিধান।। কখন গলিত পত্র কভু বাতাহার। বৎসরেক নৃপতি করিল অনাহার।। গ্রীষ্মকালে চতুর্দ্দিকে জ্বালিয়া আগুন। উর্দ্ধপাদে তার মধ্যে রহিল রাজন্।। হেনমতে তপ করে সহস্র বৎসর। তাঁর তপ দেখিয়া ত্রাসিত পুরন্দর।। ঐরাবতে চড়িয়া চলিল দেবরাজ। যথা তপ করে রাজা অরণ্যের মাঝ।। ডাক দিয়া বলে ইন্দ্র শুন নৃপবর। দেখিয়া তোমার তপ সবে পায় ডর।। নিবর্ত্ত কঠোর তপ না কর রাজন। এত বলি ইন্দ্র দিল দিব্য আভরণ।। বৈজয়ন্তী মালা নৃপতির গলে দিল। ছত্রদণ্ড দিল আর শ্রবণ-কুণ্ডল।। চেদি নামে রাজ্যে করি অভিষেক তাঁরে। রাজা করি দেবরাজ গেল নজপুরে।। চেদিরাজ্যে নৃপতি হুইল পরিচয়। নানাবিধ যজ্ঞ দান করে নিরন্তর।। অযোনিসম্ভবা কন্যা পর্ব্বতে পাইল। পরমা সুন্দরী দেখি বিবাহ করিল।। ঋতুস্নান করিল সে রাজ পাটেশ্বরী। পবিত্র হইল তবে স্নান দান করি।। সেইদিন পিতৃলোক কহিল রাজায়। মৃগমাংসে শ্রাদ্ধ আজি কর মহাশয়।। পিতৃগণ আজ্ঞা পেয়ে রাজা পরিচর। মৃগয়া করিতে গেল অরণ্য ভিতর।। মহাবনে প্রবেশিল মৃগ অন্বেষণে। ঋতুমতী ভার্য্যা তাঁর প'ড়ে গেল মনে।। মৃগয়া করয়ে রাজা নাহি তাহে মন। ঋতুমতী ভার্য্যা মনে হয়ত স্মরণ।। কাম হেতু তাঁর বীর্য্য হইল স্খলিত। দেখিয়া নৃপতি চিত্তে হইল চিন্তিত।। করেতে সঞ্চান পক্ষী আছিল রাজার। পত্রে করি বীর্য্য দিল স্থানেতে তাহার।। এই বীর্য্য লইয়া দিবে পাটেশ্বরী স্থানে। এত বলি নরপতি পঠায় সঞ্চানে।। চলিল সঞ্চান পাখী রাজার আজ্ঞাতে। আর এক সঞ্চান দেখিল শূণ্যপথে।। ভক্ষ্যদ্রব্য বলিয়া তাহারে ছোঁ মারিল। অন্তরীক্ষে যুগল সঞ্চানে যুদ্ধ হৈল।। সঞ্চানের নিকট হইতে সেইকালে। পতিত হইল রেতঃ যমুনার জলে।।