পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/৯০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্গারোহণপৰ্ব্ব । ] দেখি কোপে আর শৃঙ্গ মারে বৃকোদর। লুফিয়া রাক্ষসী ধরে পর্বত শিখর ॥ রক্তাক্ষি রাক্ষসী কোপে চাহে চারিপাশে । বড় বৃক্ষ ভাঙ্গে তার নাসার নিশ্বাসে ॥ " ভীমের সাক্ষাতে শবদ করে ভয়ঙ্কর । দেবাস্থর কম্পমান সিন্ধু ধরাধর ॥ রক্ষসীর ঘোর শব্দ ঘন হুহুঙ্কার । কোপে থর থর অঙ্গ পবনকুমার ॥ উপাড়িল সেই বৃক্ষ দিয়া এক টান । পদভরে পর্বত হইল কম্পবান ॥ ভীম বলে নিশাচরী দেখ এই বৃক্ষ । বজসম প্রহারে ভাঙ্গিব তোর বক্ষ ॥ এত বলি হাতে গাছ আসে বায়ুবেগে । রাক্ষসী কাটিয়া পাড়ে দশনের আগে ॥ ন মরে রাক্ষসী সেই নাহি ছাড়ে পথ । দেখি ধৰ্ম্ম চিন্তিত হলেন মনোগত ॥ বীর বৃকোদর পুনঃ গোবিন্দ ভাবিয়া । হররাজ পৰ্ব্বত আনিল টান দিয়া ॥ ভীম বলে নিশাচরা শুন রে ভীষণ । মনে না করিহ আর বঁচিতে কামনা ॥ মুনি ঋষি খেয়ে তোর বেড়েছে বাসন । আজি যুদ্ধে দেখাইব যমের যাতন ॥ এত বলি দুই হাতে পৰ্ব্বত ধরিয়া । রাক্ষসীরে প্রহারিল হুঙ্কার ছাড়িয় ॥ আইসে পৰ্ব্বত দেখি গগনের পথে । লাফ দিয়া রাক্ষসী ধরিল বাম হাতে ॥ বলবতী নিশাচরী শঙ্করের বরে । ফেলাইয়৷ দিল গিরি দক্ষিণ সাগরে ॥ দেখিয়া বিস্ময়াপন্ন হৈল ভীমবার। কি হবে উপায় চিন্তিলেন যুধিষ্ঠির ॥ তবে বৃকোদর বীর বিষন্ন বদনে । ব্যাকুল হইল বীর রাক্ষসীর রণে ॥ নাহি মরে নিশাচরী নাহি ছাড়ে পথ । মুখ মেলি গ্রাসে যেন আদিত্যের রথ ॥ মনে ভাবি ভীমসেন হইল বিস্ময় । জনক পবনে চিন্তে সঙ্কট সময় ॥ ইন্দ্রশক্তিঃ সমাখ্যাত৷ ইন্দ্রাণীরূপমূস্থিত l هسbسb পুত্রে পার কর পথে পিতা প্রভঞ্জন । তোমার প্রসাদে তবে দেখি নারায়ণ ॥ এত বলি বৃকোদর ডাকিল পবনে । ডাক দিয়া পবন বলিল ভীমসেনে ॥ শুন পুত্র বৃকোদর না হও ভাবিত । কি কার্য্য তোমার রণে করিব বিহিত ॥ জোড়হাতে বলে ভীম বন্দিয়া চরণ । রাক্ষসী মারিলে হয় স্বৰ্গ আরোহণ ॥ এই কৰ্ম্ম কর পিতা হর তার বল । ঘুষিবে তোমার যশ অবনীমণ্ডল ॥ এত শুনি হাসিয়া বলিলেন পবন । তব তেজঃ হৌক পুত্র আমার সমান ॥ বাহুবলে রাক্ষসীরে করহ সংহার। বহু মুখে হরপুরে কর আগুসার ॥ বৃক্ষ ল’য়ে বৃকোদর মারে মালপাট । চালাইয়া দিল বৃক্ষ নাসিকার বাট ॥ রাক্ষসী নিস্তেজ হ’ল ভীমের প্রহারে । লোটাইয় পড়ে ভূমে ছটফট করে ॥ দেখিয়া হইল ভীম প্রফুল্ল অন্তর। লম্ফ দিয়া উঠিলেন বুকের উপর ॥ নাসাপথে উঠে বৃক্ষ ভেদি তার মুণ্ড । হস্ত পদ চিরিয়া করিল খণ্ড খণ্ড ! আকর্ষণ করি করে উপাড়িল স্তন । বজ্র কিলে ভাঙ্গিলেন দুপাটি দশন ॥ মস্তক ঢুকায় তার পেটের ভিতরে । গল চাপি ধরিয়া বধিল রাক্ষসীরে ॥ মাংসপিণ্ড সম কৈল কচ্ছপের হেন । পুৰ্ব্বেতে কীচক বীর বিনাশিল যেন ॥ কুষ্মাণ্ড সমান কৈল রাক্ষসীর কায় । মহাক্রোধে পদাঘাত মরিলেক তায় ॥ ঘোর শব্দ করিয়া মরিল নিশাচরী । আনন্দিত বৃকোদর বিক্রমে কেশরী ॥ অন্তরীক্ষে তুলে তারে বৃক্ষ জড়াইয়া । ঘন পাক দিয়া ফেলে ভুমে আছাড়িয় ॥ দেবাক্ষর নাগ নর দেখি বিদ্যমান । গন্ধমাদনেরে যেন লুফে হনুমান ॥