“No o বিচিত্র নগর ঘর অতি মনোরম ৷ কন্যাগণ আসে নিত্য শিবের আশ্রম ॥ শুক্ল বস্ত্র পরিধান চন্দ্র সম কান্তি । রূপ দেখি মুনিগণ মনে হয় ভ্রান্তি ॥ নানা অলঙ্কারে শোভা ত্ৰৈলোক্য-মোহিনী । মুখপদ্ম করপদ্ম সকল পদ্মিনী ॥ বিচিত্র চম্পক দাম শোভিত গলায় । কেহ কেহ নৃত্য করে কেহ গীত গায় ॥ যুধিষ্ঠির নৃপতি আসেন এই পথে । পাদ্য অর্ঘ্য ল’য়ে আসে র্তাহার সাক্ষাতে ॥ ঋষি মুনিগণ শুনি ধৰ্ম্মের প্রয়াণ । দেখিতে আইল সবে আনন্দ বিধান ॥ পৃথিবীর রাজা হেথ এল পুণ্যভাগে । ঝটিতি আসিল সবে যুধিষ্ঠির আগে ॥ দেব ঋষিগণ আসি করেন সন্তাষ । অন্ধকার ঘুচে গেল হইল প্রকাশ ॥ প্রণাম করেন রাজা মুনি ঋষিগণে । নৃপতিরে আশীৰ্ব্বাদ কৈল সৰ্ব্বজনে ॥ শোভা পায় পৰ্ব্বতে বৈতরণী সরিত। অতি অপরূপ তীর নীর সুললিত ॥ পৰ্ব্বতে বেষ্টিত জল অতি স্থশোভন । অষ্টাশী তপস্বী তপ করে অনুক্ষণ ॥ ক্রীড়া করে জলেতে বিবিধ জলচর । সুন্দর কনক পদ্ম ফুটে নিরন্তর ॥ অষ্টাশী সহস্ৰ ঋষি দেখি অনুপম । ঘোড়হাতে নরপতি করেন প্রণাম ॥ যুধিষ্ঠিরে দেখিয় প্রশংসে মুনিগণ । ধন্য ধন্য রাজা তুমি হরিপরায়ণ ॥ এই বৈতরণী নদী পরম নিৰ্ম্মল । উত্তর হইতে বহে দক্ষিণ মণ্ডল ॥ দক্ষিণ শমনপুরে প্রলয় তরঙ্গ । পাপী পার হৈতে নারে দেখি দেয় ভঙ্গ ॥ মর্ত্যেতে গো দান করে যেই পুণ্যজনে। সুখে পার হৈয়া যায় নৌকা আরোহণে ॥ ভূপতি বলেন আমি পাপী নরাধম। মুনিগণ বলে তুমি মহাপুণ্যতম ৷ দাসীং, রূপাখ্যিকাং মঞ্জরিকাং ভজাম্যহং ॥ | | | | | [ মহাভারত । এত বলি মুনিগণ কৈবর্ত ডাকিয় । নৃপতিরে পার কৈল নৌকা আরোহিয়া ॥ ঋষিগণে বন্দি রাজা নদী হৈয়া পার । পুণ্য হেতু দেখিলেন স্বগের দুয়ার ॥ চন্দ্র সূৰ্য্য দেবগণ দেখেন প্রত্যেক। স্বৰ্গ আরোহণ হৈতে আছে যোজনেক । পার হৈয়া বৃক্ষতলে বসি নরেশ্বর । স্বৰ্গ দেখি হইলেন চিন্তিত অন্তর ॥ অদ্ভুত স্বর্গের দ্বার দেখি বিদ্যমান । নানা ঋতু বিরাজিত প্রবাল পাষাণ ॥ হাতে অস্ত্র দ্বারপাল চৌদিকে বেষ্টিত। কত লক্ষ পুণ্যবান হয়েছে বারিত ॥ ইন্দ্র আজ্ঞা বিনা দ্বারী দ্বার নাহি ছাড়ে । বুকে বুকে দাণ্ডাইয়া আছে করযোড়ে । যুধিষ্ঠিরে দেখিয়া লইল আগুসারি। দ্বারপালগণ কহে কর যোড় করি ॥ তোমার জনক পূর্বে পাণ্ডু নরপতি । মৃগঋষি শাপে তার না হৈল সন্ততি ॥ বিমুখ হইয়া রাজ সংসারের স্বথে । কুন্তী মাদ্রী ভাৰ্য্যা সহ আইল হেথাকে ॥ অপুত্ৰক হেতু ইন্দ্র আজ্ঞা নাহি দিল । হেথা হৈতে পুনঃ তিনি মর্ত্যপুরে গেল ! দেব হৈতে জন্ম হৈল তোম পঞ্চভাই। পুত্রবান হইয়া বৈকুণ্ঠে পায় ঠাই ॥ র্তার ক্ষেত্রে জন্ম তব, ধৰ্ম্মের ঔরসে । তুমি মহা ধৰ্ম্মশীল জানি সবিশেষে ॥ মুহুর্তেকে বৈস রাজা শূন্য সিংহাসনে । ইন্দ্রে জানাইয়া স্বগে লব এইক্ষণে ॥ দ্বারপাল গিয়া বার্তা দিল পুরন্দরে । যুধিষ্ঠির আইলেন স্বর্গের দুয়ারে ॥ শুনিয়া দেবতা সবে কহে ইন্দ্র প্রতি । রথে করি যুধিষ্ঠিরে আন শীঘ্ৰগতি । এত শুনি দেবরাজ বিপ্ররূপ ধরি । যুধিষ্ঠিরে ছলিবারে এল শীঘ্ৰ করি ॥ ব্রাহ্মণ দেখিয়া রাজা করেন প্রণতি । আশীৰ্ব্বাদ করিলেন কপট দ্বিজাতি ॥
পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/৯১৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।