এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
চিত্তয়েৎ রজত্ং দেবীং ধর্ম্ম কামার্থমোক্ষদাং।।
আমার বচন মাতা জানহ আপনে। অঙ্গীকার করিলাম তোমার কারণে।। ত্রিভুবন কেহ যদি দেয় অধিকার। তথাপি না লব আমি রাজ্য অধিকার।। যাবৎ শরীরে মম আছয়ে পরাণ। না ছুঁইবে নারী সত্য নহে মম আন।। দিনকর ত্যাজে তেজ, চন্দ্র শীত ত্যাজে। ধর্ম্ম সত্য ত্যাজে পরাক্রম দেবরাজে।। ত্যাজিবারে পারয়ে এ সব কদাচন। তবু সত্য নাহি ত্যাজে গঙ্গার নন্দন।। সত্যবতী বলে পুত্র আমি সব জানি। তোমার মহিমা গুণ কহে সুর মুনি।। আমার বিবাহে যে করিলা অঙ্গীকার। সকল জানি যে আমি প্রতিজ্ঞা তোমার।। তথাপি বিপদে ত্রাণ কর কোনমতে। আপনি উপায় কর কুলধর্ম্ম হ'তে।। বিপদে দেবতা পুছে বৃহষ্পতির-স্থানে। দৈত্যগণ যুক্তি পুছে ভৃগুর নন্দনে।। তোমা বিনা আমি জজ্ঞাসিব কার কাছে। যেমত জানহ কর যাহে বংশ বাঁচে।। দৈব বিধি ধর্ম্ম পুত্র তোমাতে গোচর। অবিরোধে ধর্ম্ম পুত্র বংশ রক্ষা কর।। এত বলি সত্যবতী করয়ে ক্রন্দন। নিবর্ত্তিয়া পুনঃ বলে গঙ্গার নন্দন।। ক্ষত্রিয় হইয়া যেই প্রতিজ্ঞা না পালে। অপযশ ঘোষে তার এ মহীমণ্ডলে।। কুরুবংশ রক্ষা হেতু করিব বিধান। পূর্ব্বাপর আছে কহি কর অবধান।। জামদগ্নি সুত রাম পিতার কারণে। দশ শত ভুজধর মারিল অর্জ্জুনে।। প্রতিজ্ঞা করিয়া ক্ষত্র করিল সংহার। নিঃক্ষত্র করিল ক্ষিতি তিন সপ্তবার।। ক্ষত্র আর না রহিল পৃথিবী ভিতর। যত ক্ষত্রনারী প্রবেশিল বিপ্রঘর।। বেদেতে পারগ সেই পবিত্র ব্রাম্ভণ। তাঁহার ঔরসে বংশ করিল রক্ষণ।। ক্ষত্রক্ষেত্রে জন্ম হৈল ব্রাম্ভণ ঔরসে। যার ক্ষেত্র তার সুত বেদে হেন ভাষে।। বিপ্র হৈতে ক্ষত্রজন্ম আছে পূর্ব্বাপর। অদূষিত কর্ম্ম এই ধর্ম্মের উত্তর।। আর পূর্বকথা মাতা কহিব তোমারে। উতথ্য নামেত ঋষি বিখ্যাত সংসারে।। তাহার কনিষ্ঠ দেবগুরু বৃহষ্পতি। মমতা নামেতে কন্যা উতথ্য যুবতী।। কামেতে পীড়িত হৈয়া ধরে বৃহষ্পতি। মমতা ডাকিয়া বলে বৃহষ্পতি প্রতি।। ক্ষমা কর এই নহে রমণ সময়। মম গর্ভে আছে তব ভ্রাতার তনয়।। অক্ষয় তোমার বীর্য্য হইবে সন্ততি। দুই পুত্র ধরিবারে নাহিক শকতি।। নিবৃত্ত নিবৃত্ত তুমি নহে সুবিচার। পরম পণ্ডিত আছে গর্ভেতে আমার।। গর্ভেতে ষড়ঙ্গ বেদ করে অধ্যয়ন। নিবর্ত্তহ বৃহষ্পতি ইহার কারণ।। কামেতে পীড়িত গুরু না করি বিচার। নিষেধ না শুনি তারে করিল শৃঙ্গার।। উতথ্য-নন্দন যেই গর্ভেতে আছিল। বৃহষ্পতি প্রতি সেই ডাকিয়া বলিল।। অনুচিত কর্ম্ম তাত কর কি বিধান। তব বীর্য্য রাখিবারে নাহি হেথা স্থান।। সঙ্কীর্ণেতে রহিবারে নাহি স্থান ইথে। মোর পীড়া হইবে তোমার বীর্য্যেতে।। না শুনিল বৃহষ্পতি তাহার বচন। কামেতে হইয়া রত করিল রমণ।। এতেক দেখিয়া তবে উতথ্য-কুমার। যুগল চরণে বন্ধ কৈল রেত'দ্ধার।। পড়িল জীবের বীর্য্য না পাইয়া স্থল। দেখি ক্রোধে গুরু হইল জ্বলন্ত অনল।। মম বীর্য্য ঠেলিয়া ফেলিলা ভুমিতলে। দিনু শাপ হও অন্ধ নয়ন যুগলে।। অন্ধ হৈয়া জন্ম হৈল উতথ্য-নন্দন। সৌরভি-বংশেতে তেঁই কৈল অধ্যয়ন।।