এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
দুর্গোত্তারিণি দুর্গে তং সর্ব্বাশুভ-নিবারিণী।।
মাণ্ডব্যেরে শূলে দিল চোরের সহিতে। চিরদিন আছে মুনি বসিয়া শূলেতে।। একদিন মুনিগণ দেখিল তাহারে। দেখিয়া পুরম চিন্তা হৈল সবাকারে।। মুনিগণ মিলি তবে সে শূল ধরিল। অনেক যতনে উপাড়িতে না পারিল।। জিজ্ঞাসিল মুনিগণ মাণ্ডব্যের প্রতি। কোন পাপে মুনি তব এতেক দুর্গতি।। মাণ্ডব্য বলিল আমি বহুপাপকারী। কোন পাপে হেন শাস্তি বলিতে না পারি।। মুনিগণ কথা তবে শুনিল ভূপতি। শূলেতে আছয়ে মুনি রাজা ভীত অতি।। স্বকুটুম্ব সহ রাজা আসে শীগ্রগতি। অশেষ বিশেষ করে মুনিবরে স্তুতি।। রাজা তারে বিহুবিধ করিল বিনয়। দয়া করি মুনিরাজ হইল সদয়।। তবে নরপতি সেই শূল উপাড়িল। মুনি অঙ্গ হৈতে শূল কাড়িতে লাগিল।। অনেক যতনে শূল নহিল বাহির। দেখিয়া বিস্ময়চিত্ত হৈল নৃপতির।। বাহিরে যতেক ছিল কাটিয়া ফেলিল। ভিতরে যে কিছু ছিল ভিতরে রহিল।। তথাপি ও দুঃখ মনে নাহিক মুনির। নাহিক বেদনা চিত্তে প্রফুল্ল শরীর।। মুনিগর্ভে শূল রহে দেখি যত লোকে। সেই হইতে মাণ্ডব্য নাম তার রাখে।। একদিন মুনিবর ভাবিল অন্তরে। কোন পাপে ধর্ম্ম শাস্তি দিলেন আমারে।। তবে মুনিবর গেল ধর্ম্মের সদন। কহিল তাঁহারে সব নিজ বিবরণ।। কহ ধর্ম্মরাজ মোরে কারণ ইহার। কোন দোষে হেন শাস্তি করিলা আমার।। ধর্ম্মরাজ বলে তুমি বালক বয়সে। বালক সহিত ছিলা বাল্যক্রীড়া রসে।। একদিত তুমি ক্ষুদ্র পতঙ্গ ধরিলা। ঈষীকাতে তার গুহ্যে শূল তুমি দিলা।। এত শুনি মহাক্রোধে বলে তপোধন। মম তপোবল আমি দেখাই এখন।। অল্পদোষে হেন শাস্তি এ তব বিচার। তাহাতে বালকবুদ্ধি কি জ্ঞান আমার।। বাল্যকালে অল্প দোষে এ দণ্ড তোমার। এমত করিলে তবে মজিবে সংসার।। পাঁচবর্ষ পর্য্যন্ত যতেক করে পাপ। তোমার সদনে তার নাহিক সন্তাপ।। এই হেতু নরলোকে শূদ্র যোনি মাঝ। অবশ্য লভিবে জন্ম শুন ধর্ম্ম রাজ।। এত বলি মুনিরাজ চলিলা আশ্রম। তাঁর শাপে শূদ্রযোনি পাইলেক যম।। পরম পণ্ডিতবুদ্ধি ধর্ম্মের আচার। কুরুতে বিদুর-রূপে যম অবতার।। হেনমতে কুরুবংশে তিন পুত্র হৈল। অহর্নিশি নানা দান নানা যজ্ঞ কৈল।। তিন পুত্রে ভীষ্মবর করিল পালন। নানা অস্ত্র শস্ত্র বিদ্যা করান পঠন।। কতদিনে দেখি সবে যৌবন সময়। বিবাহ কারণে চিন্তে গঙ্গার তনয়।। যদুবংশে সুবল নামেতে নৃপমনি। গান্ধারী নামেতে কন্যা তাঁহার নন্দিনী।। ভগবানে আরাধিয়া পায় কন্যা বর। একশত পুত্র হবে মহাবলধর।। বার্ত্তা পেয়ে ভীষ্মবীর দূত পাঠাইল। সুবল রাজারে দূত সকল কহিল।। বিচিত্রবীর্য্যের পুত্র ধৃতরাষ্ট্র নাম। কুরুতে বিখ্যাত বীর রূপে অনুপম।। তার হেতু বরিবারে তোমার কুমারী। ভীষ্মবীর পাঠাইল মোরে শীঘ্র করি।। শুনিয়া গান্ধার রাজা ভাবে মনে মনে। কুরুকুল মহাবংশ বিখ্যাত ভুবনে।। সকল সম্পন্ন দেখি অন্ধমাত্র বর। না দিলে বিরস হবে ভীষ্ম কুরুবর।। হস্তী হয় রথ রত্ন শকটে পূরিয়া। দাস দাসী গো মহিষ বিপুল করিয়া।।