এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কাহাকে?

করিতে পারিলে তাহার হাতের নুন মসলাটা নিজের হাতে করিয়া হাঁড়িতে ফেলিবার মহানন্দলাভও অদৃষ্টে ঘটিত। এই রূপে রান্নাঘরে কতদিন যে হাত পা পুড়াইয়াছি তাহার ঠিক নাই। হইলে কি হয়,—আমার বিশ্বাস ছিল অন্ন ব্যঞ্জনে আমি কাটি দিলেই বাবার পক্ষে তাহ সুখাদ্য হইবে, কেননা রান্নাটা তবেই আমার হইল। পান করিবার সময় বাবার পানে মসলা দিতে আমাকে না ডাকিলে আমি আর সেদিন রক্ষা রাখিতাম না। বাবা ত ভাত খাইয়া তাড়াতাড়ি আফিস চলিয়া যাইতেন, তাহার পর সেদিন আমাকে সাধিয়া ভাত-খাওয়ান অন্য কাহারো দুঃসাধ্য হইয়া উঠিত।—বাগানের ফুলে আর কাহারো অধিকার ছিল না—ভোর না হইতেই যত ভাল ভাল ফুল তুলিয়া অনিয়া বাবার কাছে হাজির করিতাম। জ্যেঠাইমার পূজার ফুল অল্পই অবশিষ্ট থাকিত, কোনদিন বা মোটেই থাকিত না; সে দিন তিনি বাবার কাছে নালিস করিতে আসিয়া তাঁহার ফুলগুলি সব লইয়া যাইতেন। আমার এমন রাগ ধরিত! এক বার আমার অসুখ করিয়াছিল দিদি তখন বাড়ী ছিলেন, তিনি আমার বদলে বাবাকে ফুল তুলিয়া দিতেন, অসুখের কষ্ট তেমন অনুভব করিতাম না—যেমন সেই কষ্ট! আমি দুঃষ্টামি করিলে আমাকে জব্দ করিবার জন্য তেমন কোন সহজ উপায় ছিল না; যেমন “আজ সন্ধ্যাবেলা তোকে চাবি দিয়ে রাখব বাবার কাছে শুতে দেব না” এই কথা। সহস্র দুষ্টামি এই শাসনে তখনকার মত তামার বন্ধ হইয়া যাইত। এক কথায় আমার সেই ক্ষুদ্র শৈশবজীবন কুলে কুলে তখন তাঁহাতেই পরিপূর্ণ ওতপ্রোত ছিল। তাই বলিয়াছি শৈশব ও যৌবনপ্রেমে তফাৎ