এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কাহাকে?

পূজায় জীবন সার্থক করিতে পারে; আর সেই পুরুষই ধন্য যে এই পূজারতা হৃদয়ের দেবতারূপে বরিত হইয় তাহার পূজায় জীবন উৎসর্গ করিয়া জীবনের উদ্দেশ্য সফল করিতে পারে, আর সেই প্রেমই প্রকৃত প্রেম যাহা এই উভয়ের আত্মহারা পূজায় অধিষ্ঠিত হইয়া প্রবলভাবে চিরবিরাজমান।

 আমি পিতাকে এখনও খুব ভালবাসি—তাঁহার সুখের জন্য আমি আত্মবিসর্জ্জনেও কুষ্ঠিত নহি–কিন্তু তিনি এখন আর আমার জীবনের একমাত্র সুখ দুঃখ আশ্রয় অবলম্বন, আকাঙ্ক্ষা কামনা পূজা আবাধনা, দেবতা সর্ব্বস্ব নহেন। অধিক দিন তাঁহাতে উক্ত সর্ব্বে-সর্ব্বা প্রেমভাব স্থায়ী হয় নাই। এই খানেই প্রণয়ের সহিত ইহার মূলগত পার্থক্য। যৌবনের বহুপূর্ব্বে শৈশবেই বাবার এ ভালবাসায় ভাগীদার জুটিয়াছিল।

 এতক্ষণ বলি নাই আমাদের বাড়ী কোথায়। কথাটা না পাড়িয়া চলিলে বলিবার ইচ্ছা ছিল না, কিন্তু এখন দেখিতেছি আবশ্যক হইয়া পড়িয়াছে। আমরা ঢাকা জেলার লোক, বাবার জমীদারী সম্পত্তিও কিছু আছে, কিন্তু প্রধান আয় চাকরীতে, তিনি একজন ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট। যতদিন বাড়ী বসিয়া কাজ পাইয়াছিলেন ততদিন সকল বিষয়ে আমাদের বেশ সুবিধা ছিল। কিন্তু আমার বয়স যখন আট নয় তখন এক সব ডিভিসনে তাঁহার বদলি হইল। পূর্ব্বেই বলিয়াছি বিদ্যাশিক্ষার জন্য দিদি পিসিমার কাছে কলিকাতায় থাকিতেন। আমি কিন্তু কখনও বাবাকে ছাড়িয়া থাকি নাই, এখনও থাকিতে পারিব না জানিয়া জ্যেঠাইমাকে ও আমাকে সঙ্গে লইয়া বাবা কর্ম্মস্থলে আসিলেন। এখানে সরকারী স্কুল বা বালিকা বিদ্যালয়