কিছুই ছিলনা, জমীদার কৃষ্ণমোহন বাবুর বাড়ীর তাঁহার বাড়ীর ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য একটা স্কুল বসিত, পাড়ার শিশুগণও অনেকেই এখানে পড়িতে আসিত, আমিও আসিতাম। কলিকাতায় এরূপ প্রথা আছে কি না জানি না; পাড়াগাঁয়ের অনেক স্থলেই এক পাঠশালায় শিশুবালকবালিকাগণ একত্রে পড়ে। সেখানে সকলেরই সঙ্গে আমার খুব ভাব হইল কিন্তু সকলের চেয়ে ছোটুর সহিত। ইহার আসল নাম কি জানি না বাড়ীর মধ্যে ছোট বলিয়াই বোধ হয় সকলে ইহাকে ছোটু ছোটু করিয়া ডাকিত। তখন ভাবিতাম ইহাই তাহার একমাত্র নাম। ছোটু কৃষ্ণমোহন বাবুর ভাগিনেয়; বাপ না থাকায় মামার বাড়ী প্রতিপালিত। ছোটুর সহিত বেশী ভাব হইবার প্রধান কারণ সে স্কুলে সর্ব্বাপেক্ষা বয়োজ্যেষ্ঠ, বোধ হয় বার তের হইবে। বাল্যকালে বরস্যবয়স্যাদিগের অপেক্ষা বয়োধিকদিগের সহিত মিশিবার কিরূপ আকর্ষণ তাহার অভিজ্ঞতা বোধ হয় অনেকেরই আছে; দ্বিতীয়তঃ ইনি পণ্ডিত মহাশয়ের প্রধান পড়ো, নিম্নক্লাশের ছাত্রছাত্রীগণের পড়া দেখিবার ভার ইহার উপর সমর্পণ করিয়া পণ্ডিত মহাশয় নিজের পরিশ্রম অনেকটা লাঘব করিতেন। স্কুল বসিত কৃষ্ণমোহন বাবুর বাহিরের একখানা আটচালাঘরে প্রাতঃকাল সাড়ে সাতটার সময়, আর ভাঙ্গিত সাড়ে ১০ টায়। কিন্তু আমরা সকলে সাড়ে ছয়টার মধ্যে স্কুলে গিয়া হাজির হইতাম আর এমন একদিনও যায় নাই যে আমরা গিয়া ছোটুকে বেঞ্চের উপর বসিয়া থাকিতে দেখি নাই। পণ্ডিত মহাশয় আসিতেন ৭॥ টায় কোনদিন বা আটটায়, ততক্ষণ ছোটু আমাদিগকে পড়া বলিয়া দিত, কপি বুকে অক্ষর লিখিয়া দিত,
পাতা:কাহাকে?.djvu/১৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম পরিচ্ছেদ।
৯