এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম পরিচ্ছেদ।
১৩

যাইতাম। সকালে যেমন ছোটুর কাছে যাইতে ব্যগ্র হইতাম সন্ধ্যাবেলা তেমনি আগ্রহে বাবার জন্য অপেক্ষা করিয়া থাকিতাম যাহার কাছে যখন থাকিতাম তাহাকেই তখন বেশী ভালবাসি বলিয়া মনে হইত। ছোটুর কাছ হইতে বাবার কাছে আসিয়া প্রায়ই তাঁহাকে বলিতাম—“বাবা তোমাকে খুব ভালবাসি"; বাবা যেন সন্দেহ করিয়াছেন!

 তিনি বলিতেন “সত্যি”?

 আমি বলিতাম—“হ্যাঁ সত্যি বলছি”।

 বাবা হাসিয়া চুম্বন করিতেন; আমিও করিতাম—ভাবিতাম ছোটু ত আমাকে চুম্বন করে না; তবে বাবার মত আমাকে ভালবাসে না, আমি কেন তবে ভালবাসিব? কে বলে ভালবাসা ভালবাসা প্রত্যাশা করে না? ছেলেবেলাও এই ভাব! ইহাত আমাকে কেহ শিখায় নাই!

 দুইবৎসর আমরা একত্র পড়িয়ছিলাম, তাহার পর অনেক চেষ্টা যত্ন করিয়া নিজ ঢাকাতেই বাবা বদলী হইলেন। এই সময় দিদির বিবাহ হইল। সেই দুইবৎসরের প্রতি প্রাতঃকাল কিরূপ আনন্দে কাটিয়াছিল মনে করিতে হৃদয় এখনো আনন্দপূর্ণ হইয়া উঠে। তাহার পর ৮|১০ বৎসর কাটিয়া গিয়াছে, তাহার পর আমি ভালও বাসিয়াছি—শৈশবের স্নিগ্ধ কোমল ভালবাসা নহে, যাহাকে লোকে বলে প্রেম—যৌবনের সেই জ্বলন্ত অনুরাগ—তাহারো অভিজ্ঞতা জন্মিয়াছে; জীবনে কত বড় বড় আশা ভাঙ্গিয়াছে গড়িয়াছে, কত প্রবল আনন্দ নিরানন্দ জীবনের গ্রন্থিগুলি যেন দলিয়া পিষিয়া চলিয়া গিয়াছে কিন্তু শৈশবের সেই অপরিণত ক্ষুদ্র প্রেমে কি ইহা