করে নাই আমার মাথায় সেই একই গান একই স্বরে কেবল ঘুরিতেছিল।
হায়! মিলন-হোলো! যখন নিভিল চাঁদ বসন্ত গেলো!
গান বাদ্য গল্পস্বল্পের পর নিয়মিত সময়ে নিমন্ত্রিতগণ যখন বাড়ী চলিয়া গেলেন, গৃহ নিস্তব্ধ নির্জন হইয়া পড়িল—তখনো আমার কাণে সেই গান বাজিতে লাগিল। রাতে ঘুমাইয়াও তাহা স্বপ্নে দেখিলাম। ছেলেবেলার সেই আটচালা ঘর, তাহাতে দিদির এই ড্রয়িংক্রম সমারোহ,—ছোটু গাহিতেছে— তাহার গুনগুনানি সুরে নহে-সুস্বরে সুতানে পূর্ণ কণ্ঠে গাছিতেছে—আমার দিকে প্রেমপূর্ণ দৃষ্টিতে চাহিয়া গাহিতেছে-
সেই মিলন হোলো—যখন নিভিল চাদ বসন্ত গেলে।
সেই মধুময় গীতধারায় সেই প্রেমময় দৃষ্টিপ্রবাহে আমার সর্ব্বাঙ্গ বিদ্যুৎ কম্পিত হইয়া উঠিল, আর ঘুম ভাঙ্গিয়া গেল দেখিলাম ভোর হইয়াছে।
বড় আশা ছিল, দ্বিতীয় হপ্তায় টেনিস পার্টির দিনে গানটি শুনিব কিন্তু তিনি আর সেদিন আসিলেন না। রাত্রিকালৈ ডিনার টেবিলে আমি বলিলাম—“মিষ্টার ঘোষ যে আজ এলেন না?”
“দিদি বলিলেন “হ্য আমিও ঐ ভাবছিলুম-তিনি যে আজ এলেন না?”
ভগিনীপতি ঠাট্টার স্বরে বলিলেন “তাইত রমানাথ কি জানে এদিকে এমন প্রলয় উপস্থিত, তাহলে অবশ্যই আসত—ত ডাকব নাকি?
ঠাট্টাটা আমাকে স্পর্শ করিল না, আমি সত্যই গায়কের প্রতি আকৃষ্ট হই নাই আমার অনুরাগ গানের প্রতি অতএব