এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
কাহাকে?

আমি তাঁহার ঠাট্টায় না দমিয়া বেশ সহজভাবেই বলিলাম ‘ডাক না,তিনি বেশ গাইতে পারেন—আরএকদিন শুনতে ইচ্ছা আছে।”

 আমার মনে কোন লুকান অভিপ্রায় ছিল না—কিন্তু তাহাদের মনে ছিল। তখন যদিও তাহ বুঝি নাই পরে বুঝিয়াছি।— সুতরাং আমার কথাটা তাঁহারা লুফিয়া লইলেন। দিদি বলিলেন “রমানাথ অনেকদিন ‘কল' করেছেন কিন্তু এখনো পর্য্যন্ত তাঁকে ডিনারে বলা হোল না একদিন খেতে নিমন্ত্রণ করা যাক।” ভগিনীপতি বহিলেন “তথাস্তু। তোমার ইচ্ছাতেই আমার ইচ্ছা। যেদিন ইচ্ছা বলিয়া পাঠাও।”

 ডিনারের দিন তাহাকে দেখিয়া প্রথমটা যেন একটু নিরাশ হইয়া পড়িলাম;—পূর্ব্বে একদিন মাত্র তাহাকে দেখিয়াছি— একদিনেই যে তাঁহার মূর্ত্তি মানসপটে অঙ্কিত হইয়া গিয়াছিল এমন নহে, বরঞ্চ ১০|১২ দিনে চেহারাটা এতদূর ভুলিয়া গিয়াছিলাম, যে তাঁহাকে মনে করিতে সেই স্বপ্নের চেহারাই মনে পড়িতেছিল—তাই চাক্ষুষ প্রভেদ প্রত্যক্ষ করিবামাত্র একটু ক্ষুণ্ণ হইলাম। আমার স্বপ্ন দৃষ্ট পুরুষ যে দেবতার ন্যায় সুপুরুষ এমন বলিতেছি না—সত্য কথা বলিতে, সে মুখও আমার তেমন সুস্পষ্ট মনে ছিল না, মনে ছিল কেবল স্বপ্নের সেই দৃষ্টি —আর এখন যাহাকে দেখিলাম তিনি কিছু মন্দ দেখিতে না, দিব্যি নাক মুখ, বেশ পরিপাটি করিয়া বড় কপালে চুল ফেরান, ঘন গোঁপের বেশ বঙ্কিম বাহার-সব শুদ্ধ বেশ ভালই দেখিতে। যদিও গোঁপের এ বাহার প্রথমে চোখে লাগে নাই—ক্রমশঃ হৃদয়ঙ্গম করিয়াছিলাম—প্রথমে বরঞ্চ একটু বেশী ঘন রলিয়াই মনে হইয়াছিল। কিন্তু আমার স্বপ্নদৃষ্টপুরুষের মত তাঁহার নয়নে