আমার সাড়ির প্রতি লক্ষ্য করিয়া এ কথাটা বলা হইল। ডিলার টেবিলে অবশ্য আমি তাঁঁহআর পাশে বসিয়াছিলাম কিন্তু মনে রাখিবার মত এমন কিছু বিশেষ কথা হয় নাই। ভগিনীপতিতে তাঁহাতে বেশী সময় পলিটিক্স্ লইয়াই তর্ক বিতর্ক চলিয়াছিল, মাঝে মাঝে আমার সহিত যা কথাবার্ত্তা, অধিকাংশই তাহা প্রশ্নোত্তর। আমি গাহিতে পারি কি না, কবিতা পড়ি কি না-কাহার কবিতা আমি বেশী ভালবাসি,—কত দিন এখানে থাকিব ইত্যাদি। আমি নিজে হইতে কথা কহিবার মধ্যে তাঁহার গানের প্রশংসা করিয়াছিলাম আন্তরিক প্রশংসা, ইংরাজি কমপ্লিমেণ্ট নহে। বোধ করি তাহাতে তিনি সন্তুষ্ট হইয়া থাকিবেন, প্রশংসা শুনিয়া বলিলেন “বাঙ্গলা গান আমি বেশী জানি না, এবার দেখছি শিখতে হবে।”
তাঁহার সমস্ত কথার মধ্যে এই কথাটি আমার ভাল লাগিয়াছিল; মনে হইল তিনি হৃদয়ের সহিত বলিতেছেন। খাবার পর আবার তিনি সেই গানটি গাহিলেন,—
হায়! মিলন হোলো!
যখন নিভিল চাঁদ বসন্ত গেলো!
হাতে করে মালাগাছি সারাবেলা বসে আছি
কখন ফুটিবে ফুল, আকাশে আলো,—
আসিবে সে বর বেশে মালা পরাইব হেসে
বাজিবে সাহানা তানে বাঁশি রসালে —
আসিল সাঁধের নিশা তবু পুরিল না তৃষা
কেমন কি ঘুমে আঁখি ভরিয়ে এল—
হায় মিলন হোলো!