উক্ত ভাবের উদয়াস্তে আমিও সেইরূপ দুই আমি হইয়া পড়িতাম।
ক্রমশঃ আমার এই মন্ত্রপূত ভাব স্থায়ী অবস্থা প্রাপ্ত হইতে লাগিল; অর্থাৎ সময়ে অসময়ে সকল সময়েই আমার তাঁহাকে আত্মীয় বলিয়া মনে হইতে লাগিল। এরূপ হইবার নূতন কারণ ঘটিল এই; চারিদিক হইতেই আমি শুনিতে লাগিলাম, বুঝিতে লাগিলাম তিনি আমার স্বামী হইবেন; কোন রঙ্গবালার মনে এই বিশ্বাসের কিরূপ প্রবল প্রভাব তাহা বিশেষ করিয়া বলিবার আবশ্যক আছে কি? স্বামী যেমনই হোন, তিনি রমণীর এক মাত্র পূজ্য আরাধা দেবতা, প্রাণের প্রিয়তম, জীবনের সর্ব্বস্ব-—এই বাক্য, এই ভাব, এই সংস্কার আজন্মকাল হইতে আমাদের মনে বদ্ধমূল হইয়া বধিতেছে, সুতরাং বিশেষ কারণে স্পষ্ট বীতরাগ না থাকিলে এই বিশ্বাসই প্রেমাঙ্কুরিত করিবার যথেষ্ট কারণ।
কিছুদিন হইতে আমরা যেখানে যাই কেবল ঐ কথা, যিনি আসেন কেবল ঐ কথা। . বয়স্যরা ঠাট্টাচ্ছলে আমার কাছে গোপনে ঐ প্রসঙ্গ তোলেন, বয়োজেষ্ঠারা গম্ভীরভাবে দিদির কাছে আমার সাক্ষাতেই প্রকাশ্যে ঐ আলোচনা করেন, আর দিদি ভগিনীপতি ত সুবিধা পাইলে যখন তখন ঐ কথা তুলিয়া কখনো ঠাট্টা করিয়া, কথনে গম্ভীরভাবে আমার ভবিষ্যৎ, সৌভাগা-কল্পনায় আনন্দ প্রকাশ করেন। এ কল্পনা যে কখনো সত্যে পরিণত না হইয়া কল্পনাতেই অবলিত হইতে পারে, এ কথা কিন্তু কখনো তাঁহাদের মনে উদয় হয় না। কেনই বা হইবে? যাঁহাকে লইয়া এত কথা, এত আলোচনা, তিনি দিন