এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ।
২৩

উক্ত ভাবের উদয়াস্তে আমিও সেইরূপ দুই আমি হইয়া পড়িতাম।

 ক্রমশঃ আমার এই মন্ত্রপূত ভাব স্থায়ী অবস্থা প্রাপ্ত হইতে লাগিল; অর্থাৎ সময়ে অসময়ে সকল সময়েই আমার তাঁহাকে আত্মীয় বলিয়া মনে হইতে লাগিল। এরূপ হইবার নূতন কারণ ঘটিল এই; চারিদিক হইতেই আমি শুনিতে লাগিলাম, বুঝিতে লাগিলাম তিনি আমার স্বামী হইবেন; কোন রঙ্গবালার মনে এই বিশ্বাসের কিরূপ প্রবল প্রভাব তাহা বিশেষ করিয়া বলিবার আবশ্যক আছে কি? স্বামী যেমনই হোন, তিনি রমণীর এক মাত্র পূজ্য আরাধা দেবতা, প্রাণের প্রিয়তম, জীবনের সর্ব্বস্ব-—এই বাক্য, এই ভাব, এই সংস্কার আজন্মকাল হইতে আমাদের মনে বদ্ধমূল হইয়া বধিতেছে, সুতরাং বিশেষ কারণে স্পষ্ট বীতরাগ না থাকিলে এই বিশ্বাসই প্রেমাঙ্কুরিত করিবার যথেষ্ট কারণ।

 কিছুদিন হইতে আমরা যেখানে যাই কেবল ঐ কথা, যিনি আসেন কেবল ঐ কথা। . বয়স্যরা ঠাট্টাচ্ছলে আমার কাছে গোপনে ঐ প্রসঙ্গ তোলেন, বয়োজেষ্ঠারা গম্ভীরভাবে দিদির কাছে আমার সাক্ষাতেই প্রকাশ্যে ঐ আলোচনা করেন, আর দিদি ভগিনীপতি ত সুবিধা পাইলে যখন তখন ঐ কথা তুলিয়া কখনো ঠাট্টা করিয়া, কথনে গম্ভীরভাবে আমার ভবিষ্যৎ, সৌভাগা-কল্পনায় আনন্দ প্রকাশ করেন। এ কল্পনা যে কখনো সত্যে পরিণত না হইয়া কল্পনাতেই অবলিত হইতে পারে, এ কথা কিন্তু কখনো তাঁহাদের মনে উদয় হয় না। কেনই বা হইবে? যাঁহাকে লইয়া এত কথা, এত আলোচনা, তিনি দিন