হৃদয় আনন্দে মগ্ন হইয়া উঠিল—আমি আহ্লাদের আবেগে বলিয়া উঠিলাম—“এ সেই সেই!” ঘুম ভাঙ্গিয়া দেখিলাম বেশ আলো হইয়াছে। এইরূপ স্বপ্নময় ঘুম সত্ত্বেও জাগিয়া অনেকটা সুস্থ বোধ করিলাম।
মনে পড়িল,—দুজনের এক একটি কথা আবার যেন নূতন করিয়া আদ্যোপান্ত শুনিতে লাগিলাম। চারিদিকের বায়ুমণ্ডলে পরিবর্ত্তন অনুভব করিলাম-আপনাকে আপনি ভিন্ন বলিয়া অনুভব করিলাম;—বুঝিলাম কাল যাহা ছিল—আজ আর তাহা নাই-কাল যে আমি ছিলাম-আজ আর সে আমি নহি! হৃদয়ে নৈরাশ্য বেদনা জাগিল; কিন্তু এ নৈরাশ্যে ঔপন্যাসিক করুণ কষ্টের দারুণতা, অসহনীয়তা উপলব্ধি করিলাম না; কিম্বা সে যেমনই হৌক তবু আমার দেবতা—তবু তাহার চরণে হৃদয় বিকাইব, মনে এমনতর ভাবেরও উদয় হইল না। পরিপূর্ণ বিশ্বাসে প্রতারিত বোধ করিয়া এ যেন প্রত্যাখ্যাত ভিক্ষুক দুর্ব্বাসা মুনির ন্যায় গর্ব্বাহত নিরাশক্ষুব্ধ হইলাম, প্রতারকের উপর ভীষণ ক্রোধের উদয় হইল। কেবল তাহার উপর নহে; নিজের উপরেও ক্রুদ্ধ হইলাম—কি করিয়া আমি এমন লোককে দেবতা মনে করিয়াছিলাম! সঙ্গে সঙ্গে বিকটতর একটা আনন্দ জন্মিল এই যে, সে ভ্রান্তি হইতে নিস্কৃতি লাভ করিয়াছি। তুলনায় ডাক্তারের প্রতি খুব শ্রদ্ধা জন্মিল—তাঁহার করুণ সহৃদয় ভাবে পুরুষোচিত মহত্ব দেখিতে লাগিলাম।
আমাকে সুস্থ দেখিয়া দুপুরের পর দিদি অসুখের কথা পাড়িলেন—“অনেক দিন তোর হিষ্টিরিয়া হয়নি,—ভেবেছিলুম একেবারে সেরে গেছে, আবার রাত জেগে নভেল পড়েছিলি