এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ।
৩৫

বিবাহে প্রতিশ্রত হয়ে অন্য জনের সঙ্গে প্রেমের ভাণ-একি সামান্য ব্যাপার হোল?”

 দিদি। না ভান হতেই পারে না; তোকে যে সে ভালবাসে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। ও বিলাতের কথা ছেড়ে দে। প্রথমতঃ কথাটা কতদূর সত্যি মিথ্যে তার ঠিক নেই। তারপর ধর যদি কারো সঙ্গে তার বিয়ের কথা হয়েই থাকে, কিন্তু বিয়ে ত আর হয় নি—তা হলে আর এতই রাগের কারণ কি? সব দেশেইত এমন কত শত engagement গড়ছে আবার ভাঙ্গছে—এই সেদিন যে আমার মামাত দেওরের গায়ে হলুদ হয়েও বিয়ে ফিরলে—আর এ তো বাঙ্গালী ইংরাজের engagement, দুজনের স্বভাব, দুজনের অবস্থার পার্থক্য একবার ভেবে দেখ দেখি। কোন একটা মোহের মুহূর্ত্তে দুজনে আজন্ম একত্ব শপথ করতে পারে,—কিস্তু তার পরমুহূর্ত্ত থেকেই অনুতাপ করার কথা—বিয়ে করার যথার্থ উদ্দেশ্য যা পরস্পরের সুখ,এ বিয়েতে আমার ত মনে হয় তার সম্ভাবনা একেবারে শূন্য। এ অবস্থায় আমিত বলি, কথা রাখার চেয়ে ভাঙ্গাই ভাল। নিজের আহাম্মকীতে যেন নিজেকেই সে অসুখী করলে কিন্তু আর একজনের চিরজীবনের সুখাসুখও যখন—”

 আমি শেষ পর্যন্ত স্থিরভাবে শুনিতে পারিলাম না, বলিয়। উঠিলাম–"কিন্তু তার সুখদুঃখ ভেবেই কি এ বিয়ে ভাঙ্গা হয়েছে? যে ভ্রান্তনারী সর্ব্বত্যাগী হয়ে এখনো পূর্ণ বিশ্বাসভরে তার পথ চেয়ে আছে, সেই বিশ্বাস ভঙ্গ করে গোপনে গোপনে যে পুরুষ আর একজনকে ভালবাসা জানায় বিবাহ-প্রস্তাব করে—সে খুব সাধু পুরুষই বটে। দিদি তুমি এমন প্রশান্তভাবে এ ঘটনা কি করে যে দেখছ আমি ত ভেবেই পাইনে।”