এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ
৩৭

ন্যায়ের অনুরোধে? তুই যে জন্য তাকে দোষী করছিস—এতে তোরও কি ঠিক সেই একই রকম অন্যায় করা হচ্ছে না? যে তোকে প্রাণপণে ভালবাসছে, মিথ্যা কারণে তাকে কি তুই চিরঅসুখী করতে যাচ্ছিস নে?

 আমি। মিথ্যা কারণ!

 দিদি। নিশ্চয়ই। আমি বেশ জানি তার কাছে আসল ঘটনা শুনলে বুঝতে পারবি—তার তেমন দোষ নেই। অস্তুতঃ তার এতে কি বলার আছে সেটা শোন—শুনে ভারপর যা হয় স্থির করিস। খুনী যে তারও বক্তব্য না শুনে বিচার হয় না; আর যে তোকে এত ভালবাসে তার পক্ষে তুই একটা কথা না শুনে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিতে যাচ্ছিস? তোর দেখছি নিতান্তই কঠিন প্রাণ!

 আমি নিরুত্তর হইয় গেলাম।—কি করিয়া আমার মনের ভাব তাঁহাকে বুঝাইব; তিনি সাংসারিক চক্ষে এ ঘটনা দেখিতেছেন, তাঁহার অভিজ্ঞ হৃদয় বলিতেছে “সংসারে এরূপ ঘটিয়াই থাকে। দোষে গুণে মানুষ অতএব মানুষ দেবতা চাহিলে তোমাকে নিরাশা সার করিতে হইবে। তুমি শুধু দেখ সে নিতান্ত ঘৃণ্য দোষ করিয়াছে কি না? যদি না করিয়া থাকে তবেই সে ক্ষমা পাইবার পাত্র।” আমার কিন্তু নিদাঘ নিশীথের স্বপ্ন ভাঙ্গিয়াছে, নয়নে আর টিটানিয়ার প্রেম দৃষ্টি নাই, যাহার বলে কুরূপ সুরূপ হইবে, পাপে তাপে দোষে মলিনতায়, কাঁদিয়া তবু তাহাকে আমারি ভাবিতে পারিব। এখন আমার নিরপেক্ষ বিচারসক্ষম নবীন হৃদয় উচ্চতর কল্পনাপূর্ণ উচ্চতর আকাঙ্ক্ষা আদর্শে মাত্র জাগ্রত। আমার মনে এখন—যে আমার ক্ষমার পাত্র সে আমার প্রণয়ী, আমার স্বামী হইবার যোগ্য নহে; আমার স্বামীতে আমি