এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ।
৪৩

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ।

 দিদি বলিয়াছিলেন, তাহার সাপক্ষের বক্তব্য শুনিলে আমার আর রাগ থাকিবে না; ফলে বিপরীত ঘটিল। নিজের দোষক্ষালন অভিপ্রায়ে তিনি যাহা কিছু বলিতে লাগিলেন তাহাতেই উত্তরোত্তর ধাপে ধাপে আমার রাগটা ক্রমিকই বাড়িয়া উঠিতে লাগিল। প্রথমেই রাগ ধরিল, বিলাতের ঘটনাকে নিতান্ত তুচ্ছ তাচ্ছিল্য ভাবে সামান্য flirtation মাত্র বলিয়া উড়াইয়া দিবার চেষ্টা করায়; রাগটা আরো জ্বলিল ডাক্তারকে গালি দিতে শুনিয়া; অবশেষে ক্রোধের যেখানে যতটুকু বাকি ছিল সর্ব্বাংশে বেশ হুহু করিয়া ধরিয়া উঠিল, যখন বলিলেন তিনি আমাকে ছলনা করেন নাই, আমি তাঁহাকে ছলনা করিয়াছি, না ভাল বাসিয়া ও ভালবাসা জানাইয়াছি, নহিলে এত সামান্য কথায় তাঁহাকে এতদূর অপরাধী করিতাম না। যেন ভাল বালিলে লোকে ন্যায়ান্যায় জ্ঞান পর্য্যন্ত হারাইয়া ফেলে, অন্যায়কে দোষকে পূজা করাই যেন ভালবাসা! আমি তাঁহাকে যেরূপ ভাল লোক মনে করিয়া ভাল বাসিয়াছিলাম—তিনি যে তাহ নহেন সে যেন আমারি দোষ। তিনি যে আপনাকে আমার আদর্শরূপে প্রকাশ করিয়াছিলেন সে আমারি ছলনা বটে! কি চমৎকার যুক্তিচাতুরী! আমার এতদূর ক্রোধ হইল যে, তাহার একটা স্ফুলিঙ্গকণাও বাহিরে আসিয়া পড়িলে যেন সমস্ত বিশ্বকে ভষ্মীভূত করিয়া ফেলতে পারিত। অথচ এই প্রজ্বলন্ত মহাক্রোধও তাঁহার বিদায় কালের সেই কাতর করুণ উক্তিতে মুহূর্ত্তে