এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪
কাহাকে?

অতি সহজে ভষ্মাকারে নির্ব্বাপিত নিষ্ফল হইয় পড়িল! রমণী সব পারে—যথার্থ প্রেম উপেক্ষা করিতে পারে না, বিধাতা বুঝি এই খানেই স্ত্রীপুরুষের স্বভাবগত বিশেষ পার্থক্য নির্দ্দেশ করিয়াছেন। তাঁহার ব্যথিত স্বরে, তাঁহার মর্ম্মোত্থিত বাক্যে তাঁহার গভীর প্রেম অন্তরে উপলব্ধি করিলাম, হৃদয়ের স্তরে স্তরে তাহাতে করুণ তান বিকম্পিত হইয়া উঠিল; তিনি চলিয়া গেলেন; কিন্তু তাঁহার নৈরাশ্য-ব্যথা আমি নিজের মত করিয়াই অনুভব করিতে লাগিলাম। তাঁহার যে কথায় পূর্ব্বে ক্রোধাভিভূত হইয়াছিলাম, সেই কথা মনে উদয় হইয়া নিজের প্রতি সন্দেহ আনয়ন করিল,—সত্যই কি তবে আমিই ইঁহাকে ছলনা করিয়াছি, না ভালবাসিয়াও ভালবাসা জানাইয়। ইঁহার চিরজীবনের সুখদুঃখ আপনাতে ন্যস্ত করিয়াছি?

 প্রাণভর করুণাপূর্ণ অনুতাপ বেদন লইয়া আমি নীরবে বসিয়া, দিদি আমার দিকে সোৎসুক দৃষ্টিতে চাহিয়া কি যেন জিজ্ঞাসা করিবেন ভাবিতেছেন, এই সময় ভৃত্য আসিয়া খবর দিল “ডাক্তার আসিয়াছেন।” এই সংবাদে সহজেই ভিন্নমনা হইয়া পড়িলাম-চিন্তাবেগ শমিত হইল, ডাক্তার যখন গৃহে প্রবেশ করিলেন স্পষ্ট আনন্দ অনুভব করিলাম।

 ডাক্তার আসিয়া প্রথমে আমাদিগকে অভিবাদন করিয়া, পরে সকালে আসিতে না পারার কারণ জানাইয়া তজ্জন্য ক্ষোভ প্রকাশ পূর্ব্বক আমার কুশল জিজ্ঞাসা করিলেন। দিদি বলিলেন “ভালই আছে, রাতে ঘুমও বেশ হয়েছে—আর বোধহয় ওষুধের আবশ্যক নেই?”

 পশ্চিমের জানালা দিয়া আমার কৌচের উপর রৌদ্র